বিতি কিচ্ছা,
পর্ব-৫২;
মননীয় মন্ত্রী : পদক তোমার পদে-
জংল্যাণ্ডের মাননীয় পরদেশ মন্ত্রী বাদুড়ের দৃষ্টিতে বুয়েটে আবরারের মৃত্যু একটি স্বাভাবিক ঘটনা। এর আগে কেউ বলেছিলেন নিছক একটি দুর্ঘটনা। এইভাবে দায়ীত্বশীলদের অনেকেই একে একটি হত্যাকাণ্ড হিসাবে স্বীকার করতেই নারাজ। যদিও পুরো জংল্যাণ্ডবাসী এই ঘটনাকে একটি নৃসংস, নির্মম হত্যাকাণ্ড হিসাবে দেখে থাকেন। যার যেমন খুশি বলতে থাকলে কার কি আসে যায়? আসল কথা হল তা, যা জংল্যাণ্ডের পরদেশ মন্ত্রী মহোদয় বলেছেন, "দেশতো এখন যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্রের সাথে তাল রেখে এগিয়ে যাচ্ছে অগ্রপানে। যুক্তরাষ্ট্রে প্রায়ই আবরার হত্যার মত এরকম কত আবরার হত্যাঘটনা ঘটে থাকে"।আসলে মন্ত্রী মহোদয়ের উপর দিয়ে বাঁশ যায়নি যখন, তখন এটাকে পাত্তা দেয়ার প্রয়োজন খুব একটা থাকে না। যুক্তরাজ্যে এসব নিয়ে রাজপথ গরম কেউ করে না। অবশ্য যার গিয়েছে সেতো একটু মোছড়ে পড়তেই পারে। পুরো দেশময় উত্তোজনা ছড়িয়ে পানি ঘোলা করা নি:শ্চয়ই এটা বিরোধী মহলের এক প্রকার চক্রান্ত, নিছকই এক প্রকার ঋণানক অপকৌশল।
এর আগে এই মান্যবর মন্ত্রী বাদুড় সাহেব বলেছিলেন, "সৌদি আরবে একান্ন জন নারী শ্রমিক নিহতের ঘটনা তেমন বড় কোন সংখ্য নয়"। আসলে বৈদেশিক রেমিটেন্স আদায় বড় বিষয় এখানে নয়, আসল বিষয় সম্ভবত জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রন। তাই জংল্যাণ্ডবাসী চায় মননীয় পরদেশ মন্ত্রী মহোদয়কে শাড়ী জড়ায়ে নারী বানিয়ে সৌদি আরব প্রেরণ করত: লাশ করে আনলেই সংখ্যাটা ভাবার বিষয় হত। আসলে যে মা'র বুক খালি হয়েছে সে ছাড়া কে বুঝিবে সন্তান হারানোর ব্যাথা।
ঠিক একই ভাবে বছর ছ'য়েক আগে কোন এক হ্যবলা মন্ত্রী মহোদয় জাতীয় সংসদ অধিবেশন চলাকালীন কারো প্রশ্নের উত্তরে জংল্যাণ্ডবাসীকে আশ্বাস দিয়েছিলেন যে," সীমান্তে নাগরীক মৃত্যুর হার কমানো হবে"।তখন পুরো সীমানা জুড়ে প্রতিবেশী দেশের বাহীনি কর্তৃক প্রত্যহ গড়ে প্রায় বারো জন নগরীক মারা যেত। তখন চিন্তাশীল নাগরীকরা বলে ছিল যে," কত কম হইলে তুমি খুশী হইবা মাননীয় মন্ত্রী। জংল্যাণ্ডবাসী মনে করে সীমান্তে নাগরীক হত্যা পুরোদমে অনাকাঙ্ক্ষিত। অবশ্য মাননীয় বাদুড় মন্ত্রী ইদানীং বলেছেন," এ গুলো গরুচোর। সীমান্তে আসলে কোন নাগরীক হত্যা হয় নাই।
অকপটে বেফাস সত্য বলায় অভ্যস্ত কোন এক সাবেক মন্ত্রী বলেছিলেন সাড়ে তিন হাজার কুটি টাকার দুর্ণীতি কোন বড় বিষয় নয়। আসলে উনি যে শতভাগ সত্য বলেছিলেন, তা কিন্তু আজ অক্ষরে অক্ষরে প্রমান হয়ে গেছে। উনারা এখন শত বা হাজারে নেই, লক্ষ কুটি ডলারের দুর্ণীতিতে সিদ্ধহস্ত। দু'শ টি চারাগাছ রোপনে এগারো কুটি টাকা লোপাটতো মাত্র একটি। এভাবে জংল্যাডের প্রতিটি ইঞ্চি ভুমিতে দুর্ণীতি প্রতিষ্টাকল্পে তাবৎ দায়ীত্বশীলবর্গ হুমড়ি খেয়ে পড়ে আছেন পুরো রাজ্যে। এতএব জাতী হিসাবে দুর্ণীতিতে আন্তর্জাতিক পদক প্রাপ্তি এখন সময়ের ব্যাপার মাত্র। সুতরাং পুরে জংল্যাণ্ডবাসী মনে করে "মাননীয় মন্ত্রী, পদকতো তোমারই পদে শোভা পাওয়া উচিৎ "।
0 Comments