Recent Tube

ভাস্কর্যের নামে কোটি কোটি টাকা ব্যয়ে মূর্তি নির্মাণ,– গরীবের ঘোড়া রোগ। ওয়াহিদুল ইসলাম।

ভাস্কর্যে নামে কোটি কোটি টাকা ব্যয়ে মূর্তি নির্মাণ।         
– গরীবের ঘোড়া রোগ।
★★★★★★★★★★★★

 কোটি কোটি টাকা ব্যয়ে দেশের বিভিন্ন জায়গায় ভাস্কর্যের নামে বিখ্যাত মৃত ব্যক্তিদের মূর্তি নির্মাণ করা হয়েছে। প্রয়োজনীয়তা, উপযোগিতা ও যৌক্তিকতাকে বিচারে না নিয়ে রাজনৈতিক বা আদর্শিক ভাবাদর্শে আবেগাপ্লুত হয়ে দায়িত্ব-কান্ডজ্ঞান হারিয়ে এই কাজে আমরা প্রতিযোগিতামূলক ভাবে আসক্ত হয়ে পড়েছি। অতীতের যে কোনো সময়ের তূলনায় এখন এই কাজের বিস্তার সাধনে আমরা মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলেছি। একটা বৃহত্তর মুসলিম দেশ হিসেবে বাংলাদেশে এমন স্থাপনা ইসলামী সংস্কৃতির সাথে সাংঘর্ষিক। উলামাদের মতে এটা জাতিকে শিরকের দিকে ঠেলে দিতে পারে এবং ইসলামী আক্বীদা অনুযায়ী শিরক হলো আল্লাহর কাছে অমার্জনীয় পাপ।

ধর্মের কথা না-ই বা টানি। যদি ইসলামী সংস্কৃতির সাথে এই ভাস্কর্য স্থাপনার সাংঘর্ষিকতা বা শিরকের ইস্যুটা বাদও দিই, তারপরও একটা গরীব দেশ যেখানে লাখো মানুষের পেটে ভাত নেই, শিক্ষা নেই, মাথা গোঁজার ঠাঁই নেই, রোগে-শোকে ক্লিষ্ট মৃত্যুর পথযাত্রী মানুষের চিকিৎসার সুব্যবস্থা নেই, সেখানে এমন স্থাপনার পেছনে এতো কোটি কোটি টাকা খরচের যৌক্তিকতা কি? এটা কি গরীবের ঘোড়া রোগ নয়? তাছাড়া ভাস্কর্য বলুন আর মূর্তি বলুন, একজন মৃত ব্যক্তির অবয়ব নির্মানে ঐ ব্যক্তির কি লাভ আর জাতির কি লাভ? একেকটা ভাস্কর্যের পেছনে যে বিশাল অংকের টাকা ব্যয় হয় সে টাকাটা তো এদেশের খেটে খাওয়া মেহনতি মানুষের কঠোর পরিশ্রম ও কষ্টার্জিত টাকা। দায়িত্বশীলতার পরিচয় দিলে এতো এতো টাকা দিয়ে কতো লাখ প্রান্তিক গরীব মানুষকে আর্থিক অনটন থেকে নিস্কৃতি দিয়ে তাদের মুখে হাসি ফোটানো সম্ভব তা কি উন্মত্ত ভাস্কর্যবাদীরা কখনো ভেবে দেখেছেন? বেঁচে থাকা মানুষগুলোর প্রতি দায়িত্বশীলতা, সহানুভূতিশীলতা, ভালোবাসা ও দরদ দেখিয়ে আপনারা বিখ্যাত মৃত ব্যক্তিদেরকে সম্মানিত করুন।  নাস্তিক্যবাদ, বস্তুবাদ বা ধর্মনিরপেক্ষতাবাদ আপনাদেরকে আখেরাতের কথা ভুলিয়ে দিতে পারে, ধর্মীয় অনুভূতি ও অনুশীলন থেকে দূরে রাখতে পারে। কিন্তু আপনাদের কর্মকান্ডের পেছনে কি ন্যূনতম পার্থিব ন্যায্যতা ও যৌক্তিকতাও থাকবে না? একটা গরীব দেশের ক্ষমতাসীনরা যখন স্বেচ্ছাচারিতা, গোঁয়ার্তুমি এবং অপব্যয় ও অপচয়ের নিরর্থক আতিশয্য ছাড়া দেশ ও জাতিকে আর কিছুই দিতে পারেনা তখন সবার জন্য এক কঠিন ও ভয়াবহ পরিণতি অপেক্ষা করে। যা কারো জন্য প্রয়োজনীয় নয় এবং সবার জন্য অকল্যাণকর তা সবার কাছে পরিত্যাজ্য হওয়া বাঞ্ছনীয়।

আল্লাহর অশেষ শুকরিয়া যে মুসলিম মিল্লাতের ঐক্যের প্লাটফরম হিসেবে আজ বাংলার মাটিতে হেফাজতে ইসলামের আবির্ভাব হয়েছে এবং এই প্লাটফরমের প্রতি দেশের সর্বস্তরের তৌহিদী জনতার পূর্ণ আস্থা ও সমর্থন রয়েছে। হেফাজতে ইসলাম এখন দেশের তৌহিদী জনতার ঐক্যের প্রতীক। সব ইসলামী ইস্যুতে না হলেও অন্ততঃ যেসব ইস্যুতে হেফাজতে ইসলামের সুস্পষ্ট বক্তব্য আছে সেসব ইস্যুতে ক্ষমতাসীনদের উচিৎ এদেশের তৌহিদী জনতার সেন্টিমেন্টের প্রতি সম্মান দেখানো। 

মনে রাখবেন – সারা দেশ ভাস্কর্যে ভরে ফেললে আমাদের মর্যাদা এক তিল পরিমাণও বাড়বে না। পক্ষান্তরে প্রতিটা সম্পদ ও সংগতির দায়িত্বশীল সদব্যবহার আমাদেরকে শির উঁচু করে দাঁড়াতে সাহায্য করবে এবং বিশ্ববাসীর কাছে আমাদেরকে একটি আত্মমর্যাদাশীল জাতি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করবে। আমাদের শুভ বুদ্ধির উদয় হউক।

[বিঃদ্রঃ একধরণের চেতনা ও আবেগকে পুঁজি বানিয়ে দূর্নীতি, লুটপাট ও পকেট ভর্তির এক জমজমাট ব্যবসা এই ভাস্কর্য প্রকল্প, দেখুন রিপোর্টঃ https://youtu.be/0k5_ZvXs6Tc]

Post a Comment

0 Comments