৫০বা ৬০% মুসলমানের ঐক্য হয়ে গেলেই কী ইসলামী রাষ্ট্র কায়েম হয়ে যাবে?
ইসলামী হুকুমাত কায়েমের আগে জানা দরকার আসলে রাষ্ট্রটা কী?
--------------------------
এরপর আমরা আলোচনা করব গণতন্ত্র না সশ্রস্ত্র জিহাদ কোনটির মাধ্যমে বিপ্লব ঘটানো সম্ভব এবং দুই পদ্ধতি লাভ ক্ষতির দিকগুলো নিয়ে বিস্তর আলোচনার দাবি রাখে।
প্রথমেই জানব রাষ্ট্র ব্যাবস্হা কাকে বলে?
১. রাষ্ট্র ব্যবস্থার স্বাভাবিক বিবর্তন:
★ রাষ্ট্র ব্যবস্থা তো কোন একটি সমাজের মধ্যকার নৈতিক চরিত্র, চিন্তাচেতনা, মন মানসিকতা, সভ্যতা সংস্কৃতি এবং ইতিহাস এতিহ্যগত কার্যকারণের সমন্বিত কর্ম প্রক্রিয়ার ফলশ্রুতিতে সম্পূর্ণ স্বাভাবিক নিয়মে জন্ম লাভ করে।
★ আর রাষ্ট্রের প্রকৃতি কি হবে ? তাও নির্ভর করে সমাজের সেই পরিবেশ ও দৃষ্টিভংগির উপর , যার চাপের ফলশ্রুতিতে রাষ্ট্র জন্ম লাভ করে ।
★ আমরা যে বিশেষ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করতে চাই, সে প্রকৃতির রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার জন্য সে রকম আন্দোলন সৃষ্টি করতে হবে । সে রকম ব্যক্তিগত, দলীয় ও সামাজিক চরিত্র , প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত নেতৃত্ব এবং সামাজিক কার্যক্রম ও পরিবেশ সৃষ্টি করতে হবে ।
২. আদর্শিক রাষ্ট্র:
ইসলামী রাষ্ট্রের সর্বপ্রথম বৈশিষ্ট্য হল-
ক. এখানে জাতীয়তাবাদের নাম গন্ধও অনুপস্থিত। এটা হলো IDEOLOGICAL STATE’ যার আদর্শ গ্রহন করে নিলে বংশ , গোত্র ও বর্ণ নির্বিশেষে সকলেই সে রাষ্ট্র পরিচালনায় অংশীদার হয়ে যাবে । খৃষ্টবাদ, ফরাসী বিপ্লব, কমিউনিজম ইত্যাদি এ আশা ক্ষীণ ভাবে জাগ্রত করলে ও জাতীয়তাবাদের তীর্যক ভাবধারায় সমুদ্রের অতল তলদেশে ডুবিয়ে দিয়েছে।
খ. এ রাষ্ট্রব্যবস্থা গোটা মানবজাতিকে তার আদর্শ গ্রহন করে অজাতীয়তাবাদী বিশ্বজনীন রাষ্ট্র গঠনের আহ্বান জানায়।
গ. বর্তমান বিশ্বে এমন একটি রাষ্ট্রের ধারণা অপরিচিত। তা কেবল অমুসলিমদের কাছেই নয় বরং মুসলমানরা পর্যন্ত এর অনর্তনিহিত ভাবধারা অনুধাবন করতে অক্ষম।
১. ইসলামী রাষ্ট্রই আদর্শভিত্তিক রাষ্ট্র।
২. সংকীর্ন জাতীয়তাবাদ হতে সম্পূর্ন মুক্ত।
৩. অন্যান্য রাষ্ট্রনীতি হতে সম্পূর্ণ পৃথক।
৪. জনগনের অধিকার সুদৃঢ়ভাবে প্রতিষ্ঠিত করা।
৫. যোগ্যতার বলে যে কেউ শাসক হতে পারে।
৬. আদর্শ হবে ইসলাম।
৭. উন্নয়নের প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে।
৮. সার্বভৌমত্ব হবে আল্লাহর, প্রতিনিধিত্ব হবে জনগনের।
৩.আল্লাহর সার্বভৌমত্ব এবং মানুষের প্রতিনিধিত্ব ভিত্তিক রাষ্ট্র:
★ ইসলামী রাষ্ট্রের দ্বিতীয় বৈশিষ্ট হল, তার গোটা অট্টালিকা আল্লাহর সার্বভৌমত্বের উপর প্রতিষ্ঠিত ।
★ এই রাষ্ট্রের প্রকৃত স্বরূপ হচ্ছে, এখানে মানুষ আল্লাহর প্রতিনিধি হিসাবে কাজ করে।
★ এই খিলাফাত প্রতিষ্ঠার কাজে এমন সব লোকই অংশীদার হবে, যারা এই আইন ও বিধানের প্রতি ঈমান আনবে এবং তা অনুসরণ ও কার্যকর করার জন্য প্রস্তুত থাকবে।
★ সামষ্টিক ভাবে আমাদের সকলকে এবং ব্যক্তিগতভাবে আমাদের প্রত্যেককে এর জন্য মহান আল্লাহর কাছে জবাবদিহি করতে হবে।
★ ইসলামী রাষ্ট্রের নাগরিক, ভোটার , সেনা প্রধান , রাষ্ট্রদূত, মন্ত্রীবর্গ, মোটকথা নিজেদের সমাজ জীবনের প্রতিটি বিভাগ, পরিচালিকা যন্ত্রের প্রতিটি অংশ সম্পূর্ণ নতুনভাবে নিজস্ব ভিত্তিতে ঢেলে সাজাতে হবে।
★ এ রাষ্ট্রের পরিচালকদের অন্তরে আল্লাহর ভয় থাকবে।
★ পৃথিবীর ধনভান্ডার হস্তগত হলেও নিখাদ আমানতদার প্রমানিত হবে।
★ ক্ষমতা হস্তগত হলে জনগনের কল্যান চিন্তায় যারা বিনিদ্র রজনী কাটাবে।
★ জনগণ ও তাদের সুতীব্র দায়িত্বানুভূতিপূর্ণ রক্ষণাবেক্ষণাধীনে নিজেদের জানমাল, ইজ্জত আবরুসহ যাবতীয় ব্যাপারে সম্পুর্ণ নিরাপদ ও নিশ্চিন্ত …………..

0 Comments