মদিনায় মহামারি প্রবেশ করতে পারবে কি?
যখন কোনো জাতির মধ্যে অশ্লীলতার মতো জঘন্য পাপ বেড়ে যায়, তখন আল্লাহ তাদের মহামারির মাধ্যমে শাস্তি দেন। কোরআন ও হাদিসের ভাষ্য মতে মহামারি পৃথিবীতে আল্লাহর একটি শাস্তি।
মহানবী (সা.) ইরশাদ করেন, ‘যখন কোনো জাতির মধ্যে প্রকাশ্যে অশ্লীলতা ছড়িয়ে পড়ে তখন সেখানে মহামারি আকারে প্লেগ রোগের প্রাদুর্ভাব হয়। তাছাড়া এমন সব ব্যাধির উদ্ভব হয়, যা আগের লোকদের মধ্যে কখনো দেখা যায়নি। (সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদিস : ৪০১৯)
আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত, ‘তিনি রাসুলুল্লাহ (সা.)-কে প্লেগ রোগ (মহামারি) সম্পর্কে জিজ্ঞেস করেন। আল্লাহর নবী (সা.) তাঁকে জানান, এটি হচ্ছে এক ধরনের শাস্তি। আল্লাহ যার ওপর তা পাঠাতে ইচ্ছে করেন, পাঠান। কিন্তু আল্লাহ এটিকে মুমিনের জন্য রহমত বানিয়েছেন। অতএব প্লেগ রোগে কোনো বান্দা যদি ধৈর্য ধরে এবং এ বিশ্বাস নিয়ে আপন শহরে অবস্থান করতে থাকে যে, আল্লাহ তার জন্য যা নির্দিষ্ট করে রেখেছেন তা ছাড়া আর কোনো বিপদ তার ওপর আসবে না; তাহলে সেই বান্দার জন্য থাকবে শহীদের সাওয়াবের সমান সাওয়াব।’ (সহিহ বুখারি, হাদিস : ৫৭৩৪)
মহামারি নিয়ে মহানবী (সা.)-এর ভবিষ্যদ্বাণী
মহামারি ও রোগের প্রকোপ বেড়ে যাওয়াকে রাসুলুল্লাহ (সা.) কিয়ামতের অন্যতম আলামত হিসেবে উল্লেখ করেছেন। তিনি বলেন, ‘কিয়ামতের আগের ছয়টি নিদর্শন গণনা করে রাখো। আমার মৃত্যু, অতঃপর বায়তুল মুকাদ্দাস বিজয়, এরপর তোমাদের মধ্যে ঘটবে মহামারি, বকরির পালের মহামারির মতো।…’ (সহিহ বুখারি, হাদিস : ৩১৭৬)
তবে এই মহামারি থেকে আল্লাহ পবিত্র নগরী মদিনাকে রক্ষা করবেন বলেও ভবিষ্যদ্বাণী করেছেন। আবদুৃল্লাহ ইবন মাসলামা(র).....আবু হুরায়রা(রা.) থেকে বর্ণিত।তিনি বলেন,রাসূলুল্লাহ (স.) বলেছেন,মদিনার প্রবেশপথসমূহে ফেরেশতা নিয়োজিত রয়েছেন।অতএব,সেখানে দাজ্জাল ও প্লেগ(মহামারি) প্রবেশ করবেনা।
সহীহ বোখারী,হা-৬৬৪৮।
ইয়াহহিয়া ইবন মুসা(র.)..... আনাস (রা.) নবী (স.) থেকে বর্ণনা করেছেন,মদিনার দিকে দাজ্জাল আসবে,সে ফেরেশতাদেরকে পাহারা অবস্হায় দেখতে পাবে।অতএব দাজ্জাল ও প্লেগ মদিনার নিকটস্থ হবে না ইনশা আল্লাহ।সহীহ বোখারী,হা- ৬৬৪৯।
দ্বিনের ব্যাপারে উদাসীনতা জাতির ধ্বংস ডেকে আনে
আল্লাহর অবাধ্যতা, সীমালঙ্ঘন ও অবাধ পাপাচার মহামারির অন্যতম প্রধান কারণ হলেও শুধু পাপীরাই তাতে আক্রান্ত হয় না; বরং সৎ ও নেককার মানুষও তাতে আক্রান্ত হয়। কেননা তারা দ্বিনি দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করলে হয়তো উদ্ভূত পরিস্থিতির সৃষ্টি হতো না। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘তোমাদের আগের যুগে আমি যাদের রক্ষা করেছিলাম তাদের মধ্যে অল্প কয়েকজন ছাড়া সজ্জন ছিল না—যারা পৃথিবীতে বিপর্যয় সৃষ্টি করতে নিষেধ করত। তারা সীমালঙ্ঘনকারীরা যাতে সুখ-স্বাচ্ছন্দ্য পেত তারই অনুসরণ করত এবং তারা ছিল অপরাধী।’ (সুরা হুদ, আয়াত : ১১৬)
উল্লেখ্য যে, রাসুল(স.)এর স্পষ্ট বাণী, মদিনায় দাজ্জাল ও মহামারি প্রবেশ করতে পারবেনা।শোনা যাচ্ছে, মদিনাতেও মসজিদ বন্ধ করা হচ্ছে।সেটা কিসের ভিত্তিতে?রাসুল(স.) এর হাদিসকে উপেক্ষিত করে মসজিদ বন্ধ করার মত ধৃষ্টতাপূর্ণ কাজ সৌদি সরকার যদি বন্ধ না করে তবে এই জাতীকে কঠিন মাশুল দিতে হতে পারে।কারণ,সৌদিকে অনুসরণ করে অনেক মুসলিম দেশ ইতিমধ্যে মসজিদ বন্ধ করার মত দুঃসাহস দেখাতে শুরু করেছে।
অথচ,মহামারি চলাকালিন রাসুল(স.) কোন মসজিদ বন্ধ করেছেন এমন কোন প্রমাণ পাওয়া যায়না।
--------------------------------------------------
লেখকঃ ইসলামিক আর্টিকেল লেখক ও অনলাইন এক্টিভিস্ট।
0 Comments