Recent Tube

পর্দা ও ইসলাম। মূল -সাইয়্যেদ আবুল আলা মওদুদী রহঃ লিখেছেন- রাইয়ান ইয়ামিন আইমান।

           পর্দ্দা ও ইসলাম। 

সাইয়েদ আবুল আলা মওদুদী রহঃ ধর্ষণ, যেনা ব্যভিচারের প্রসারের কারণ বিশ্লেষণ করতে গিয়ে মার্কিন মুলুকের পত্রিকার একটি অনুসন্ধানী রিপোর্ট উল্লেখ করেন। এই রিপোর্ট আসলে এখন আমাদের সমাজের চিত্র। সাইয়েদ ম‌ওদুদী সমাজের এই দুষ্ট ক্ষতের প্রতিকারে ইসলামী ফর্মুলাও তুলে ধরেছেন।
-------
"যেসমস্ত কারণে আমেরিকায় চরিত্রহীনতার প্রচার প্রসার হচ্ছে এর পেছনে আছে তিনটি শয়তানি শক্তি।তাঁদের ত্রিত্ববাদ আমাদের এই ভূখন্ডে প্রভাব বিস্তার করে এক নরকের সৃষ্টি করেছে।

এই তিনটি শয়তানি শক্তি হচ্ছে,
১// 
অশ্লীল সাহিত্য। ইহা প্রথম মহাযুদ্ধের পর থেকে আশ্চার্যজনক দ্রুততার সাথে নির্লজ্জতার ব্যাপক প্রচার প্রসার করে আসছে।
২//
চলচ্চিত্র। ইহা কেবল সমকাম, অবৈধ প্রেম প্রবনতাকে প্ররোচিত করে ক্ষান্ত হয় নাই। বরং ইহার বিভিন্ন কৌশল বাস্তব শিক্ষা দান করে চলেছে।
৩//
নারীদের অধঃপতিত চারিত্রিক মান। তাঁহাদের বেশ- ভূষা অধিকাংশ সময় নগ্নতার পর্যায় থাকে। সিগারেট এবং মদ পানের ক্রমবর্ধমান অভ্যাসের মাধ্যমে পুরুষদের সাথে অবাধ মেলামেশার সুযোগ সৃষ্টি করা হচ্ছে।

এই তিনটি বস্তু আমাদের এখানে ব্যাপকভাবে প্রসার লাভ করছে। ইহার ফলে খ্রিস্টীয় সভ্যতা ও সমাজ ব্যবস্থার অবনতি এবং শেষ পর্যন্ত বিলোপ সাধন অবশ্যম্ভাবী হবে। যদি এখনও আমরা ইহার গতিরোধ করতে না পারি, তাহলে যে প্রবৃত্তি পূজা ও যৌন উম্মত্ততা রোম এবং অন্যান্য জাতিকে তাঁদের মদ্য, নারী, নৃত্যগীত সহ ধ্বংসের অতল গহ্বরে নিক্ষেপ করেছে আমাদের ইতিহাসও অনুরূপভাবে লিখিত হবে"।

(( পর্দা ও ইসলাম, পৃষ্ঠা, ৮২))

কিন্তু ধ্বংসের অতল গহ্বর থেকে কিভাবে রক্ষা পেতে হবে এই শিক্ষা খ্রিস্টীয় সমাজে নেই, এমনকি আধুনিক কোন সমাজবিজ্ঞানীর কাছেও নেই। একমাত্র চির আধুনিক ইসলামের কাছে রয়েছে বাঁচার ফর্মুলা। 

সাইয়েদ ম‌ওদুদী রহঃ তাঁর কিতাবে তিনটি পয়েন্ট তুলে ধরেছেন এভাবে,
১//
ইসলামের ফৌজদারি আইন আপন রাজনৈতিক শক্তি দ্বারা একদিকে অন্যায় কাজ বল পূর্বক রহিত করে, অপরদিকে সমাজের সম্ভ্রান্ত লোকদেরকে দূরভিসন্ধিকারী মানুষের অপবাদ থেকেও রক্ষা করে।

সূরা আন-নূর:৪ - "যারা সতী-সাধ্বী নারীর প্রতি অপবাদ আরোপ করে অতঃপর স্বপক্ষে চার জন পুরুষ সাক্ষী উপস্থিত করে না, তাদেরকে আশিটি বেত্রাঘাত করবে এবং কখনও তাদের সাক্ষ্য কবুল করবে না। এরাই নাফরমান"।

২//
ইসলামের নৈতিক শিক্ষা মানুষের ভেতর থেকে এমন ভাবে পরিশুদ্ধ করে দেয় যে, তাঁদের মধ্যে মন্দ কাজ করিবার বাসনা অবশিষ্ট থাকেনা।

"আর ব্যভিচারের কাছেও যেয়ো না। নিশ্চয় এটা অশ্লীল কাজ এবং মন্দ পথ"। (বনী ইসরাঈল, আয়াত: ৩২)।

"মুমিন পুরুষদের বলুন, তারা যেন তাদের দৃষ্টিকে নত রাখে এবং যৌনাঙ্গের হেফাজত করে। নারীরা যেন নিজেদের দৃষ্টিকে নত রাখে ও নিজের গুপ্তাঙ্গ হেফাজত করে এবং নিজেদের সাজসজ্জা অন্যদের প্রদর্শন না করে"।(সূরা:নূর, আয়াত: ৩০, ৩১)। 

৩//
আবার ইসলামের শাস্তি বিধায়ক আইন মানুষকে বাহির থেকে এমন ভাবে পরিশুদ্ধ করে দেয় যে, নৈতিক শিক্ষা ত্রুটি যুক্ত থাকার কারণে মনের মধ্যে খারাপ বাসনা সৃষ্টি হইলে, এবং তাহা জোরপূর্বক কার্যে পরিণত করলে ইসলামী আইন তাঁকে প্রতিরোধ করে।

"ব্যভিচারিণী নারী ব্যভিচারী পুরুষ, তাদের প্রত্যেককে ১০০ করে বেত্রাঘাত কর। আল্লাহর বিধান বাস্তবায়নে তাদের প্রতি যেন তোমাদের মনে দয়ার উদ্রেক না হয়, যদি তোমরা আল্লাহর প্রতি ও পরকালের প্রতি বিশ্বাসী হয়ে থাক। মুসলমানদের একটি দল যেন তাদের শাস্তি প্রত্যক্ষ করে"।
(সুরা নুর, আয়াত ২)।

শুধু তাই নয়, মহান আল্লাহর কঠোর হুঁশিয়ারি, ‘যারা ঈমানদারদের মধ্যে অশ্লীলতার বিস্তারে উৎসাহী তাদের জন্য রয়েছে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি।
 (সূরা: নূর, আয়াত: ১৯)।

((পর্দা ও ইসলাম, পৃষ্ঠা ২১৯))

একবার শরীয়তের বিধান মতে ব্যভিচারের শাস্তি হলে, দেশের সমগ্র অধিবাসীদের মধ্যে এমন এক আতঙ্কের সৃষ্টি হবে যে, কয়েক বৎসর পর্যন্ত এই ধরনের অপরাধ করতে কারো সাহস হবে না। এই ধরনের অপরাধপ্রবণ লোকের মনে ইহা এক প্রকার মনস্তাত্ত্বিক অপারেশন। যাহা দ্বারা তাহার মনের পঙ্কিলতা আপনা-আপনি সংস্কার হয়ে যায়।

((পর্দা ও ইসলাম, পৃষ্ঠা ২১৭))

ইসলাম সমাজের প্রতিটি সমস্যার যৌক্তিক এবং কার্যকর সমাধানে প্রস্তুত। এসো আলোর পথে, এসো ইসলামের পথে।
--------------------------------- ------------------------------
লেখকঃ ইসলামিক আর্টিকেল লেখক ও অনলাইন এক্টিভিস্ট। 

Post a Comment

0 Comments