Recent Tube

সর্বশেষ ও সর্বশ্রেষ্ঠ নবী হয়রত মুহাম্মাদ (সাঃ) রাজনীতিকে রাঙিয়েছেন আদর্শিক রঙে, নিজে নেতৃত্ব দিয়েছেন সত্যের সমরে। ইবনে যুবাইর।

  

   সর্বশেষ ও সর্বশ্রেষ্ঠ নবী হয়রত মুহাম্মাদ (সাঃ) রাজনীতিকে রাঙিয়েছেন আদর্শিক রঙে, নিজে নেতৃত্ব দিয়েছেন সত্যের সমরে;

   ভারতীয় ইতিহাসে ১৯২৬ সাল মুসলমানদের জন্য এক দুর্যোগপূর্ণ সময়। এ বছরের ডিসেম্বরের শেষ দিকে শুদ্ধি আন্দোলনের প্রতিষ্ঠাতা স্বামী শ্রদ্ধানন্দ আততায়ীদের হাতে মারা যান। দুর্ভাগ্যজনকভাবে একজন মুসলিম এ কাজের জন্য অভিযুক্ত হয়ে গ্রেফতার হয়। চারিদিকে  ইসলাম বিদ্বেষীরা ইসলামের শ্রাদ্ধ করার জন্য উঠে পড়ে লাগে। ইসলাম একটি সন্ত্রাসী ধর্ম, কোরান সন্ত্রাসবাদের জন্মদাতা, যতদিন কোরআন থাকবে ততদিন বিশ্বে শান্তি আসতে পারে না ইত্যাদি ইত্যাদি অপবাদে ইসলামকে বিদ্ধ করা হলো। প্রচার করা হয় শ্রদ্ধানন্দকে ইসলামে শত্রু সাব্যস্ত করে বেহেস্তের আশায় মুসলমানরা এ হত্যাকান্ড চালিয়েছে। অর্থাৎ বিধর্মীদের হত্যা করে মুসলমানরা বেহেস্তে যাওয়ার জন্য সন্ত্রাসী কার্যক্রম শুরু করেছে বলে চারিদিকে হৈচৈ শুরু হয়।
    • অবস্থা এতটা নাজুক আকার ধারন করে যে, অহিংস রাজনীতির প্রবক্তা এবং হিন্দু ধর্মের সবচেয়ে পরিপক্ক বুদ্ধির অধিকারী হিসেবে তৎকালীন সমাজে পরিচিত গান্ধীজীও মন্তব্য করে বসেন, "ইসলাম এমন পরিবেশে জন্মলাভ করেছে যে, তার চুড়ান্ত শক্তির উৎস আগেও তরবারী ছিল, এখনও তরবারীই আছে". মোট কথা ইসলাম ও সন্ত্রাসবাদকে একাকার করে ঘোলাপানিতে মাছ শিকারে নেমে পড়ে ইসলামবিরোধীরা।
এমন এক পরিবেশে ২৪ বছরের যুবক মওদূদী দিল্লী জামে মসজিদে জুমুয়ার নামাজে ইমাম সাহেবের আবেগময় খুৎবা শুনে অস্থির হয়ে পড়েন। ইমাম সাহেব বলেন, "হায় খোদা, ভারতবর্ষে আজ যদি এমন কোন আল্লাহর বান্দা ইসলামের জিহাদ নীতির উপর প্রামাণ্য গ্রন্থ রচনা করতো, ইসলাম বিরোধী অপপ্রচারের দাতভাঙ্গা জবাব দিয়ে ইসলামের প্রকৃত রূপ সবার সামনে তুলে ধরতো তবে কতই না ভালো হতো।" যুবকটি নামাজ শেষে মনস্থির করে ফেললো, বুকভরে নির্মল বাতাস টেনে নিয়ে সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেললো যে আল্লাহ এই নির্মল বাতাস দিয়ে আমার অন্তরকে ভরিয়ে দেন, আমি কেন তার মহিমা ঘোষণার জন্য তার পক্ষে কলম ধরবো না। ২৪ বছরের এ টগবগে যুবক লিখে ফেললেন "আল জিহাদ ফিল ইসলাম" নামের এক অসাধারন পুস্তক যা ইসলামে জিহাদের প্রকৃত পরিচয় অমুসলিমদের কাছে স্পষ্ট করে তোলে। বইটি এতোটা তথ্যপূর্ণ ও গুরুত্বপূর্ণ ছিল যে আল্লামা ইকবাল তার এ বইটি পাঠ করে অত্যন্ত আবেগাপ্লুত হয়ে ভূয়সি প্রশংসা করেন, "জিহাদ, যুদ্ধ ও সন্ধি সম্পর্কে ইসলামী আইন-কানুন সম্বলিত এ গ্রন্থটি অসাধারণ ও চমৎকার। প্রত্যেক জ্ঞানী ও সুধীকে গ্রন্থটি পাঠ করার জন্য অনুরোধ করছি"।
যে সময়ে মুসলমানরা বিধর্মীদের অপপ্রচারে ছিল দিশেহারা, সেসময়ে ২৪ বছরের এ যুবক অসীম সাহসে এ গ্রন্থ রচনা করে ইসলামের পক্ষে যে ভূমিকা রেখেছিল তা আজো অবিস্মরণীয়।

  রাজনৈতিক ময়দানে পদচারণা;
যে মুসলিম জাতি দোর্দান্ত প্রতাপের সাথে রাজনীতির ঘোড়া দাবড়িয়ে বেরিয়েছে চতুর্দিকে, যাদের নেতা সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ মহামানব, সর্বশেষ ও সর্বশ্রেষ্ঠ নবী হয়রত মুহাম্মাদ (সাঃ) রাজনীতিকে রাঙিয়েছেন আদর্শিক রঙে, নিজে নেতৃত্ব দিয়েছেন সত্যের সমরে, ইসলামের সূর্য যখন পশ্চিমাকাশে ঢলে পড়তে শুরু করে তখন তাঁরই অনুসারীরা "ইসলামে রাজনীতি হারাম" বলে ফতোয়া দিয়ে নিজেদের পিঠ বাঁচাতে মসজিদের কোনে খিল এটে ইসলামকে অবরুদ্ধ করে ফেলে।
 মাওলানা মওদূদী (রহঃ) উপলব্দি করেন যে মুসলমানদের মাথা উচু করে চলতে হলে কুরআনকে গেলাফের কারাগার থেকে মুক্ত করে সমাজের প্রতিটি ক্ষেত্রে স্বাধীনভাবে চলার সুযোগ দিতে হবে। কুরআন ঝাড়ফুঁক বা তাবিজ হিসেবে ভুত তাড়ানোর জন্য কিংবা রোগব্যাধি সাড়াতে পৃথিবীতে নাজিল করা হয় নি বরং কোরআনের মূল কাজ হলো সমাজের রন্ধে রন্ধে যে অসুখ দানা বেঁধেছে তার মূলোচ্ছেদ করা। আর এ জন্য কুরআনকে শেলফ থেকে মুক্ত করে সমাজে ছড়িয়ে দেয়ার।
  মুসলিম জাতীর জন্য জ্ঞানী,বিজ্ঞ,প্রজ্ঞাবান আলিমদের দরকার,যারা কুরআন হাদিসের বযক্তব্য এবং বৈজ্ঞানিক যুক্তি দিয়ে কাফির,মুশরিক- নাস্তিকদেরকে দাঁতভাঙ্গা জবাব দেবে,ইসলামের মূল আবেদনকে বিশ্ব দরবারে তুলে ধরবে,ইসলাম শান্তির ধর্ম,সন্ত্রাসের ধর্ম নয় বরং অমুসলিম এবং তাদের সৃষ্ট কথিত  মুসলমানদের দিয়ে বিশ্বে সন্ত্রাস ছড়িয়ে দিয়ে ইসলামের নামে সন্ত্রাস করে ইসলাম ফোবিয়া সৃষ্টি করে মুসলিম জনপদ ধ্বংস করছে,সম্পদ লুট করে নিয়ে যাচ্ছে-এই বার্তা পৌঁছে দেবে।
----------------------------------------------------------------
লেখকঃ ইসলামিক আর্টিকেল লেখক ও অনলাইন এক্টিভিস্ট। 

Post a Comment

0 Comments