কবরবাসী ফুল, লতা, পাতা চায়না তারা চায় দোয়া, মাগফিরাত।
তোমরা যারা ফুল, লতা, পাতা দিয়ে শ্রদ্বা জানাচ্ছো তা ক্ষেত্র বিশেষে শিরীক! এটা বলার সাহস, হিম্মত কি আছে? নাই, কারণ, সিস্টেম এভাবে তৈরী করা হয়েছে যাতে নিজেরাও সে সিস্টেম অনুসরণ করতে বাধ্য।
এখানে কি আলেম, ওলামা, বক্তা, স্কলারদের ব্যার্থতা নাই? অবশ্য আছে। তারা সাধারণ পাব্লিক, রাষ্ট্রের ক্ষমতাবানদের বুঝাতে পারেনি বিজয়ের রীতিটা কেমন হলে ভাল, কেমন হওয়া দরকার। তাই আজ স্যাকুলারদের গড়া সিস্টেমে নিজদেরকে ভাসিয়ে দিতে হচ্ছে, তাদের সিস্টেম মেনে নিতে হচ্ছে! প্রচলিত সিস্টেমের বিপক্ষে বলবেন? রাষ্ট্রদ্রোহী মামলা হবে, স্বাধীনতা বিরোধী ট্যাগ খেতে হবে, ধর্মান্ধ, মৌলাবাদী অপবাদে জর্জরিত হতে হবে।
✍️ ধর্মে কি বিজয় উৎসব, বিজয়ের আনন্দ প্রকাশের কোন সিস্টেম নাই? অবশ্য আছে। তা কেমন? এর জবাব সুরা নসর থেকে নেয়া যায়। যেমন, এই সুরার প্রথম আয়াত এবং শেষ আয়াত লক্ষ্য করেন...
إِذَا جَاءَ نَصْرُ اللَّهِ وَالْفَتْحُ
যখন আল্লাহ্র সাহায্য ও বিজয় আসে
فَسَبِّحْ بِحَمْدِ رَبِّكَ وَاسْتَغْفِرْهُ إِنَّهُ كَانَ تَوَّابًا
তখন আপনি আপনার পালনকর্তার প্রশংসা সহ পবিত্রতা বর্ণনা করুন এবং তাঁর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করুন। নিশ্চয় তিনি ক্ষমাকারী (সর্বাধিক তওবা কবুলকারী) ।
এখানে বিজয় উৎসব, বিজয়ের আনন্দ, বিজয়ের খুশী প্রকাশের একটা থিম, ফর্মূলা আছে। এই ফর্মূলার আলোকে ফকীহ, স্কলার, আলেম,ওলামা গন বর্তমান অবস্থা, প্রেক্ষাপট বিবেচনা করে একটা শরঈয়ী পন্থা বের করতে পারেন। তা হয়নি, কেউ করেনি তাই আজ স্যাকুলারদের গড়া নিয়ম মেনে উৎসবে শামিল হতে হচ্ছে। এখানে আপনি পরাজিত, আপনার স্বকীয়তার বিসর্জন, আপনার দাওয়াতের ব্যার্থতা।
✍️ একজন সাধারণ নেতা যে বিপ্লব করার জন্য কাজ করে যায় নিজের জীবদ্দশাতেই যদি সেই মহান বিপ্লব সফলকাম হয়ে যায় তাহলে এ জন্য সে বিজয় উৎসব পালন করে এবং নিজেই নেতৃত্বের গর্ব করে বেড়ায়। এটাই নিয়ম।
কিন্তু সূরা নসরের ব্যাখ্যা বিশ্লেষণে খেয়াল করেন আল্লাহর নবীকে আমরা দেখি, তিনি তেইশ বছরের সংক্ষিপ্ত সময়ের মধ্যে পুরো একটি জাতির আকীদা বিশ্বাস, চিন্তাধারা, আচার - আচরণ, নৈতিক চরিত্র, সভ্যতা - সংস্কৃতি, সমাজনীতি, অর্থব্যবস্থা, রাজনীতি ও সামরিক যোগ্যতা সম্পূর্ণরূপে বদলে দিয়েছেন। মূর্খতা, অজ্ঞতা ও কুসংস্কারের মধ্যে আপাদমস্তক ডুবে থাকা জাতিকে উদ্ধার করে এমন যোগ্যতাসম্পন্ন করে গড়ে তুলেছেন যার ফলে তারা সারা দুনিয়া জয় করে ফেলেছিলেন এবং সমগ্র বিশ্বের জাতিসমূহের নেতৃত্ব পদে আসীন হয়েছিল। কিন্তু এতবড় মহৎ কাজ সম্পন্ন করার পরও তাঁকে উৎসব পালন করার নয় বরং আল্লাহর প্রশংসা ও গুণাবলী করার এবং তাঁর কাছে মাগফিরাতের দোয়া করার হুকুম দেয়া হয়। আর তিনি পূর্ণ দীনতার সাথে সেই হুকুম পালন করতে থাকেন।
মহান আল্লাহর এ ফরমান মুসলমানদের এ শিক্ষা দিয়ে আসছে যে, নিজের কোন ইবাদাত, আধ্যাত্মিক সাধনা ও দীনি খেদমতকে বড় জিনিস মনে না করে নিজের সমগ্র প্রাণশক্তি আল্লাহর পথে নিয়োজিত ও ব্যয় করার পরও আল্লাহর হক আদায় হয়নি বলে মনে করা উচিত। এভাবে যখনই তারা কোন বিজয় লাভে সমর্থ হবে তখনই এ বিজয়কে নিজেদের কোন কৃতিত্বের নয় বরং মহান আল্লাহর অনুগ্রহের ফল মনে করবে। এ জন্য গর্ব ও অহংকারে মত্ত না হয়ে নিজেদের রবের সামনে দীনতার সাথে মাথা নত করে হামদ, সানা ও তাসবীহ পড়তে এবং তাওবা ও ইসতিগফার করতে থাকবে।
✍️ দ্বীনের শিক্ষাটা কত চমটকার, কত মিনিংফুল, কত তাৎপর্যপূর্ণ। এখানে অর্থ অপচয়ের দরকার নাই, নিজদের অর্জনে অহংকার দাম্ভিকতার প্রকাশের সুযোগ নাই, হানাহানি, দলাদলির স্কোপ নাই যাস্ট বিজয়ের আনন্দে রবের শোকরিয়া করো আরো বিজয় দানের প্রার্থনা করো, নিজদের মানবীয় ভূল ত্রুটির জন্য ক্ষমা চাও, শক্তি কামনা করো। কী চমৎকার না? আমরা এরকম কোন পদ্বতি তৈরী করতে পারিনি বলেই স্যাকুলারদের তৈরী নিয়ম মেনে বিজয় উৎসব পালনে বাধ্য। আপনি এসবের বিরুদ্ধে বল্লেও দোষ চুপ থাকলেও দোষ! কারণ সিস্টেম সেটল।
0 Comments