Recent Tube

ইসলাম ও গণতন্ত্র :আফগানিস্তান বনাম বাংলাদেশ। লেখক ও সম্পাদনাঃ আবু জাফর চৌধুরী।



ইসলাম ও গণতন্ত্র :
আফগানিস্তান বনাম বাংলাদেশ।


যে সকল দ্বীনি ভাইয়েরা বাংলাদেশে ইসলামী খেলাফত তথা ইসলামী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠায়, আফগানিস্তানের জে*হা*দ পদ্ধতির ধারনা পোষন করেন, তাদের অনুভুতির প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা পূর্বক বিনয়ের সাথে দৃষ্টি আকর্ষন করছি যে, আফগানিস্তান আর বাংলাদেশের প্রেক্ষাপট এক নয়। আপনাকে বাস্তবতা বুজতে হবে এবং বুজতে হবে ইসলামের হিকমাহ।

 প্রশ্ন:
 আফগান মুজাহিদরা কার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছে? দেশের জনগনের বিরুদ্ধে? মুসলমানের বিরুদ্ধে?

অনুরুপ রাসূলের নেতৃত্বে সাহাবীরা ওহুদ, বদর, খন্দক........ সহ যত যুদ্ধ করেছেন, তা কি মুসলমানদের সাথে করেছিলেন?

 উত্তর: না।
 রাসূল সা: ও সাহাবীদের যুদ্ধ কোন মুসলমানের বিরুদ্ধে ছিল না, সকল যুদ্ধ ও জে-হা-দ ছিল কাফের ও মুর্শিকদের বিরুদ্ধে। তদ্রুপ-
 আফগান মুজাহিদরা যুদ্ধ করেছে প্রথমে রাশিয়া, পরে আমেরিকার দখলদার বাহিনীর বিরুদ্ধে।

 বাংলাদেশে দখলদার কে? আপনি কার বিরুদ্ধে জে*হা*দ করবেন? কার বিরুদ্ধে অস্ত্র ধারন করবেন? এখানে (৯২%)  মুসলমান। প্রায় সবাই আপনার আমার মুসলিম ভাই, পিতা-পুত্র, স্বজন, আত্বীয় ও প্রতিবেশী।

 তাছারা, আফগান মুজাহিদদের আন্দোলন, সংগ্রাম, যুদ্ধ ও জি*হা*দে ভৌগলিক অবস্হান তাদের অনুকুলে ছিল। তিন দিকেই ছিল মুসলিম রাষ্ট্র, বন্ধু রাষ্ট্র। আশ পাশ থেকে তারা সহযোগীতা পেতেন, রসদ পেতেন, খাদ্য পেতেন, আশ্রয় পেতেন। লা*দে*ন সহ হাজার হাজার মুজাহিদ দীর্ঘদিন পাকিস্তানে নিরাপদে ছিলেন।

 পক্ষান্তরে বাংলাদেশের তিন দিকে ভারত ও এক দিকে সাগর পরিবেষ্টিত,, ভৌগলিক ভাবে আমাদের পাশে কোন মুসলিম রাষ্ট বা সহযোগী রাষ্ট্র বা বন্ধু রাষ্ট নেই। বরং আছে পারমানবিক শক্তিধর এক ইসলাম বিদ্ধেষী অমুসলিম রাষ্ট। আর আছে অথৈ সাগরের বিশাল জলরাশি।

  গণতন্ত্রের অন্যতম মৌলিক ২ টি দিক 
  ----------------------------------------
 ১.  সার্বভৌমত্বের ধারনা: জনগণ সর্বময় ক্ষমতার মালিক ও আইন প্রনেতা। এটা নি:সন্দেহে কুফুরী তথা ইসলামী আক্বিদার পরিপন্হী।

 ২. জনমতের ভিত্তিতে নেতা (আমির) নির্বাচনে ভোট ব্যাবস্হা। যা ইসলামের শুরা বা পরামর্শ গ্রহন পদ্বতির সাদৃশ্য।

 ৩. গণতন্ত্রের বিবিধ বৈশিষ্ট্য:
নিজ নিজ মত ও আদর্শ প্রচারের স্বাধীনতা, নেতা নির্বাচনের স্বাধীনতা, জনমত গঠন করা, সভা সমাবেশ, মিছিল মিটিং-র স্বাধীনতা, দূর্নীতির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করা ও সরকারের সমালোচনা করার স্বাধীনতা। এসব স্বাধীনতাতো ইসলাম স্বীকৃত। এগুলি হারাম বা নাজায়েজ হওয়ার আধৌও কোন কারন আছে কি?

 মূলত: ইসলামের পক্ষে এই মত গ্রহন বা ভোট গ্রহন বা সমর্থন গ্রহনের চেষ্টা, আন্দোলন, সংগ্রাম, হারাম বা কুফুরি হওয়ার কোন কারন নাই, সূযোগ নাই, যৌক্তিকতা নাই।
বরং এই ভোট ব্যাবস্হা আজানের জন্য মাইক ব্যাবহার করার অনুরূপ। 

 উপসংহার:
 বর্তমান বিশ্ব পরিস্হিতি ও বাংলাদেশের ভৌগোলিক বাস্তবতায়, গনতন্ত্রের দ্বিতীয় ও তৃতীয় বৈশিষ্টের আলোকে: ধীরে ধীরে জনমত গঠন করে ইসলামী নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠা করত: ইসলামী রাষ্ট্র গঠন করাই ইসলামের হিকমাহ (বিজ্ঞান)। এর কোন বিকল্প নাই।

 মনে রাখতে হবে-
 স্হান কাল পাত্রভেদে মাসয়ালার পরিবর্তন হয়। প্রযোজ্য ক্ষেত্রে ফরজ হয় কসর, হারাম হয় হালাল এবং এই পরিবর্তন বৈধ গ্রহনযোগ্য তথা জায়েজ। তাছাড়া ইজমা এবং কেয়াছের দরজা কিয়ামত পর্যন্ত খোলা থাকবে। কারন: সময় পরিবেশ ও বিষয়বস্তুর চাহিদা, স্হান কাল পাত্রবেধে  যুগ জিজ্ঞাসার সমাধান দেওয়ার জন্যই কোরআন সুন্নাহর সাথে ইজমা ও কিয়াস সন্নিবেশিত হয়েছে।

 স্মৃতব্য:
 আবেগের নাম ইসলাম নয়, বিবেকের নাম ইসলাম। চরম পন্হা নয় মধ্যম পন্হা।

 মনে রাখতে হবে:
প্রতিপক্ষের মানবাধিকার, নারী ও শিশুর শান্তি এবং নিরাপত্তা বিধানও ইসলামী যুদ্ধনীতির অবিচ্ছেদ্য অংশ।

 রাব্বি জিদনী ইলমা।।
------------------------- 

Post a Comment

0 Comments