কুরআন ও হাদীসের আলোকে বিবাহের গুরুত্ব, ফজিলত, না করার পরিণতি এবং করণীয়-বর্জনীয়।
২য় পর্ব:
বিবাহের গুরুত্বঃ
বিবাহের মাধ্যমে শুধুমাত্র জৈবিক চাহিদাই পুরা হয় না; বরং অন্তরের প্রশান্তি মানসিক প্রশান্তিসহ সব রকমের প্রশান্তি অর্জিত হয় এতে সহজতরভাবে। এ প্রসঙ্গে মহান আল্লাহ তা'আলা বলেন,
وَمِنْ آيَاتِهِ أَنْ خَلَقَ لَكُم مِّنْ أَنفُسِكُمْ أَزْوَاجًا لِّتَسْكُنُوا إِلَيْهَا وَجَعَلَ بَيْنَكُم مَّوَدَّةً وَرَحْمَةً
‘তার এক নিদর্শন এই যে, তিনি তোমাদের জন্য তোমাদেরই মধ্য হতে স্ত্রী সৃষ্টি করেছেন, যাতে তোমরা তাদের কাছে গিয়ে শান্তি লাভ করো এবং তিনি তোমাদের পরস্পরের মধ্যে ভালোবাসা ও দয়া সৃষ্টি করেছেন। নিশ্চয়ই এর ভেতর নিদর্শন আছে সেসব লোকের জন্য, যারা চিন্তা-ভাবনা করে।’
সূরা রূমঃ ২১
আল্লাহ তা'আলা অন্যত্র বলেন
هُنَّ لِبَاسٌ لَّكُمْ وَأَنتُمْ لِبَاسٌ لَّهُنَّ
অর্থাৎ ‘তারা (স্ত্রীগণ) তোমাদের পোশাক এবং তোমরা (স্বামীগণ) তাদের পোশাকস্বরূপ`।
সূরা বাকারাঃ ১৮৭
আল্লাহ তা'আলা আরো বলেন
وَأَنكِحُوا الْأَيَامَى مِنكُمْ وَالصَّالِحِينَ مِنْ عِبَادِكُمْ وَإِمَائِكُمْ إِن يَكُونُوا فُقَرَاء يُغْنِهِمُ اللَّهُ مِن فَضْلِهِ وَاللَّهُ وَاسِعٌ عَلِيمٌ - وَلْيَسْتَعْفِفِ الَّذِينَ لَا يَجِدُونَ نِكَاحًا حَتَّى يُغْنِيَهُمْ اللَّهُ مِن فَضْلِهِ
অর্থাৎ তোমাদের মধ্যে যারা বিবাহহীন, তাদের বিবাহ সম্পাদন করে দাও এবং তোমাদের দাস ও দাসীদের মধ্যে যারা সৎকর্মপরায়ন, তাদেরও। তারা যদি নিঃস্ব হয়, তবে আল্লাহ নিজ অনুগ্রহে তাদেরকে সচ্ছল করে দেবেন। আল্লাহ প্রাচুর্যময়, সর্বজ্ঞ। যারা বিবাহে সামর্থ নয়, তারা যেন সংযম অবলম্বন করে যে পর্যন্ত না আল্লাহ নিজ অনুগ্রহে তাদেরকে অভাবমুক্ত করে দেন।
সূরা নূরঃ ৩২-৩৩
عَنْ عَبْدِ اللَّهِ، قَالَ قَالَ لَنَا رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " يَا مَعْشَرَ الشَّبَابِ مَنِ اسْتَطَاعَ مِنْكُمُ الْبَاءَةَ فَلْيَتَزَوَّجْ فَإِنَّهُ أَغَضُّ لِلْبَصَرِ وَأَحْصَنُ لِلْفَرْجِ وَمَنْ لَمْ يَسْتَطِعْ فَعَلَيْهِ بِالصَّوْمِ فَإِنَّهُ لَهُ وِجَاءٌ " .
‘আবদুল্লাহ (ইবনু মাস’ঊদ) (রাযিঃ) থেকে বর্ণিতঃ:
রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাদের বলেছেনঃ হে যুব সমাজ! তোমাদের মধ্যে যে বৈবাহিক জীবনের ব্যয়ভার বহনে সক্ষম সে যেন বিয়ে করে। কারণ তা দৃষ্টিকে নিচু করে দেয় এবং লজ্জাস্থানকে সংরক্ষণ করে। আর যে (ভরণপোষনে) সমর্থ নয়, তাকে অবশ্যই সওম পালন করতে হবে। কারণ তা তার যৌবন কামনা দমনকারী। (ই.ফা. ৩২৬৬, ই.সে. ৩২৬৩)
মুসলিম ৩২৯১
বিয়ে আমার সুন্নত। অতএব যে আমার সুন্নত পালন থেকে বিরত থাকবে, সে আমার অনুসারীদের অন্তর্ভুক্ত নয়।
حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ الْأَزْهَرِ حَدَّثَنَا آدَمُ حَدَّثَنَا عِيسَى بْنُ مَيْمُونٍ عَنْ الْقَاسِمِ عَنْ عَائِشَةَ قَالَتْ قَالَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم النِّكَاحُ مِنْ سُنَّتِي فَمَنْ لَمْ يَعْمَلْ بِسُنَّتِي فَلَيْسَ مِنِّي وَتَزَوَّجُوا فَإِنِّي مُكَاثِرٌ بِكُمْ الْأُمَمَ وَمَنْ كَانَ ذَا طَوْلٍ فَلْيَنْكِحْ وَمَنْ لَمْ يَجِدْ فَعَلَيْهِ بِالصِّيَامِ فَإِنَّ الصَّوْمَ لَهُ وِجَاءٌ
আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ:
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, বিবাহ করা আমার সুন্নাত। যে ব্যক্তি আমার সুন্নাত মুতাবিক কাজ করলো না সে আমার নয়। তোমরা বিবাহ কর, কেননা আমি তোমাদের সংখ্যাধিক্য নিয়ে অন্যান্য উম্মতের সামনে গর্ব করবো। অতএব যার সামর্থ্য আছে সে যেন বিবাহ করে এবং যার সামর্থ্য নেই সে যেন সিয়াম রাখে। কারন সাওম তার জন্য জৈবিক উত্তেজনা প্রশমনকারী।
সুনানে ইবনে মাজাহ ১৮৪৬
চলবে...।
--------------------------------------------------------------
লেখকঃ ইসলামিক আর্টিকেল লেখক ও অনলাইন এক্টিভিস্ট।
0 Comments