Recent Tube

ইমরান খান ও কাদিয়ানী সমাচার! তাজুল ইসলাম



 ইমরান খান ও কাদিয়ানী সমাচার!

পাকিস্তানে কাদিয়ানীরা আইনত সংখ্যালঘু সম্প্রদায়। ১৯৭৪ এর আগে তাদের ও মুসলিমদের মাঝে কোন ফারাক ছিলনা আইনত। পাকিস্তানের প্রথম পররাষ্ট্রমন্ত্রী স্যার জাফরুল্লাহ খান কাদিয়ানী। সে এই বলে কায়েদে আজমের জানাযায় শরিক হয়নি যে একজন কাফিরের জানাযায় সে কিভাবে শরিক হবে!

পাকিস্তান পিপলস পার্টি যখন ক্ষমতায় ছিল তখন তাদের পান্জাব গভর্ণর সালমান তাইসির ছিল কাদিয়ানী। তাকে নিরাপত্তা গার্ড গুলিকরে হত্যা করে। তখন কিন্তু এই সরকারের বিদেশ বিষয়ক মন্ত্রী ছিলেন মাওলানা ফজলুর রাহমান। এতে মাওলার কোন সমস্যা হয়নি।

নওয়াজ শরিফ ক্ষমতায় থাকাকালীন সময়ে আমেরিকা থেকে তারকাছে প্রস্তাব আসে যে পাকিস্তানের সকল বৈদেশিক কর্জ মাপ করে দেয়া হবে যদি খতমে নবুওত আইন বাতিল করা হয়। তিনি প্রধানমন্ত্রী জামালিকে অনুরোধ করেন বিষয়টি নিয়ে সামনে আগাতে। কিন্তু জামালি পদত্যাগ করে বলেন এমন গর্হিত কাজ তারপক্ষে সম্ভব না। এখানেও মাওলানা ফজলুর রাহমানের তেমন সমস্যা নেই।

জিয়াউল হক নোবেল বিজ্ঞানী ডক্টর আব্দুস সালামকে সংবর্ধনা দিতে পাকিস্তান ডেকে আনেন। কারণ তিনি খতমে নবুওত আইন বিল পাশ হওয়ার পর আমেরিকা চলে যান। প্রেসিডেন্ট জিয়া নামাজের সময় হলেপর আব্দুস সালামকে জিজ্ঞেস করলেন যে আপনি আমাদের সাথে নামাজ আদায় করবেন নাকি আলাদা? ডক্টর আব্দুস সালাম বললো - আলাদা ভাবে আদায় করবো। তখন জিয়া তাকে বললেন- তুমি তো আমার চাইতে সাচ্ছা ও খাঁটি মুসলিম বলে আমি মনেকরি।

ইমরান খান যখন ক্ষমতায় আসেন তখন ফাইনেন্স মিনিস্ট্রিতে একজন কাদিয়ানী স্থান পায়। চতুর্দিকে প্রতিবাদের তুফান উঠলে তাকে বাদ দেয়া হয়।
অনেকের মতে সাবেক সেনা প্রধান মেজর জেনারেল কামার জাবেদ বাজওয়ার শ্বশুর একজন কাদিয়ানী। এই কথা বলার কারণে তাহরিকে লাব্বাইকের সভাপতি সাদ রেজভী কয়েকমাস জেল কাটেন।

ইমরান খান যখন শুরুতে রাজনীতিতে নামেন তখন কাদিয়ানী কমিউনিটির সাথে এক বৈঠক হয়। বৈঠকে তারা অভিযোগ করে যে তাদের উপর জুলুম অত্যাচার হচ্ছে। ইমরান খান তাদের বলেন- তাহরিকে ইনসাফ ক্ষমতায় গেলে বিষয়টি খতিয়ে দেখবে। ইমরান খান তখনো ইসলামের ব্যাপারে ততটা অভিজ্ঞ না। দীনী জ্ঞান এবং এসব পারিপারশিক বিষয় বোঝার মত তেমন চৌকস জ্ঞান না থাকায় এরূপ পরিস্থিতির সম্মুখীন হয়েছেন। পরে তো আমরা দেখলাম আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলে খতমে নবুওতকে ইমরান খান স্পষ্ট ভাবে তুলে ধরেন। 

কাদিয়ানী পাকিস্তান সমাজে একটি বাস্তবতা। তারা আইনত সংখ্যালঘু হিসাবে সকল নাগরিক সুবিধা ভোগের অধিকার রাখে। শিক্ষা মেডিকেল অফিস আদালত মেলেটারি সকল জাগায় তাদের পদচারনা। কত পুলিশ কত ব্যাংকার কত মেজর কত অফিসার সচিব আছে কেউ জানেনা। কারণ পাকিস্তান ইসলামিক রিপাবলিক হলেও শাসন চলে স্যাকুলারদের দ্বারা স্যাকুলার আইনে। 
সেখানে উপরের লেভেলে কে কোন ধর্মের কোন মসলকের সেটা তাদের কাছে গৌন। শিয়া মেজর কোর-কামান্ডার তো শয়ে শয়ে। ডজনে ডজন কাদিয়ানী। 

আমাদের বাংলাদেশে যেভাবে শাইখুল হাদিসকে শিয়া বানানো হয়েছিল ঠিক তদ্রুপ পাকিস্তানে কাউকে বদনাম করার জন্য কাদিয়ানীর দোসর বলে গালি চলে অহরহ। 
তো ইমরান খান কাদিয়ানীর দোসর মানে বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলন একদিন যেমন শিয়ার দোসর ছিল বলে যারা চাউর করেছিল তাদের কিছু মনন সেরকম প্রচারনায় লিপ্ত।
এটাই আমাদের সমাজের বাস্তবতা ও নিষ্ঠুরাতা।
তবে কাদিয়ানী ফিতনা আরো কত ভয়ংকর রূপ ধারন করছে সময় সুযোগে লিখবো ইনশাআল্লাহ
------------------------- 
লেখক ঃ প্রবন্ধ লেখক, গবেষক, সিইও আন-নূর ওয়েলফেয়ার ট্রাস্ট প্রেজেন্টার ও লেকচারার এটি এন বাংলা ইউকে।

Post a Comment

0 Comments