Recent Tube

বিতি কিচ্ছা-৩২, নুর মুহাম্মদ চৌধূরী।

     
                           বিতি কিচ্ছা,
                              পর্ব-৩২,

---------------
এর চেয়ে মরাই ভাল:?

কে না জানে যে ইদানীংকার সর্সের মধ্যেই ভুতের বাস। তা ও আবার ভুত তাড়াবে ভুতে। এতো এক মহা আশ্চর্য্যের বিষয়। কোন মুখে গাহিব গান" আমার সোনার বাংলা",অথবা"এদেশ আমার সবুজে সবুজ নীলিমায় সে তো নীল"। এসব গান আর আমাদের হালচাল,- রীতিমত লজ্জা লাগারই কথা। নেতারা বলছেন, "এতো বেতন দেই তবু ওরা ঘুষ খায় কেন"। এর আগের কালের কোন নেতা বোধ হয় একথা বলেন নাই যে, "ওরা পেলো সোনার খনি আর আমি পেলাম চুরের খনি"। আজ বড় বড় শয়তানরা তাদের চৌদ্দ গোষ্ঠীকে সাথে নিয়ে জাতিকে অনৈতিকতার চরম সীমায় পৌছে দেবার জন্য যার পর নাই চেষ্টায় রত। তারপর আবার সোনার খনির আশা করা রীতিমত আহাম্মকী নয় তো কি।

    আমার তো সন্দেহ হয় নকল করে পাশ করেনি অথবা ছাত্র জীবনে দুর্ণীতির আশ্রয় নেয়নি এমন একটি ছেলেও আজ সচিবালয়ের সর্ব্বোচ্ছ আসনগুলোতে নাই। সেই উনিশ শত একাত্তর থেকে চৌর্যবৃত্তি আর দুর্ণীতির প্রশিক্ষণ নিতে নিতে পুরো জাতি আজ ডাকাতের উপরের ডাকাত এক মহা ডাকাত সেজে বসেছে। দীর্ঘ্য আটচল্লিশ বছরের লাগাতার প্রচেষ্টায় জাতির এই ঋণাত্মক উত্থানের খেসারত হাড়ে হাড়ে টের পাইয়েই ছাড়বে, সন্দেহ নেই। এখন শুধু অপেক্ষার পালা। বিশ্বাস করতে হচ্ছে একথাই বুঝি সত্য যে পৃথিবীতে বসবাসের অযোগ্য কোন দেশ থাকলে সেটার নাম আমার চোরের বাংলা।" আল্লাহর গজবে আক্রান্ত হতে আর বাকি কত "এর খোজ নিচ্ছেন আজ অনেক ভবিষ্যৎবাদী ও বিজ্ঞজনেরা। কেন আসবে না গজব? দেখুন,
(১) ঘুষ নেওয়ার ভিডিও করায় সাংবাদিককে পেটালো পুলিশ।

(২) মাদ্রাসা ছাত্রীকে গনধর্ষন ঘটনাকে বিচারের আওতায় না নিয়ে তা পাঁচ লাখে সমযোতা করলেন থানার ওসি।

(৩) মাদারী পুর পৌরসভায় টিবি ক্লিনিক সড়কে এক স্কুল ছাত্রীকে ধর্ষনের পর তাকে ভিতর থেকে দরজা বন্ধ ঘরে ঘেরাও করলে মেয়েটিকে ভেন্টিলেটার দিয়ে ফেলে দেয় মোক্তার হোসেন নামে এক পুলিশ কনষ্টেবল।

(৪) মাদক দিয়ে শিক্ষার্থী সজীবকে ফাঁসাতে গিয়ে ভৈরবে গনধোলাইয়ের শিকার হয় আবুল খায়ের ও আজিজুল হক নামের দুই এস আই। 

(৫) প্রাইমারী স্কুলের নাইট গার্ডের চাকরি পাইয়ে দেবার নামে তিন লাখ টাকা ঘুষ নেন সাংসদ আলতাফ আলী। কিন্তু চাকুরী না দেয়ায় ভোক্তভোগীরা তার গাড়িতে তাকে আটকালে অবশেষে তিনি পুলিশী সহযোগীতায় উদ্ধার হন।

(৬) বিশ দিন আগে রোগী মারা গেলেও তার ডায়ালাইসিস চলছে তেইশ বার, শেষে বিল দশ লাখ টাকা।

(৭) আট হাজার পিস ইয়াবা সহ আটক পুলিশের এস আইই হেলাল উদ্দিন ।

   ইত্যাদি খবর খুব তরতাজা। এগুলো জনগনের বন্ধু খ্যাত পুলিশের, জনগনের সেবক খ্যাত জন প্রতিনিধির, আর জীবন মৃত্যুর সন্ধিক্ষনে যেখানে মানবতার নিশানী জাজ্বল্যমান পাওয়ার আশা সে ডাক্তারদর খবর।
তবে দুঃখের সঙ্গে নয় নরং কিছুটা আশান্বিত হয়েই বলা যায়, মানবতার কিছু কিছু খবর আজও পত্রিকায় কিংবা সোস্যাল মিডিয়ায় পাওয়া যাচ্ছে। যেমন, ব্যাগ ভর্তি নগদ টাকা, স্বর্ণালংকার, দামী মোবাইল ফোন সহ কিছু দ্রব্য মালিকের কাছ পৌছে দিচ্ছেন এক গরীব রিক্সা চালক। 
মুলত: যেখান থেকে আশা করার নয়, সেখান থেকে যথেষ্ট মানবতার নিদর্শন প্রকাশ পাচ্ছে, 
আর যেখানে আশা করা সংগত, সেখানেই হই আশাহত। ইহাই চোরের বাংলার বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আসা ডিগ্রি ধারীদের কাছ থেকে আমাদের পাওনা।

তবে জাতি যে আজ এক মহা ক্রান্তিকাল অতিক্রম করছে- এতে কোন সন্দেহ নেই। তাইতো এই সময়ে জাতির ঘাড়ে সওয়ার হওয়া কর্ণদাররা কেউ কেউ বলছেন এত বেতন দেই তবু ওরা করে দূর্ণীতি। অতঃপর কেউ দিচ্ছেন ধর্মের তথা বক-ধার্মিকতার ছবক। যেন ভুতের মুখে রাম নাম। অন্য দিকে পাহাড় সমান সম্পদের মালিকরা আরও পাহাড় তৈরিতে মগ্ন আছে ঠিকমতই। এতএব হাসপাতালের চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারীর চার হাজার কুটি টাকার সম্পদের মালিক হওয়া, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কেরানী আবজালের স্ত্রীর একাউন্টে ২৬৩ কুটি টাকা,যদুর স্ত্রীর নামে রাজধানীতে একাধীক টাওয়ার থাকা আর মধু কেরানীর চার চারটি জাহাজের মালিক হওয়া কোন অস্বাভাবিক বিষয় নয়।

 সৌরজগতের কোন গ্রহে আছে কি না জানিনা তবে এই চুরের বাংলায় আছে তদবির নামক দারুণ লাভজনক এক পেশা। এই পেশায় যারা কাজ করেন তাদের উপাধি তদবির কারী। এই তদবির পেশায় নিয়োজিতরা যেমন আইনজ্ঞ, তেমন মুখবাজ, তেমন দাপটওয়ালা। এদের কারো কারো হাত রাষ্ট্রের সর্ব্বোচ্ছ মহল পর্যন্ত বিস্তৃত হয়ে থাকে। এদের বেশীরভাগই কোন নির্দিষ্ট রাজনৈতিক দলের লেজুড়বৃত্তি করেন না। এরা বড় বড় আমলাদের উপর প্রভাব বিস্তার করে পছন্দসই কাজটি আদায় করে নিতে সক্ষম। এদেরে কারো সম্পদের হিসাব আর আয়ের উৎস নিয়ে প্রশ্ন তুলবে কোন দুর্ণীতি দমন কমিশন। কারণ দুর্ণীতি দমন কমিশনের কর্তা মহাশয় এদের সহায়তায়ই দুর্ণীতির সুযোগ লাভ করে থাকেন। এতএব ডি আই জি মিজানের কাছ থেকে ঘুষ গ্রহনের সাক্ষ্য প্রমাণ ও স্বীকারোক্তি পাওয়ার পরও এদেশে চেয়ার বহাল থাকে। আজকালকার শিক্ষা ব্যবস্থা এমনই একটি নির্লজ্জ জাতি উপহার দেবে এটাই স্বাভাবিক।
এই দেশের শিক্ষলয়ে শিক্ষকের দরকার হয় একটি বে-আাদব ছাত্রের। যার দ্বারা তিনি অন্য একজন শিক্ষককে ঘায়েল করতে পারেন। তাই ছাত্রকে বে-আদবী শিক্ষাদান অতীব জরুরী। এতএব হুইপ জয়নাল আবেদীন ফারুককে শারীরিকভাবে লাঞ্চিত করে পুরুষ্কৃত হয় রাষ্ট্রের চাকর পুলিশ। সুতরাং এই অনৈতিক নৈতিকতার প্রশিক্ষণ চলছে, চলবে।
অবস্থার যারা পরিবর্তন চান,তারা অপারগ হয়ে আল্লাহর দরবারে হাত উটান, আর বলেন "এর চেয়ে মরাই ভাল, দুনিয়া ছেড়ে যাওয়াই ভাল"। হালে দেশের সকল প্রান্ত থেকে নামি দামী আলেম উলামারা সহ বহু বিজ্ঞ গুণীজন বিদায় নিচ্ছেন দেখতে পাচ্ছি। আমাদের দোওয়া কবুল হয় না। তবে কি বিশেষ গজব দর্শনের জন্যই এই বেচে থাকা।
--------------------------
  

Post a Comment

0 Comments