Recent Tube

মুর্তি ও ভাস্কর্য কি অনুমোদিত ইসলামে? ‏ ‏ ‏ ‏ ‏ ‏ ‏ ‏ ‏ ‏ ‏--শামীম ‎আজাদ ‎।


মুর্তি ও ভাস্কর্য কি অনুমোদিত ইসলামে?

أَتَبْنُونَ بِكُلِّ رِيعٍ آيَةً تَعْبَثُونَ' 

তোমরা কি প্রতিটি উচ্চ স্থানে স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ করিতেছ নিরর্থক?সূরা আশ শুআরাঃ ২৬:১২৮ 

وَعَنْ أَبِيْ هُرَيرَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ قَالَ: سَمِعْتُ رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم يَقُوْلُ : «قَالَ اللهُ تَعَالَى : وَمَنْ أَظْلَمُ مِمَّنْ ذَهَبَ يَخْلُقُ كَخَلْقِي ؟ فَلْيَخْلُقُوا ذَرَّةً أَوْ لِيَخْلُقُوا حَبَّةً، أَوْ لِيَخْلُقُوا شَعِيرَةً». متفق عليه 

আবূ হুরাইরা ‎(রাঃ) ‏থেকে বর্ণিতঃ:তিনি বলেন, ‏আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে বলতে শুনেছি যে, ‏আল্লাহ তা‘আলা বলেন, ‘‘তার চাইতে বড় জালেম কে আছে, ‏যে আমার সৃষ্টির অনুরূপ সৃষ্টি তৈরি করতে চায়? ‏সুতরাং তারা একটি ধূলিকণা বা পিঁপড়ে সৃষ্টি করুক অথবা একটি শস্যদানা সৃষ্টি করুক অথবা একটি যবদানা সৃষ্টি করুক।’’ ‏বুখারী ৫৯৫৩, ‏৭৫৫৯, ‏মুসলিম ২১১১, ‏আহমাদ ৭১২৬, ‏৭৪৬৯, ‏৮৮৩৪, ‏১০৪৩৮, ‏২৭৭৯৪, ‏রিয়াদুস সালেহিন ১৬৯২

إِذْ قَالَ لِأَبِيهِ وَقَوْمِهِ مَا هَذِهِ التَّمَاثِيلُ الَّتِي أَنتُمْ لَهَا عَاكِفُونَ ‏

যখন তিনি তাঁর পিতা ও তাঁর সম্প্রদায়কে বললেনঃ এই মূর্তিগুলো কী, ‏যাদের তোমরা পূজারী হয়ে বসে আছ।

‎قَالُوا وَجَدْنَا آبَاءنَا لَهَا عَابِدِينَ ‏ 

তারা বললঃ আমরা আমাদের বাপ-দাদাকে এদের পুজা করতে দেখেছি।   ‎
قَالَ لَقَدْ كُنتُمْ أَنتُمْ وَآبَاؤُكُمْ فِي ضَلَالٍ مُّبِينٍ ‏ 
তিনি বললেনঃ তোমরা প্রকাশ্য গোমরাহীতে আছ এবং তোমাদের বাপ-দাদারাও। সূরা আম্বিয়াঃ ৫২-৫৪ 

قَالَ نُوحٌ رَّبِّ إِنَّهُمْ عَصَوْنِي وَاتَّبَعُوا مَن لَّمْ يَزِدْهُ مَالُهُ وَوَلَدُهُ إِلَّا خَسَارًا ‏ 

নূহ বললঃ হে আমার পালনকর্তা, ‏আমার সম্প্রদায় আমাকে অমান্য করেছে আর অনুসরণ করছে এমন লোককে, ‏যার ধন-সম্পদ ও সন্তান-সন্ততি কেবল তার ক্ষতিই বৃদ্ধি করছে।  
 ‎وَمَكَرُوا مَكْرًا كُبَّارًا ‏

আর তারা ভয়ানক চক্রান্ত করছে।

 ‎وَقَالُوا لَا تَذَرُنَّ آلِهَتَكُمْ وَلَا تَذَرُنَّ وَدًّا وَلَا سُوَاعًا وَلَا يَغُوثَ وَيَعُوقَ وَنَسْرًا ‏

তারা বলছেঃ তোমরা তোমাদের উপাস্যদেরকে ত্যাগ করো না এবং ত্যাগ করো না ওয়াদ, ‏সূয়া, ‏ইয়াগুছ, ‏ইয়াউক ও নসরকে।   

‎وَقَدْ أَضَلُّوا كَثِيرًا وَلَا تَزِدِ الظَّالِمِينَ إِلَّا ضَلَالًا ‏

অথচ তারা অনেককে পথভ্রষ্ট করেছে। অতএব আপনি জালেমদের পথভ্রষ্টতাই বাড়িয়ে দিন।   ‎
مِمَّا خَطِيئَاتِهِمْ أُغْرِقُوا فَأُدْخِلُوا نَارًا فَلَمْ يَجِدُوا لَهُم مِّن دُونِ اللَّهِ أَنصَارًا ‏

তাদের গোনাহসমূহের দরুন তাদেরকে নিমজ্জিত করা হয়েছে, ‏অতঃপর দাখিল করা হয়েছে জাহান্নামে। অতঃপর তারা আল্লাহ তা’আলা ব্যতীত কাউকে সাহায্যকারী পায়নি।   ‎
وَقَالَ نُوحٌ رَّبِّ لَا تَذَرْ عَلَى الْأَرْضِ مِنَ الْكَافِرِينَ دَيَّارًا ‏

নূহ আরও বললঃ হে আমার পালনকর্তা, ‏আপনি পৃথিবীতে কোন কাফের গৃহবাসীকে রেহাই দিবেন না।  
 ‎إِنَّكَ إِن تَذَرْهُمْ يُضِلُّوا عِبَادَكَ وَلَا يَلِدُوا إِلَّا فَاجِرًا كَفَّارًا 

‏যদি আপনি তাদেরকে রেহাই দেন, ‏তবে তারা আপনার বান্দাদেরকে পথভ্রষ্ট করবে এবং জন্ম দিতে থাকবে কেবল পাপাচারী, ‏কাফের।  সূরা নূহঃ  ২১-২৭ ইবনে মাসঊদ ‎(রাঃ) ‏বলেন, ‏আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে বলতে শুনেছি যে,

 «إِنَّ أَشَدَّ النَّاسِ عَذَاباً يَومَ القِيَامَةِ المُصَوِّرُونَ»

.‘‘কিয়ামতের দিনে ‎(প্রাণীর) ‏চিত্র/ছবি/মূর্তি/ভাস্কর্য নির্মাতাদের সর্বাধিক কঠিন শাস্তি হবে।’’ ‏বুখারী ৫৯৫০, ‏মুসলিম ২১০৯, ‏নাসায়ী  ৫৩৬৪, ‏আহমাদ ৩৫৪৮, ‏৪০৪০, ‏রিয়াদুস সালেহিন ১৬৯১ইবনে উমার ‎(রাঃ) ‏হতে বর্ণিত, ‏রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,

 «إِنَّ الَّذِينَ يَصْنَعُونَ هَذِهِ الصُّوَرَ يُعَذَّبُونَ يَوْمَ القِيَامَةِ، يُقَالُ لَهُمْ : أَحْيُوا مَا خَلَقْتُمْ» .‘

‘যারা এ জাতীয় ‎(প্রাণীর) ‏ছবি, ‏মূর্তি বা ভাস্কর্য তৈরি করে, ‏কিয়ামতের দিন তাদেরকে ‎(কঠিন) ‏শাস্তি দেওয়া হবে। তাদেরকে বলা হবে, ‏তোমার যা বানিয়েছিলে তাতে প্রাণ প্রতিষ্ঠা কর।’’ ‏বুখারী ৫৯৫১, ‏৭৫৫৮, ‏মুসলিম ২১০৮, ‏নাসায়ী ৫৩৬১, ‏আহমাদ  ৪৪৬১, ‏৪৬৯৩, ‏৪৭৭৭, ‏৫১৪৬, ‏৫৭৩৩, ‏৬০৪৮, ‏৬২০৫, ‏৬২২৬, ‏৬২৯০, ‏রিয়াদুস সালেহিন ১৬৮৭আয়েশা ‎(রা) ‏বলেন, ‏নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সফর থেকে ফিরে এলেন। আমি আমার কক্ষের তাক বা জানালায় পাতলা কাপড়ের পর্দা টাঙ্গিয়ে ছিলাম; ‏তাতে ছিল প্রাণীর অনেকগুলি চিত্র। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন ওটা দেখলেন, ‏তখন তার চেহারা পরিবর্তন হয়ে গেল। তিনি বললেন, 

«يَا عَائِشَةُ، أَشَدُّ النَّاسِ عَذَاباً عِندَ اللهِ يَوْمَ القِيَامَةِ الَّذِينَ يُضَاهُونَ بِخَلْقِ اللهِ» قَالَتْ : فَقَطَعْنَاهُ.

‘‘হে আয়েশা! ‏কিয়ামতের দিন সেসব মানুষের সবচেয়ে বেশি শাস্তি হবে, ‏যারা আল্লাহর সৃষ্টির অনুরূপ ‎(প্রাণী) ‏তৈরি করবে।’’ ‏আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা বলেন, ‘সুতরাং আমরা তা ছিঁড়ে ফেললাম।’ ‏বুখারী ৫৯৫৪, ‏মুসলিম ২১০৭, ‏রিয়াদুস সালেহিন ১৬৮৮ইবনে আব্বাস ‎(রাঃ) ‏বলেন, ‏আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে বলতে শুনেছি যে,
 «كُلُّ مُصَوِّرٍ فِي النَّارِ يُجْعَلُ لَهُ بِكُلِّ صُورَةٍ صَوَّرَهَا نَفْسٌ فَيُعَذِِّبُهُ فِي جَهَنَّمَ» . قَالَ ابنُ عَبَّاسٍ : فَإِنْ كُنْتَ لاَ بُدَّ فَاعِلاً، فَاصْنعِ الشَّجَرَ وَمَا لاَ رُوحَ فِيهِ.

‘‘প্রত্যেক ছবি, ‏মূর্তি বা ভাস্কর্য নির্মাতা জাহান্নামে যাবে, ‏তার নির্মিত প্রতিটি ছবি বা মূর্তির পরিবর্তে একটি করে প্রাণ সৃষ্টি করা হবে, ‏যা তাকে জাহান্নামে শাস্তি দিতে থাকবে।’’ ‏ইবনে আব্বাস ‎(রাঃ) ‏বলেন, ‘যদি তুমি করতেই চাও, ‏তাহলে গাছপালা ও নিষ্প্রাণ বস্তুর ছবি বা ভাস্কর্য তৈরি করতে পার।’ ‏বুখারী ২২২৫, ‏৫৯৬৩, ‏৭০৪২, ‏মুসলিম ২১১০, ‏তিরমিযী হাঃ ১৭৫১, ‏২২৮৩, ‏নাসায়ী হাঃ ৫৩৫৮, ‏৫৩৫৯, ‏আবূ দাউদ ৫০২৪, ‏ইবনু মাজাহ ৩৯১৬, ‏আহমাদ ১৮৬৯, ‏২১৬৩, ‏২২১৪, ‏২৮০৬, ‏৩২৬২, ‏৩৩৭৩, ‏৩৩৮৪)

رَبِّ اِنَّهُنَّ اَضْلَلْنَ كَثِیْرًا مِّنَ النَّاسِ

 ۚ‘ইয়া রব, ‏এরা ‎(মূর্তি ও ভাস্কর্য) ‏অসংখ্য মানুষকে পথভ্রষ্ট করেছে!’ ‏সূরা ইবরাহীমঃ ৩৬

فَاجْتَنِبُوا الرِّجْسَ مِنَ الْاَوْثَانِ وَ اجْتَنِبُوْا قَوْلَ الزُّوْرِۙ‘

তোমরা পরিহার কর অপবিত্র বস্তু অর্থাৎ মূর্তিসমূহ এবং পরিহার কর মিথ্যাকথন।’সূরা হজ্জঃ ৩০
-----------------------------------------------------------------
লেখকঃ ইসলামিক আর্টিকেল লেখক ও অনলাইন এক্টিভিস্ট। 

Post a Comment

0 Comments