শত্রুকে ভয় পেলে অথবা মানুষের জুলুম-নির্যাতন এ একজন ব্যক্তির জন্য করণীয় প্রসঙ্গে:
প্রশ্ন :
শাইখ আমার হাজব্যান্ড এর ছোট একটা ব্যবসা আছে। কিন্তু তাদের আর কোনো জমি জমা এমন কি বাড়ির সামান্য জমি ছাড়া আর কিছু নেই।।আমার শ্বশুর একজন দিন মজুর। তারা বাবা ছেলে কখনোই মানুষের সাথে ঝগড়া ফ্যাসাদ এগুলো করেন না। তারা নিজেরা যা পারে তা দিয়েই সুন্দর মতো সংসার চালায়।। এখন আমার হাজব্যান্ড এর একটা ছোট বাইক আছে যেটা ব্যবসার লাভকৃত টাকা দ্বারা কিনেছেন। কিন্তু আমার মনে হয় এতে মানুষ অনেক অনেক বদনজর দেয়। কারণ আমার হাজব্যান্ড এর বাইকটার সাথেই নানা দূর্ঘটনা ঘটে। আর মানুষ এতে এমন ওত পেতে থাকে যে, সেই বাইক দ্বারা কারো কোনো ক্ষতি হলেই কি বা না হলেই কি তারা বিভিন্ন লোক ধরে টাকা খাওয়ার জন্য। যদিও দোষ অন্য জনার থাকে তাও তারা টাকা খাওয়ার জন্য বাইক আটকায়, বাড়িতে এসে হুমকি দিয়ে যায় এমন অবস্থা। তারা এমন করার সুযোগ পায় আমার হাজব্যান্ডরা গরীব বলে। আমাদের কোনো নামি দামি লোক নাই যে কোনো বিপদ হলে পাশে এসে দাঁড়াবে,এমন কি পুলিশ ও না। কারন পুলিশ কে টাকা দিলেই সে উল্টো আরো আমাদের টাকা খাওয়ার ধান্দা করে।
তো শাইখ এখন কি করা উচিত? এমন কি কোনো আমল আছে যার দ্বারা মানুষের এসব অত্যাচার থেকে মুক্তি লাভ করা যায়? আর বাইক টা এতো সাবধান ভাবে চালানোর পরও এমন দূর্ঘটনা হয় এর থেকে বাঁচার উপায় কি?
উত্তর :
মানুষের জুলুম-নির্যাতন এবং শত্রুকে ভয় পেলে হাদিসে যেসব দোয়া পড়ার কথা এসেছে সেগুলো অধিক পরিমাণে পাঠ করবে। এই ক্ষেত্রে আরেকটি বিষয় করা যেতে পারে তা হল, ওই বাইকটি বিক্রয় করে আলাদা বাইক কেনা। কেননা কিছু বাড়ি, কিছু যানবাহন এবং কিছু স্ত্রী মানুষের জন্য দুর্ভাগ্যের কারণ।
যেমন: হাদিসে বর্ণিত হয়েছে, ইবনে উমর রা. সূত্রে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত যে, তিনি বলেছেন,
إِنْ يَكُنْ مِنَ الشُّؤْمِ شَىْءٌ حَقٌّ فَفِي الْفَرَسِ وَالْمَرْأَةِ وَالدَّارِ "
"কোন কিছুতে অশুভ কিছু যদি থাকে, তবে তা হবে ঘোড়া, বাড়ি ও স্ত্রীতে।"
[সহীহ মুসলিম (ইসলামিক ফাউন্ডেশন), অধ্যায়: ৪০/ সালাম, পরিচ্ছেদ: ৩৩. কুলক্ষণ, সুলক্ষণ, ফাল ও সম্ভাব্য অপয়া বিষয়বস্তুর বিবরণ]]
তাই এই তিন বিষয়ে মানুষের অকল্যাণ ও অপ্রত্যাশিত বিষয় ঘটতে থাকলে এগুলো পরিবর্তন করা উচিত।
শত্রু এবং শক্তিধর ব্যক্তির সাক্ষাতকালে দো‘আ
(1) «اللَّهُمَّ إِنَّا نَجْعَلُكَ فِي نُحُورِهِم، وَنَعُوذُ بِكَ مِنْ شُرُورِهِمْ».
(আল্লা-হুম্মা ইন্না নাজ্‘আলুকা ফী নুহূরিহিম ওয়া না‘উযু বিকা মিন শুরূরিহিম)।
“হে আল্লাহ! আমরা আপনাকে তাদের গলদেশে রাখছি এবং তাদের অনিষ্ট থেকে আপনার নিকট আশ্রয় প্রার্থনা করছি।”[1]
(2) «اللَّهُمَّ أَنْتَ عَضُدِي، وَأَنْتَ نَصِيرِي، بِكَ أَحُولُ وَبِكَ أَصُولُ، وَبِكَ أُقاتِلُ».
(আল্লহুম্মা আনতা ‘আদ্বুদী, ওয়া আনতা নাসীরী, বিকা আহূলু, ওয়া বিকা আসূলু, ওয়া বিকা উক্বা-তিলু)।
“হে আল্লাহ! আপনি আমার শক্তি এবং আপনি আমার সাহায্যকারী; আপনারই সাহায্যে আমি বিচরণ করি, আপনারই সাহায্যে আমি আক্রমন করি এবং আপনারই সাহায্যে আমি যুদ্ধ করি।”[2]
3- «حَسْبُنا اللَّهُ وَنِعْمَ الْوَكِيلُ».
(হাসবুনাল্লা-হু ওয়া নি‘মাল ওয়াকীল)।
“আল্লাহই আমাদের জন্য যথেষ্ট, আর তিনি কতই না উত্তম কর্মবিধায়ক”।[3]
----------
[1] আবু দাঊদ ২/৮৯, নং ১৫৩৭; আর হাকেম হাদীসটিকে সহীহ বলেছেন এবং ইমাম যাহাবী একে সমর্থন করেছেন ২/১৪২।
[2] আবূ দাউদ ৩/৪২, নং ২৬৩২; তিরমিযী ৫/৫৭২, নং ৩৫৮৪। আরও দেখুন, সহীহুত তিরমিযী, ৩/১৮৩।
[3] বুখারী ৫/১৭২, নং ৪৫৬৩।
আল্লাহু আলম।
উত্তর প্রদানে :
আব্দুল্লাহিল হাদী বিন আব্দুল জলীল।
দাঈ,জুবাইল দাওয়াহ এন্ড গাইডেন্স সেন্টার, সৌদি আরব।
#abdullahilhadi
#সংক্ষিপ্তপ্রশ্নোত্তর

0 Comments