দ্বীন ইসলামের প্রকৃত আবেদন জানা ও বুঝার পর ক্বওমীর অনেক ছাত্র এবং আলেম তাদের আকাবিরদের প্রথা ভেঙ্গে জামায়াত শিবির মুখী হচ্ছেন।কেউ স্বতঃস্ফূর্তভাবে এই দ্বীনি সংগঠনে যোগ দিচ্ছেন,আবার কেউ এই সংগঠনকে মৌন সমর্থন দিয়ে যাচ্ছেন।ক্বওমী দূর্গে এই আঘাত কঠিন হবে জেনেই তাদের পূর্বপূরুষগণ মাওলানা মওদূদী(রহ.)-এর লিখিত ইসলামী সাহিত্য ও তাফসির না পড়ার জন্য ছাত্র-ছাত্রীদেরকে কঠিনভাবে হারাম করে আসছিলেন এবং সেই ধারা এখনো বহাল রয়েছে।
দুঃখের বিষয় হল,আমি মাওলানা মওদূদী(রহ.)-এর প্রতি ক্বওমী দেওবন্দী আলেমদের আনিত অভিযোগগুলো খুব গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করে দেখেছি যার কোন শরীয় ভিত্তি নেই।মাওলানা মওদূদী(রহ.)-এর সাহিত্য ও তাফসীর কেউ যদি গোত্রপ্রীতি উপরে উঠে বিশুদ্ধ মন নিয়ে অধ্যায়ণ করেন তবে তার মন বার বার এ কথার সাক্ষ্য দেবে যে, নিছক হিংসার বশবর্তী হয়ে মাওলানার প্রতি তারা এসব অপবাদ দিয়ে আসছেন।যা ইনসাফের পরিপন্থী এবং মারাত্নক জুলুম।
এই হিংসা বিশ্ব মুসলিম সমাজে বিশেষ করে ভারত, পাকিস্তান ও বাংলাদেশের মুসলিম সমাজের মধ্যে যে গভীর ক্ষতের সৃষ্টি করেছে এবং ইসলামীপন্থীদের মধ্যে নানা দল ও উপদলের সৃষ্টি করেছে এর পিছনে বড় অবদান রয়েছে ক্বওমী ও দেওবন্দী আলেমদের।
অথচ মহান আল্লাহ দল উপদলে বিভক্ত হতে আমাদেরকে কঠোরভাবে নিষেধ করে বলেছেন,
"তোমরা সবাই মিলে আল্লাহর রজ্জুকে শক্ত করে আঁকড়ে ধর এবং কখনও পরস্পর বিচ্ছিন্ন হয়ো না।[সূরা আল ইমরান - আয়াত ১০৩]
যে সমস্ত ক্বওমী ও দেওবন্দী আলেমরা জীবনধরে মাওলানা মওদূদী(রহ.)-এর মুখোস উন্মোচন করে আসছিলেন, আজ তাদের মুখোস উন্মোচন করে দেয়ার জন্য অনেক ক্বওমী আলেম হাতে কলম ধরে ক্ষুরধার লিখে চলেছেন।মহান রবের পক্ষ থেকে এটিয় সময়ের কঠিন প্রতিশোধ।আরো বড় প্রতিশোধ এই যে,জামায়াতে ইসলামীকে যারা ভাঙ্গতে চেয়েছিল তারাই ভেঙ্গে চুরমার হয়ে শত দলে বিভক্ত হয়ে কেউ জালেম সরকারের লেজুড়বৃত্তিকে জীবনের একমাত্র ইবাদত হিসাবে গ্রহণ করেছে।আবার কেউ লোক লজ্জার ভয়ে জালেম সরাকারের তাবেদারি করাকে ঘৃণিত কাজ বলে সর্বশ্রান্ত হয়ে কচ্ছপের মত খোলসে মুখ ঢেকে আত্ন মর্যাদা রক্ষা করার বৃথা চেষ্টা করে যাচ্ছে।কিন্তু চোখ বন্ধ করে মুখ খোলসে গুটিয়ে নিলেই প্রলয় বন্ধ হয় না।
এ দেশে জামায়াতে ইসলামী ও ইসলামী ছাত্র শিবিরের নেতা-কর্মীদের প্রতি যত বিরোধীতা ও জুলুম নির্যিতন করা হয়ছে অন্য কোন দলের নেতা-কর্মীদের প্রতি তার সিকি পরিমানও করা হয়নি।অথচ,তারাও নিজেকে ইসলামপন্থী দল বলে প্রচার করে।জামায়াত শিবিরের হাত ধরে এ দেশে অচিরের একটি বিল্পব সাধিত হবে, ইনশা আল্লাহ।
ইসলাম বিদ্ধেষী জালেম সরকার ও তার লেজুড়বৃত্তি করা এক শ্রেণীর আলেম জামায়াত নির্মূলের যে স্বপ্ন নিয়ে মাঠে নেমেছিল,সেই স্বপ্ন আজ তাদের নিকট দুঃস্বপ্নে পরিনত হয়েছে।
ইসলাম বিদ্ধেষী জালেম সরকার জামায়াতের বিকল্প হিসাবে কিছু মাজারপন্থী দলকে সামনে নিয়ে এসেছিল,মাজারপন্থী ও ক্বওমী আলেমদের বড় একটি অংশ চেয়েছিল জামায়াত শূণ্য করে তারা ময়দানে তারা একাই খেলবে।কিন্তু এটি ছিল তাদের নিছক ছেলে মানুষী চিন্তা।জামায়াত শেষ করতে পারলে পরের টার্গেট যে তারাই ছিল এই জ্ঞানটুকুও যাদের নেই তাদের প্রতি অনুকম্পা করা ছাড়া আর কিই বা থাকে।
কিন্তু তবুও হাসিনার চক্রান্ত থেমে নেই।হেফাজতের একাংশের লাগাম এখন ভারতের গোয়েন্দাবাহিনী 'র' এর হাতে এবং তাবলিগের একাংশের লাগাম ইহুদীবাদী ইসরাইলের কুখ্যাত গোয়েন্দা সংস্হা মোসাদের হাতে।প্রকৃত আলেমদের বুঝতে হবে,এই ইসলামী বিদ্ধেষী হাসিনা সরকার কোন মুসলমানের দরদী নয়,হতে পারে না।
এ দেশ থেকে ইসলাম ও ইসলামী দলগুলোকে নির্মূলের এজেন্টা নিয়ে বিদেশী প্রভুদের আর্শিবাদপৃষ্ঠ হয়ে অবৈধভাবে ক্ষমতায় এসেছে।ইসলাম বিদ্ধেষী সরকারের ক্ষমতার গণেশ উল্টাতে এ দেশে জামায়াতে ইসলামী ও ইসলামী ছাত্র শিবিরের কোন বিকল্প আপাতত নেই-এই কথাটি এখন এ দেশের চায়ের স্টলে, মাঠে ময়দানে আলোচিত হচ্ছে।দিন দিন মানুষ জামায়াত শিবিরের প্রতি যেমন দূর্বল হচ্ছে তেমনি অন্যান্য ইসলামী দলগুলো সরকারের সাথে লিয়াজো করে চলার কারণে জন মানুষর ঘৃণার পাত্রে পরিনত হচ্ছে।
জামায়াত শিবির এ দেশের জন মানুষের আস্হার প্রতীক।তারা যে সাধারণ মানুষের মনের গহিনে জায়গা করে নিতে পেরেছে এটায় তাদের বড় সাফল্য,বড় অর্জন।
------------------------------------------------
লেখকঃ ইসলামিক আর্টিকেল লেখক ও অনলাইন এক্টিভিস্ট।
0 Comments