বেশীরভাগ মেয়ের পর্দা করাতে যে জায়গায় কনফিউশন থাকে, তা হল আমরা বাংগালি মেয়েরা সবাই মোটামুটি শালীন পোশাক পরি, তারপরও আমাদের বেপর্দা বলা হয় কারন কি? যেমন সালোয়ার কামিজ, শাড়ি এগুলাই আমাদের বাংগালি সংস্কৃতি।
এ পোশাকে তো আমরা মোটামুটি সব ঢেকেই চলি তারপরও আমাদের বেপর্দা বলে?
আমাদের আশেপাশে তাকালে এমন মেয়ে বহু পাওয়া যাবে। যাদের ঠিক এই প্রশ্নগুলো।
চলুন দেখি উত্তর খুজি কোরানে।
এখন আমি কোরানের আলোকে বিষয়টা ধাপে ধাপে ব্যাখ্যা করব। মনে মনে সুরা তাহা পড়ে নিলাম।যাতে আমার কথা সবাই বুঝতে পারে এবং আমার বোনেরা যারা পুর্ণাঙ্গ পর্দা এখনও করেনা। তারা যেন উপলব্দি করতে পারেন।
প্রথমে সুরা নুরের ৩১ নং আয়াতে আসি, এখানে
আল্লাহ বলেন-
"তাদের ঘাড় ও বুক যেন মাথার কাপড় দিয়ে ঢেকে দেয়।"
কিন্তু এখানেই শেষ না আরো আছে, এইবার তিনটা আয়াত খুব ভাল করে খেয়াল করেন-
১."আর যা সাধারণত প্রকাশ পায় তা ছাড়া তাদের সৌন্দর্য তারা প্রকাশ করবে না।"
( সুরা নুর, আয়াত-৩১)
২."আর তারা যেন নিজদের গোপন সৌন্দর্য প্রকাশ করার জন্য সজোরে পদচারণা না করে।"
( সুরা নুর, আয়াত-৩ ১)
৩.'প্রাক-জাহেলী যুগের মত সৌন্দর্য প্রদর্শন করো না।"
( সুরা, আহযাব, আয়াত-৩৩)
এই তিনটা আয়াতের ভাবার্থ করলে দাড়ায়, আপনি আপনার এমন কোন সৌন্দর্য প্রকাশ করতে পারবেন না, কোন নন মাহরামের সাথে(মানে যাদের সাথে বিয়ে জায়েয), যা আপনা আপনি প্রকাশ পায় তা ছাড়া।
আচ্ছা চুল কি সৌন্দর্যের প্রতিক না? চুল দেখে মানুষ আকর্ষন বোধ করেনা?
তাহলে উত্তর পেলাম চুল ঢাকতে হবে কারন, সৌন্দর্য ঢেকে রাখার জন্য। আর অতিরিক্ত সাজ সজ্জা করা যাবেনা বোঝাই যাচ্ছে।
কিন্তু কেন?? সাজ সজ্জা প্রকাশ করলে সমস্যা কি। এর উত্তর আল্লাহ দিয়েছেন। এবার দুইটা আয়াত খেয়াল করেন-
১."আল্লাহ কেবল চান তোমাদের থেকে অপবিত্রতা দূর করতে এবং তোমাদেরকে পবিত্র ও নিষ্কলংক করতে।"
( সুরা আহযাব, আয়াত-৩৩)
২."তারা যেন তাদের জিলবাবে*র কিছু অংশ নিজেদের উপর ঝুলিয়ে দেয়, তাদেরকে চেনার ব্যাপারে এটাই সবচেয়ে কাছাকাছি পন্থা হবে। ফলে তাদেরকে কষ্ট দেয়া হবে না।"
( সুরা, আহযাব-৫৯)
অর্থাৎ, আমাদের নারীদের আল্লাহ পর্দা করাতে এইজন্য আদেশ দিচ্ছেন, যাতে আমরা পবিত্র থাকতে পারি। নিষ্কলংক থাকতে পারি। আমাদের উত্যক্ত না করা হয়।
আরেকটু ভেংগে বলি যেকোন খারাপ কাজের প্রাথমিক ধাপ দৃস্টি। কোন পুরুষ, কোন নারীর প্রেমে পড়ে মুলত তার সৌন্দর্য দেখে। প্রথমে চোখের পর্দার অবমাননা দিয়ে শুরু হলেও লজ্জাস্থান পর্যন্ত যেতে বেশী সময় লাগেনা। তাই পর্দা হচ্ছে নারীকে পবিত্র রাখার জন্য বিধান ও ফরজ।
তারপরো না বুঝলে এই আয়াতগুলোর তাফসির, বিশেষ করে সুরা নুর পড়লে ক্লিয়ার হবে। আর নামাজ রোজার মত পর্দা ও ফরজ। তাই পর্দা করতে হবে।
মোট কথা শালীন পোশাক পরেও যদি সৌন্দর্য প্রকাশ পায়, সাজ সজ্জা প্রকাশ পায় তাহলে পর্দা হবেনা। পর্দা করা ফরজ বিধান। এটিই ইবাদত।
আপনি যখন থেকে পর্দা শুরু করবেন তখন এক ধরনের পবিত্রতা অনুভব করবেন, সুরক্ষা অনুভব করবেন, মাথায় যখন হিজাব থাকবে, প্রতি মুহুর্তে মনে হবে, তুমি একজন মুসলিমাহ, তুমি এই পবিত্র পোশাক পরে কোন অন্যায়, অশালীন কাজ করতে পারনা। এইটা একটা পবিত্র অনুভূতি। আল্লাহর নিয়ামত।
--------------------------------------------------------------
লেখকঃ ইসলামিক আর্টিকেল লেখি।
0 Comments