Recent Tube

বিতিকিচ্ছা-০৫ "রসাতল যাত্রায় আমরাঃ" নুর মুহাম্মদ চৌধূরী (মুবিন)



   অনকের মতে আমরা অর্থাৎ জাতি  আজ নাকি  ধ্বংসের একদম দ্বারপ্রান্তে। কেউ কেউ বলছেন দ্বারপ্রান্তে কি! ধ্বংসের গহীন থেকে গহীনে পৌছে গেছি আমরা। তবে ক্ষমতার সুবিধাভোগীদের প্রায় সকলেরই একই বুলি, দেশ আজ উন্নয়নের রোল মডেল। সে কি আর বলতে হয়? তবে দায়িত্বশীলদের কল্পনার এই রোল মডেল হয়ে আমরা ক্রমশঃ মালয়েশিয়া, শিঙ্গাপুর ছাড়িয়ে সোজা ইউরোপ আমেরিকার দ্বারপ্রান্তে এসে পৌছে গেছি। কিন্তু কথা হল কার কথাটি সঠিক? 

     সম্বৃদ্ধির হিসাবে দেশে খুব একটা কিছু না থাকলেও পরাশক্তির নজর যে এ দেশের উপর পড়বেনা- তা নয়। তবে কোন পরাশক্তির পারমানবিক  বোমার আঘাতে আমরা ধ্বংস হয়ে গেছি, তা তো মোটেই নয়। তাহলে দুর্মুখেরা যে বলে "ধ্বংশ"! তা কোথায়? এ প্রশ্নে বিদ্বগ্ধজনদের অঙ্গুলি নির্দেশ হয় সর্বপ্রথম "আমাদের  শিক্ষাব্যবস্তার" দিকে। কয়েকটি বৎসর ধরে একাধারে প্রশ্নপত্র ফাঁস্, আর পাশের হারের ছড়াছড়ি নব প্রজন্মকে একদম নিঃশেষ করে দিয়েছে বললে ভুল হবে না। এতে প্রকৃত পড়ুয়ারা হতাশায় যদিও  নাকাল, তবে তাতে বাউণ্ডুলেদের আকাশচুম্বী স্বপ্ন পুরণ হয়েই যাচ্ছে।  এই একটা বিষয়ই পুরো জাতীকে ধ্বংসের শেষ সীমায় পৌঁছে দেওয়ার জন্য যথেষ্ট নয় তো কি?

      তবে গত সনে প্রশ্নপত্র নাকি ফাঁসই্ হয় নাই! অনেকে বলছেন এটাতো আসলে কেবল ঐ ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের বদৌলতে। যে দেশে অপরাধ করলে মিলে সাবাসী, আার তা প্রচার করলে হয় ফাঁসি! এমন আজব দমন নীতির ফলে এবৎসর কোথাও কোন প্রঁশ্নপত্র ফা্স হয়নি, অথবা ফাঁস প্রচার পায়নি। তবে অচীরেই এর খেসারত যে পারমানবিক বোমার চেয়েও আরোও ভয়ংকর রুপে প্রকাশ পাবে,  তা কিন্তু মিথ্যে হবার নয়। 

      নকল করে পাশ করা এই শিক্ষিত মহল অচীরেই  নিজেরা নিজেদের অধঃপতন তথা জাতীর রসাতল যাত্রাকে ষোলকলায় পূর্ণ করবে এতে সন্দেহের কোন অবকাশ নাই। এখনতো আবার করোনাক্লিষ্টতার দোহাই দিয়ে বিনে পরীক্ষায় প্রমোশন দেবার চিন্তা ভাবনা চলছে কি না, একমাত্র আল্লাহ মালুম।

     এতএব অচীরেই শোনা যাবে, ডাক্তার মশাই ওটিতে রোগী ঢুকিয়ে পাশের কামরায় গিয়ে বই উল্টাতে ব্যাস্ত আছেন, এটা জানার জন্য যে, রোগীর হার্ট আসলে ডানপাশে নাকি বামে। এখানে ডাক্তার হতে পারে তার আপন পিতার হত্যাকারী, যেহেতু সর্সের মধ্যেই ভুতের আবাস। তদ্রূপ কোন ইঞ্জিনিয়ারের অদক্ষতার খেসারত দেবে তার পুরো পরিবার। সাথে যাবে আরো কিছু আম জনসাধারণ, সেই সাথে পুরো নগরবাসী। অর্থনীতিবিদের অজান্তেই পাচার হয়ে যাবে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তহবিল। এগুলো পারমানবিক বিপর্যের চেয়ে আর কম কি? এইতো সেদিনের কথা, বাংলাদেশে ব্যংকে সংঘটিত অগ্নিকাণ্ডে নগদ অর্থ সহ ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি আসলেই একটি পারমাণবিক বিস্ফোরণের  নয় তো কি আমাদের জন্য। 
       
        অতঃপর রাষ্ট্র শুধুমাত্র  বখাটে আর গুণ্ডাপাণ্ডাদের অভয়ারণ্য হয়ে জাতীর বারোটা বাজানোর শেষ দায়িত্বটুকু পালন  করবে, আর বাকীরা মাশাল্লাহ চেয়ে চেয়ে দেখবেন কোন তীরে ভীড়ায় তরী। 

     ভাজ্ঞিস্ এখন রাষ্ট্রের খুব কম সংখ্যক নাগরিক এমন অথর্ব উচ্চশিক্ষার সোপানে পৌছেন, নতুবা এতদিনে ভর্তা হয়ে যাওয়া ছাড়া আমাদের আর গত্যান্তর ছিল না। উপরন্তু যারা উচ্ছ শিক্ষার দরজায় পাঁ রাখতে অপারগ, বর্তমানে তাদের একমাত্র পছন্দনীয় ও সক্ষম পেশা হচ্ছে রাজনীতি। যদিও রাজনীতি কোন পেশা নয়। কিন্তু হালে সর্বাপেক্ষা লাভজনক ও মহৎ পেশা হিসাবে সীকৃতি লাভ করেছে এটা। গেল নির্বাচনে দাখিলকৃত হলফনামায় সাবেক শিক্ষামন্ত্রীর পেশা হিসাবে উল্লেখ আছে এই রাজনীতি। তাই এখন এটাকে পেশা না বলাটাই হতে পারে বেআইনী। এই রাজনীতির ধারক বাহকরা অপরাজনীতির যে সয়লাব বইয়ে দিচ্ছেন না সমাজে, তা তো চক্ষুষ্মানরা দেখতেই পাচ্ছেন।
      

  1.       চিন্তার বিষয় এর পর আমরা কোথায় গিয়ে দাঁড়াব। জাতীর এই রসাতল যাত্রার মাধ্যমে কি ভবিষ্যত রেখে যাচ্ছি আমরা আগামী প্রজন্মের জন্য? ওরাতো এখনি আমাদেরে আসামীর কাঠগড়ায় দাঁড় করাবে। তার আগে বরং কিয়ামতটা হয়ে গেলেইতো হয়তো বাঁচা।

Post a Comment

0 Comments