ইসলামী ঐক্যপ্রচেষ্টা সফল হচ্ছে না কেন এবং ইসলামী দল ও নেতৃবৃন্দ সম্পর্কে জামায়াতে ইসলামীর নীতিঃ-
২০০৫ সালের ৪ আগষ্ট দৈনিক সংগ্রামে জাতীয় শরীয়াহ্ কাউন্সিলের চেয়ারম্যান ও বাইতুল মোকাররমের খতীব মাওলানা উবাইদুল হক সাহেবের একটি সাক্ষাতাকার প্রকাশিত হয়।আমি তখন ম্যানচেস্টার।
ইন্টারনেট থেকে কম্পিউটারে দৈনিক সংগ্রাম প্রায় নিয়মিত পড়তাম। ঐ সাক্ষাতকারে তিনি ইসলামী ঐক্যপ্রচেষ্টা সফল না হওয়ার কারণ সম্পর্কে জিজ্ঞাসিত হয়ে জবাব দিয়েছিলেন। তা থেকে পাঁচটি কারণ নোট করে নিলাম।
২৯ সেপ্টেম্বর দেশে ফিরে আসার পর খতীব সাহেবের সাথে ফোনে আলাপকালে পর্যায়ক্রমে আমি ঐ পাঁচটি কারণ নোট থেকে পড়ে শেনালাম। তিনি বললেন,আরো একটি কারণ উল্লেখ করা হয়নি।সে কারণটি তিনি ফোন জানালে তাও নোট করে নিলাম।ইসলামী ঐক্যপ্রচেষ্টা সফল না হওয়া মোট ছয়টি কারণ তিনি উক্ত সাক্ষাতকারে বলেছেন বলে আমি নিশ্চিত হলাম।
নিম্নে আমি ঐ ক্রমনুসারেই কারণগুলো উল্লেখ করছি।
১. একদল অপর দলকে বিদ্রুপ করা।
২. নাজের দোষ না দেখে অন্যের দোষ তালাশ করা।
৩. প্রতিপক্ষকে গালি দেওয়া ও মন্দ উপাধিতে তিরস্কার করা।
৪. নিজস্ব ধারণাবশত বিনা প্রমাণে অভিযোগ করা।
৫. আত্নগর্ব ও অহঙ্কারবশত ধারণা করা যে, শুধু আমরাই ঠিক, অন্য সবাই ভ্রান্ত ও ইসলামের দুশমন।
৬. কারো পরামর্শ ছাড়াই যা ইচ্ছে করে ফেলা।
মুহতারাম খতীব সাহেব জাতীয় শরীয়াহ্ কাউন্সিলের চেয়ারম্যান হিসাবে সকল ইসলামী শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ করার উদ্দেশ্যে আন্তরিক প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।
এ প্রচেষ্টা সফল না হওয়ার কারণ সম্পর্কে তিক্ত অভিজ্ঞতা অর্জনের সুযোগ সবচেয়ে বেশি তাঁরই হয়েছে।তাই তিনি বাস্তব অভিজ্ঞতার আলোকে ঐ প্রশ্নের যে জবাব দিয়েছেন তা সঠিক হওয়ারই কথা।
ইসলামী দল ও নেতৃবৃন্দ সম্পর্কে জামায়াতে ইসলামীর নীতিঃ-
জামায়াতে ইসলামীর প্রতিষ্ঠাতা মাওলানা মওদূদীর সময় থেকেই সকল ইসলামী দল ও নেতৃবৃন্দ সম্পর্কে জামায়াত নিষ্ঠার সাথে এ নীতি মেনে চলছে যে-
১. জামায়াত কোন ইসলামী দল ও নেতা সম্পর্কে কখনো কোন রকম বিরুপ মন্তব্য করেনা।
২. ইসলামের নামে কর্মরত কোন দলের বা নেতার পক্ষ থেকে জামায়াতে ইসলামীর বিরুদ্ধে আক্রমণান্তক মন্তব্য করা হলেও জামায়াতের পক্ষ থেকে পাল্টা আক্রমণ করা হয়না।অবশ্য মন্তব্যে কোন ভুল তথ্য থাকলে অত্যন্ত শালিন ভাষায় তা প্রকাশ করা হয়।
৩. যারা জামায়াতের বিরুদ্ধে ফতুয়া প্রচার করেন তাদের ব্যাপারে জামায়াত চুপ থাকাই শ্রেয় মনে করে।
কারাণ,ঐ ফতুয়ার উদ্দেশ্য ভুল ধরিয়ে দিয়ে সংশোধন করা নয়,বরং জনগণকে বিভ্রান্ত করে জামায়াত থেকে দূরে রাখা।
৪. জামায়াত কোন ইসলামী দল ও নেতার সাথে বিতর্কে লিপ্ত হয়না।কেউ বিতর্ক করতে চায়লে জামায়াত তাতে সাড়াও দেয়না।কারণ,বিতর্ক দ্বারা কোন বিরোধেরই মীমাংসা হয়না।তাতে ঝগড়া বাড়ে মাত্র।
৫. কেউ যদি যুক্তিসহকারে জামায়াতের কোন ভুল ধরিয়ে দেন তাহলে জামায়াত সে জন্য তার শুকরিয়া জানায়।অতপর হয় ভুলটা সংশোধন করে নেয়, নয়তো যুক্তি দ্বারা বোঝানোর চেষ্টা করে যে ওটা ভুল নয়।
------------------------------------------------
লেখকঃ ইসলামিক স্কলা, গ্রন্থপ্রনেতা দাঈ ও রাজনীতিবিদ। সুত্রঃ- জীবনে যা দেখলাম,মরহুম গোলাম আযম,৬ষ্ঠ খন্ড,পৃষ্টা ১৮৯।
0 Comments