Recent Tube

রমযান মাসে করণীয় ও বর্জনীয়; শামীম আজাদ।

               


                    সাওম/রোযা।
                              ৬ষ্ঠ পর্ব,

রমযান মাসে করণীয় ও বর্জনীয়;
---------------------------------------------------

   রমযান মাসকে পূর্ণভাবে আল্লাহর রহমত, বরকত ও নাজাত প্রাপ্তির জন্য আমাদের কিছু করণীয় আছে এবং সেই সাথে কিছু বর্জনীয় কার্যাবলী রয়েছে যা পরিত্যাগ করার মাধ্যমে আমরা রমযান মাসকে কুরআন ও সুন্নাহ অনুযায়ী পালন করতে পারব। রমযান আমাদেরকে সংযমী হওয়ার শিক্ষা দেয়।
     
      শুধুমাত্র পানাহার ও স্ত্রী সহবাস থেকে দিনের বেলায় বিরত থাকাই সিয়াম সাধনার মূল উদ্দেশ্য নয়। প্রকৃতপক্ষে রমজান মাসে সার্বক্ষণিক নিজের কু-প্রবৃত্তির অনুসরণ থেকে বিরত থাকার মাধ্যমে প্রকৃত তাকওয়া অর্জন করা সম্ভব। আমাদের ভুলে গেলে হবে না যে, সূর্যোদয় থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত সময়টুকু রোযার অন্তুর্ভূক্ত নয়; বরং দিন ও রাত্রি উভয় সময়কে সঠিকভাবে ব্যবহারের মাধ্যমে সিয়াম সাধনার প্রকৃত আত্মতৃপ্তি লাভ করা সম্ভব।
أُحِلَّ لَكُمْ لَيْلَةَ ٱلصِّيَامِ ٱلرَّفَثُ إِلَىٰ نِسَآئِكُمْ ۚ هُنَّ لِبَاسٌ لَّكُمْ وَأَنتُمْ لِبَاسٌ لَّهُنَّ ۗ عَلِمَ ٱللَّهُ أَنَّكُمْ كُنتُمْ تَخْتَانُونَ أَنفُسَكُمْ فَتَابَ عَلَيْكُمْ وَعَفَا عَنكُمْ ۖ فَٱلْـَٰٔنَ بَٰشِرُوهُنَّ وَٱبْتَغُوا۟ مَا كَتَبَ ٱللَّهُ لَكُمْ ۚ وَكُلُوا۟ وَٱشْرَبُوا۟ حَتَّىٰ يَتَبَيَّنَ لَكُمُ ٱلْخَيْطُ ٱلْأَبْيَضُ مِنَ ٱلْخَيْطِ ٱلْأَسْوَدِ مِنَ ٱلْفَجْرِ ۖ ثُمَّ أَتِمُّوا۟ ٱلصِّيَامَ إِلَى ٱلَّيْلِ ۚ وَلَا تُبَٰشِرُوهُنَّ وَأَنتُمْ عَٰكِفُونَ فِى ٱلْمَسَٰجِدِ ۗ تِلْكَ حُدُودُ ٱللَّهِ فَلَا تَقْرَبُوهَا ۗ كَذَٰلِكَ يُبَيِّنُ ٱللَّهُ ءَايَٰتِهِۦ لِلنَّاسِ لَعَلَّهُمْ يَتَّقُونَ
 সিয়ামের রাতে তোমাদের জন্য তোমাদের স্ত্রীদের নিকট গমন হালাল করা হয়েছে। তারা তোমাদের জন্য পরিচ্ছদ এবং তোমরা তাদের জন্য পরিচ্ছদ। আল্লাহ জেনেছেন যে, তোমরা নিজদের সাথে খিয়ানত করছিলে। অতঃপর তিনি তোমাদের তাওবা কবূল করেছেন এবং তোমাদেরকে ক্ষমা করেছেন। অতএব, এখন তোমরা তাদের সাথে মিলিত হও এবং আল্লাহ তোমাদের জন্য যা লিখে দিয়েছেন, তা অনুসন্ধান কর। আর আহার কর ও পান কর যতক্ষণ না ফজরের সাদা রেখা কাল রেখা থেকে স্পষ্ট হয়। অতঃপর রাত পর্যন্ত সিয়াম পূর্ণ কর। আর তোমরা মাসজিদে ইতিকাফরত অবস্থায় স্ত্রীদের সাথে মিলিত হয়ো না। এটা আল্লাহর সীমারেখা, সুতরাং তোমরা তার নিকটবর্তী হয়ো না। এভাবেই আল্লাহ তাঁর আয়াতসমূহ মানুষের জন্য স্পষ্ট করেন যাতে তারা তাকওয়া অবলম্বন করে। 
সূরা বাকারাঃ ১৮৭

     সিয়াম সাধানার মাধ্যমে একজন ব্যক্তি হালাল খাদ্য ও পানীয়কে আল্লাহর নির্দেশের কারণে বর্জন করে প্রবৃত্তির অনুসরণ থেকে বিরত থাকার মাধ্যমে তাকওয়া অর্জন করে। সেই সাথে তারাবীহ, তাহাজ্জুদ, দান-সদকাহ, কুরআন তিলাওয়াতসহ অন্যান্য ইবাদত করার মাধ্যমে তার আত্মার পরিশুদ্ধতা অর্জিত হয়। পবিত্র রমযান মাসে হাদিসে উল্লেখিত কতিপয় আমল দ্বারা আমরা আল্লাহর নৈকট্য অর্জন করতে পারি :

   আল্লাহর সন্তুষ্টি ও রহমত লাভের উদ্দেশ্যে সিয়াম সাধনা করা

وَحَدَّثَنِي حَرْمَلَةُ بْنُ يَحْيَى، أَخْبَرَنَا ابْنُ وَهْبٍ، أَخْبَرَنِي يُونُسُ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، عَنِ ابْنِ أَبِي أَنَسٍ، أَنَّ أَبَاهُ، حَدَّثَهُ أَنَّهُ، سَمِعَ أَبَا هُرَيْرَةَ، - رضى الله عنه - يَقُولُ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ‏ "‏ إِذَا كَانَ رَمَضَانُ فُتِّحَتْ أَبْوَابُ الرَّحْمَةِ وَغُلِّقَتْ أَبْوَابُ جَهَنَّمَ وَسُلْسِلَتِ الشَّيَاطِينُ ‏"‏ ‏.

   আবূ হুরায়রাহ্‌ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ:

     তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ রমাযান মাস উপস্থিত হলে রহমাতের দরজাসমূহ উন্মুক্ত করে দেয়া হয়, জাহান্নামের দরজাসমূহ বন্ধ করে দেয়া হয় এবং শাইত্বনগুলোকে শিকলে আবদ্ধ করা হয়। (ই. ফা. ২৩৬৩, ই. সে. ২৩৬৪)
মুসলিম ২৩৮৬

      রমযান মাস রহমত, বরকত, মাগফিরাত, জাহান্নাম থেকে মুক্তি ও জান্নাত লাভের মাস। তাই এ মাস পেয়েও যে ব্যক্তি স্বীয় গুনাহ মাফ করাতে পারল না তার জন্য স্বয়ং জিবরাঈল আ. বদদুআ করেছেন এবং নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রাহমাতুল্লিল আলামীন হয়েও আমীন বলে সমর্থন জানিয়েছেন।  হাদীস শরীফে এসেছে-
أَنّ النّبِيّ صَلّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلّمَ رَقَى الْمِنْبَرَ فَقَالَ: آمِينَ، آمِينَ، آمِينَ، قِيلَ لَهُ: يَا رَسُولَ اللهِ، مَا كُنْتَ تَصْنَعُ هَذَا؟ فَقَالَ: قَالَ لِي جِبْرِيلُ: رَغِمَ أَنْفُ عَبْدٍ أَدْرَكَ أَبَوَيْهِ أَوْ أَحَدَهُمَا لَمْ يُدْخِلْهُ الْجَنّةَ، قُلْتُ: آمِينَ. ثُمّ قَالَ: رَغِمَ أَنْفُ عَبْدٍ دَخَلَ عَلَيْهِ رَمَضَانُ لَمْ يُغْفَرْ لَهُ، فَقُلْتُ: آمِينَ. ثُمّ قَالَ: رَغِمَ أَنْفُ امْرِئٍ ذُكِرْتَ عِنْدَهُ فَلَمْ يُصَلِّ عَلَيْكَ، فَقُلْتُ: آمِينَ.
   নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মিম্বরে উঠে আমীন, আমীন, আমীন বললেন। তাঁকে বলা হল, হে রাসূল! আপনি তো এরূপ করতেন না। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, জিবরাঈল আমাকে বললেন, ঐ ব্যক্তি ধ্বংস হোক, যে পিতা-মাতা উভয়কে অথবা একজনকে পেয়েও (তাদের খেদমত করে) জান্নাতে প্রবেশ করতে পারল না। তখন আমি বললাম, আমীন। অতপর তিনি বললেন, ওই ব্যক্তি ধ্বংস হোক, যে রমযান পেয়েও নিজের গুনাহ মাফ করাতে পারল না। আমি বললাম, আমীন। জিবরাঈল আবার বললেন, ওই ব্যক্তি ধ্বংস হোক, যার নিকট আমার নাম আলোচিত হল অথচ সে আমার উপর দরূদ পড়ল না। আমি বললাম, আমীন। -আলআদাবুল মুফরাদ, হাদীস ৬৪৬; সহীহ ইবনে হিব্বান, হাদীস ৯০৮

      রমযান মাসে যেহেতু বেহেশতের ও রহমতের দরজাসমূহ খুলে দেয়া হয় সেহেতু রোজা রেখে আমরা আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য তাঁর রহমতের আশা করব।

    মুখ ও জিহ্বাকে সংযত রাখা
পানাহার ও স্ত্রী সহবাস থেকে বিরত থাকার পাশাপাশি নিজের মুখ ও জিহ্বাকে সংযত রাখতে হবে। মিথ্যা, অশ্লীল কথাবাতা, গালিগালাজ, গীবত, পরনিন্দা, অভিশাপ দেয়া ও চোগলখোরীসহ অন্যান্য অশ্লীল কাজ থেকে বিরত থাকতে হবে। 

হাদিসে এসেছে
وَعَنْ أَبِىْ هُرَيْرَةَ قَالَ: قَالَ رَسُوْلُ اللّٰهِ ﷺ: «مَنْ لَمْ يَدَعْ قَوْلَ الزُّورِ وَالْعَمَلَ بِه فَلَيْسَ لِلّٰهِ حَاجَةٌ فِى اَنْ يَدَعَ طَعَامَه وَشَرَابَه». رَوَاهُ البُخَارِىُّ

আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ:

     তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে ব্যক্তি (সিয়ামরত অবস্থায়) মিথ্যা কথা বলা ও এর উপর ‘আমাল করা ছেড়ে না দেয়, তার পানাহার ত্যাগ করায় আল্লাহর কোন প্রয়োজন নেই।  
    বুখারী ১৯০৩, আবূ দাঊদ ২৩৬২, তিরমিযী ৭০৭, ইবনু মাজাহ ১৬৮৯, আহমাদ ১০৫৬২, ইবনু খুযায়মাহ্ ১৯৯৫, ইবনু হিববান ৩৪৮০, সহীহ আত্ তারগীব ১০৭৯, সহীহ আল জামি‘ ৬৫৩৯, মিশকাতুল মাসাবিহ ১৯৯৯

      নিয়মিত তারাবীহর নামাজ আদায় করা
আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য তারাবীহ পড়তে হবে। কেননা, যে ব্যক্তি রমযানে তারাবীহ নামাজ পড়বে তার অতীতের সগীরা গুনাহসমূহ ক্ষমা করে দেয়া হবে। হাদিসে এসেছে-
কিন্তু তিনি এ বিষয়ে খুব তাকীদ করতেন না। বরং এরূপ বলতেন, 

عن أَبِي هُرَيرَةَ رضي الله عنه أَنَّ رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم صلى الله عليه وسلم، قَالَ: «مَنْ قَامَ رَمَضَانَ إِيمَاناً وَاحْتِسَاباً غُفِرَ لَهُ مَا تَقَدَّمَ مِنْ ذَنْبِهِ». متفقٌ عَلَيْهِ

  আবূ হুরাইরা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ:

       রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, “যে ব্যক্তি ঈমানের সাথে ও নেকীর আশায় রমযান মাসে কিয়াম করবে (তারাবীহ পড়বে), তার পূর্বেকার পাপসমূহ মাফ ক’রে দেওয়া হবে ।”
বুখারী ৩৫, ৩৭, ৩৮, ১৯০১, ২০০৮, ২০০৯, ২০১৪, মুসলিম ৭৬০, তিরমিযী ৬৮৩, নাসায়ী ২১৯৮ থেকে ২২০৭, ৫০২৭, আবূ দাঊদ ৩১৭১, ১৩৭২, আহমাদ ৭১৩০, ৭২৩৮, ৭৭২৯, ৭৮২১, ৮৭৭৫, ৯১৮২, ৯৭৬৭, ৯৯৩১, ১০১৫৯, ১০৪৬২, ২৭৫৮৩, ২৭৬৭৫, দারেমী ১৭৭৬, রিয়াদুস সলেহিন ১১৯৫

  কুরআন তিলাওয়াত করা;

وَكَانَ جِبْرِيلُ عَلَيْهِ السّلاَمُ يَلْقَاهُ كُلّ لَيْلَةٍ فِي رَمَضَانَ، حَتّى يَنْسَلِخَ، يَعْرِضُ عَلَيْهِ النّبِيّ صَلّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلّمَ القُرْآنَ.
  হযরত জিবরীল আ. রমযানের শেষ পর্যন্ত প্রত্যেক রাতে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহিওয়াসাল্লাম-এর সাথে সাক্ষাৎ করতেন এবং রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁকে কুরআন মাজীদ শোনাতেন। 
বুখারী ১৯০২

    নফল ইবাদতের মধ্যে সর্বোত্তম ইবাদত হলো কুরআন তিলাওয়াত করা। যেমন হযরত নুমান বিন বাশির রা. হতে বর্ণিত নবী করীম সা. ইরশাদ করেন
আমার উম্মতের সবচেয়ে উত্তম ইবাদত কুরআন তিলাওয়াত করা। 
বায়হাকী, শুআবুল ঈমান ১৮৬৯, মুসনাদুস শিহাব : ১১৯৫

  অন্য হাদিসে এসেছে, 

    যে ব্যক্তি রমযান মাসে আল্লাহর নৈকট্য লাভের উদ্দেশ্যে একটি নফল কাজ করবে সে ঐ ব্যক্তির সমান হলো যে, অন্য মাসে একটি ফরজ আদায় করল। 
মিশকাত :১৮৬৮

    সুতরাং রমযান মাসে কুরআন তিলাওয়াতের মাধ্যমে আমরা অধিকতর সওয়াবের অধিকারী হবো।

   বেশি করে দান-সদকাহ করা
মহান আল্লাহ তা’আলা ইরশাদ করেন-

مَّثَلُ الَّذِينَ يُنفِقُونَ أَمْوَالَهُمْ فِي سَبِيلِ اللّهِ كَمَثَلِ حَبَّةٍ أَنبَتَتْ سَبْعَ سَنَابِلَ فِي كُلِّ سُنبُلَةٍ مِّئَةُ حَبَّةٍ وَاللّهُ يُضَاعِفُ لِمَن يَشَاء وَاللّهُ وَاسِعٌ عَلِيمٌ 
    যারা আল্লাহর রাস্তায় স্বীয় ধন-সম্পদ ব্যয় করে, তাদের উদাহরণ একটি বীজের মতো, যা থেকে সাতটি শীষ জন্মায়। প্রত্যেকটি শীষে একশ করে দানা থাকে। আর আল্লাহ যার জন্য ইচ্ছা করেন (সওয়াবে) কয়েক গুণ বৃদ্ধি করে দেন। আল্লাহ অতি প্রাচুর্যময় (এবং) সর্বজ্ঞ। 
সূরা বাকারাঃ ২৬১

    দান করা : দান-সদকা সর্বাবস্থাতেই উৎকৃষ্ট আমল, কিন্তু রমযানে এর গুরুত্ব অনেক বেড়ে যায়। হাদীস শরীফে এসেছে-

كَانَ النّبِيّ صَلّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلّمَ أَجْوَدَ النّاسِ بِالخَيْرِ، وَكَانَ أَجْوَدُ مَا يَكُونُ فِي رَمَضَانَ.
   রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দুনিয়ার সকল মানুষ অপেক্ষা অধিক দানশীল ছিলেন। রমযান মাসে তাঁর দানের হস্ত আরো প্রসারিত হত।
বুখারী, হাদীস ১৯০২

   নিজে ইফতার করার পাশাপাশি রোযাদারদের ইফতার করানো
হাদিসে বর্ণিত হয়েছে,

عَن زَيدِ بنِ خَالِدٍ الجُهَنِيِّ رضي الله عنه، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم، قَالَ: «مَنْ فَطَّرَ صَائِماً، كَانَ لَهُ مِثْلُ أَجْرِهِ، غَيْرَ أنَّهُ لاَ يُنْقَصُ مِنْ أَجْرِ الصَّائِمِ شَيْءٌ». رواه الترمذي، وقال: حديث حسن صحيح

    যায়েদ ইবনে খালেদ জুহানী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ:

     নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, “যে ব্যক্তি কোন রোযাদারকে ইফতার করাবে, সে (রোযাদারের) সমান নেকীর অধিকারী হবে। আর তাতে রোযাদারের নেকীর কিছুই কমবে না।”
তিরমিযী ৮০৭, ইবনু মাজাহ ১৪৪৬, আহমাদ ২১১৬৮, দারেমী ১৭০২, রিয়াদুস সলেহিন ১২৭৩

 মিসওয়াক করা : হাদিস শরীফে বর্ণিত আছে,

وَعَنْ عَامِرِ بْنِ رَبِيعَةَ قَالَ: رَأَيْتُ النَّبِىَّ ﷺ مَا لَا أُحْصِىْ يَتَسَوَّكُ وَهُوَ صَائِمٌ. رَوَاهُ التِّرْمِذِىُّ وَأَبُو دَاوُدَ
আমির ইবনু রবী‘আহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ:

     তিনি বলেন, আমি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে সওম অবস্থায় এতবার মিসওয়াক করতে দেখেছি যে, তা আমি হিসাব করতে পারি না। 
আবূ দাঊদ ২৩৬২, তিরমিযী ৭২৫, আহমাদ ১৫৬৭৪, দারাকুত্বনী ২৩৬৮, ইরওয়া ৬৮, সুনানুল কুবরা লিল বায়হাক্বী ৮৩২৫, মিশকাতুল মাসাবিহ ২০০৯

শীঘ্রই ইফতারী করা
হাদিস শরীফে এসেছে -

عَن سَهلِ بنِ سَعدٍ رضي الله عنه: أَنَّ رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم صلى الله عليه وسلم، قَالَ: «لاَ يَزَالُ النَّاسُ بِخَيْرٍ مَا عَجَّلُوا الفِطْرَ». متفقٌ عَلَيْهِ
সাহ্‌ল ইবনে সা'দ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ:

    রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, “যতদিন পর্যন্ত মুসলমানেরা শীঘ্র ইফতার করবে ততদিন তারা কল্যাণের মধ্যে থাকবে।”
বুখারী ১৯৫৭, ১০৯৮, তিরমিযী ৬৯৯, ইবনু মাজাহ ১৬৯৭, আহমাদ ২২২৯৮, ২২৩২১, ২২৩৩৯, ২২৩৫২, ২২৩৬৩, মুওয়াত্তা মালিক ৬৩৮, দারেমী ১৬৯৯, রিয়াদুস সালেহিন ১২৪১

   অন্য হাদিসে আছে, 
وَعَنْ أَبي هُريرَةَ رضي الله عنهقالَ: قالَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم صلى الله عليه وسلم، قال اللهُ عَزَّ وَجَلَّ: { أَحَبُّ عِبَادِي إِليَّ أَعْجَلُهُمْ فِطْراً } رواه الترمذي وقالَ: حَديثٌ حس.. 

  আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ:

       রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন: সর্বশক্তিমান মহান আল্লাহ তা‘আলা বলেন, আমার বান্দাদের মধ্যে যারা দ্রুত ইফতার করে তারাই আমার নিকট বেশি পছন্দনীয়।
রিয়াদুস সলেহিন ১২৪৩

      ইফতারের পূর্বে ও ইফতারের সময় দোয়া করা
হযরত আনাস রা. হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূল সা. যখন ইফতার করতেন নিম্নের দোয়াটি পড়তেন
হে আল্লাহ! আমি তোমার জন্য রোযা রেখেছি এবং তোমার রিযিক দিয়ে ইফতার করছি। তুমি আমার এই রোযাকে কবুল কর। নিশ্চয় তুমি সর্বজ্ঞ, সর্বশ্রোতা। তাবারানী : ৮৪৫

    বেশি করে ইসতেগফার ও দোয়া করা
এই রমজান মাসের একটি গুরুত্বপূর্ণ রাত্রি হলো লাইলাতুল কদর। হাদিস মোতাবেক রমযানের শেষের দশদিন বেজোড় রাতে লাইলাতুল কদর অন্বেষণ করার কথা বলা হয়েছে। এই জন্য যে মহান আল্লাহ দেখতে চান লাইলাতুল কদরের বরকত ও ফজিলত লাভের উদ্দেশ্যে তার কোন বান্দা বেশি ইবাদত করে।
রাসূল সা. এই শেষ দশকে আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করতেন তা নিম্নোক্ত হাদিস দ্বারা প্রমাণিত। 

وَعَنْ عَائِشَةَ رَضِيَ اللّٰهُ عَنْهَا قَالَتْ: قُلْتُ: يَا رَسُوْلَ اللّٰهِ أَرَأَيْتَ إِنْ عَلِمْتُ أَىُّ لَيْلَةُ الْقَدْرِ مَا أَقُولُ فِيهَا؟ قَالَ: «قُوْلِىْ: اَللّٰهُمَّ إِنَّكَ عَفُوٌّ تُحِبُّ الْعَفْوَ فَاعَفُ عَنِّىْ». رَوَاهُ أَحْمَدُ وَابْنُ مَاجَهْ وَالتِّرْمِذِىُّ وَصَحَّحَه

আয়িশাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ:

     তিনি বলেন, আমি বললাম, হে আল্লাহর রসূল! আমাকে বলে দিন, যদি আমি ‘কদর রাত’ পাই, এতে আমি কী দু‘আ করব? তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেনঃ তুমি বলবে, ‘‘আল্ল-হুম্মা ইন্নাকা ‘আফুব্বুন, তুহিব্বুল আফ্ওয়া‘, ফা‘ফু ‘আন্নী’’ (অর্থাৎ- হে আল্লাহ! তুমিই ক্ষমাকারী। আর ক্ষমা করাকে তুমি পছন্দ করো। অতএব তুমি আমাকে মাফ করে দাও।) 
তিরমিযী ৩৫১৩, ইবনু মাজাহ ৩৮৫০, আহমাদ ২৫৩৮৪, মুসতাদারাক লিল হাকিম ১৯৪২, সহীহাহ্ ৩৩৩৭, সহীহ আল জামি‘ ৩৩৯১, মিশকাতুল মাসাবিহ ২০৯১

খেজুর অথবা পানি দিয়ে ইফতার করা

وَعَنْ سَلْمَانَ بْنِ عَامِرٍ قَالَ: قَالَ رَسُوْلُ اللّٰهِ ﷺ: «إِذَا أَفْطَرَ أَحَدُكُمْ فَلْيُفْطِرْ عَلٰى تَمْرٍ فَإِنَّه بَرَكَةٌ فَإِنْ لَمْ يَجِدْ فَلْيُفْطِرْ عَلٰى مَاءٍ فَإِنَّه طَهُورٌ». رَوَاهُ أَحْمَدُ وَالتِّرْمِذِىُّ وَأَبُو دَاوُدَ وَابْنُ مَاجَهْ وَالدَّارِمِىُّ. وَلَمْ يَذْكُرْ: «فَإِنَّه بَرَكَةٌ» غَيْرُ التِّرْمِذِىِّ

সালমান ইবনু ‘আমির থেকে বর্ণিতঃ:

      তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তোমাদের কেউ যখন ইফতার করবে সে যেন খেজুর দিয়ে (শুরু) করে। কারণ খেজুর বারাকাতময়। যদি খেজুর না পায়, তাহলে যেন পানি দিয়ে ইফতার তরে। কেননা পানি পবিত্র জিনিস। 
   আবূ দাঊদ ২৩৫৫, তিরমিযী ৬৫৪, ইবনু মাজাহ ১৬৯৯, ইবনু আবী শায়বাহ্ ৯৭৯৭, আহমাদ ১৬২২৫, দারিমী ১৭৪৩, মু‘জামুল কাবীর লিত্ব ত্ববারানী ৬১৯৪, সুনানুস্ সুগরা লিল বায়হাক্বী ১৩৮৯, শু‘আবূল ঈমান ৩৬১৫, ইবনু হিববান ৩৫১৫, মিশকাতুল মাসাবিহ ১৯৯০

সেহরী খেয়ে রোযা রাখা;
সেহেরী খাওয়া সুন্নত। সেহেরী খেয়ে রোজা রাখার মধ্যে বরকত নিহিত রয়েছে। হাদিস শরীফে এসেছে-
عَن أَنَسٍ رضي الله عنه، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللهِ ﷺ :«تَسَحَّرُوا ؛ فَإِنَّ فِي السُّحُورِ بَرَكَةً». متفقٌ عَلَيْهِ

 আনাস ইবনে মালেক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ:

    তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, “তোমরা সেহরী খাও। কেননা, সেহরীতে বরকত নিহিত আছে।”
বুখারী ১৯২৩, মুসলিম ১০৯৫, তিরমিযী ৭০৮, নাসায়ী ২১৪৬, ইবনু মাজাহ ১৬৯২, আহমাদ ১১৫৩৯, ১২৮৩৩, ১২৯৭৭, ১৩১৩৯, ১৩২১৩, ১৩৫৮১, দারেমী ১৬৯৬, রিয়াদুস সলেহিন ১২৩৭

  মসজিদে ইতিকাফ করা;

    রমজানের শেষের দশদিনে ইতিকাফ করা সুন্নত। পুরুষরা মসজিদে এবং স্ত্রীলোকেরা আপন ঘরে একটি স্থান ঘিরে নিয়ে তথায় ইতিকাফ করবে। হাদিসে এসেছে-

وَعَنْهَا: أَنَّ النَّبِيَّ - صلى الله عليه وسلم - كَانَ يَعْتَكِفُ العَشْرَ الأَوَاخِرَ مِنْ رَمَضَانَ، حَتَّى تَوَفَّاهُ اللَّهُ، ثُمَّ اعْتَكَفَ أَزْوَاجُهُ مِنْ بَعْدِهِ. مُتَّفَقٌ عَلَيْهِ

আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ:

   নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) রমযানের শেষ দশক ইতিকাফ করতেন। তার ওফাত পর্যন্ত এই নিয়মই ছিল। এরপর তার সহধর্মিণীগণও (সে দিনগুলোতে) ইতিকাফ করতেন । 
বুখারী ২০২৬, মুসলিম ১১৭২, তিরমিয়ী ৭৯০, আবূ দাউদ ২৪৬২, আহমাদ ২৩৬১, ২৩৭১৩, মুওয়াত্ত মালেক ৬৯৯ 

   বেশি বেশি করে নফল নামাজ আদায় করা
হাদিস মোতাবেক রমযান মাসে একটি নফল ইবাদত করলে একটি ফরজ ইবাদতের সমান মর্যাদা পাওয়া যায়। হাদিসে এসেছে, 

مَنْ تَقَرّبَ فِيهِ بِخَصْلَةٍ مِنَ الْخَيْرِ كَانَ كَمَنْ أَدّى فَرِيضَةً فِيمَا سِوَاهُ، وَمَنْ أَدّى فَرِيضَةً فِيهِ كَانَ كَمَنْ أَدّى سَبْعِينَ فَرِيضَةً فِيمَا سِوَاهُ.
   রমযান মাসে যে ব্যক্তি একটি নফল আদায় করল সে যেন অন্য মাসে একটি ফরয আদায় করল। আর যে এ মাসে একটি ফরয আদায় করল সে যেন অন্য মাসে সত্তরটি ফরয আদায় করল। -শুআবুল ঈমান, বায়হাকী ৩/৩০৫-৩০৬

عَنْ أَسْمَاءَ بْنِ الْحَكَمِ الْفَزَارِيِّ، قَالَ سَمِعْتُ عَلِيًّا، يَقُولُ إِنِّي كُنْتُ رَجُلاً إِذَا سَمِعْتُ مِنْ، رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم حَدِيثًا نَفَعَنِي اللَّهُ مِنْهُ بِمَا شَاءَ أَنْ يَنْفَعَنِي بِهِ وَإِذَا حَدَّثَنِي رَجُلٌ مِنْ أَصْحَابِهِ اسْتَحْلَفْتُهُ فَإِذَا حَلَفَ لِي صَدَّقْتُهُ وَإِنَّهُ حَدَّثَنِي أَبُو بَكْرٍ وَصَدَقَ أَبُو بَكْرٍ قَالَ سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ ‏"‏ مَا مِنْ رَجُلٍ يُذْنِبُ ذَنْبًا ثُمَّ يَقُومُ فَيَتَطَهَّرُ ثُمَّ يُصَلِّي ثُمَّ يَسْتَغْفِرُ اللَّهَ إِلاَّ غَفَرَ اللَّهُ لَهُ ‏"‏ ‏.‏ ثُمَّ قَرَأَ هَذِهِ الآيَةَ ‏:‏ ‏(‏وَالَّذِينَ إِذَا فَعَلُوا فَاحِشَةً أَوْ ظَلَمُوا أَنْفُسَهُمْ ذَكَرُوا اللَّهَ فَاسْتَغْفَرُوا لِذُنُوبِهِمْ وَمَنْ يَغْفِرُ الذُّنُوبَ إِلاَّ اللَّهُ وَلَمْ يُصِرُّوا عَلَى مَا فَعَلُوا وَهُمْ يَعْلَمُونَ ‏)‏ ‏.‏ قَالَ وَفِي الْبَابِ عَنِ ابْنِ مَسْعُودٍ وَأَبِي الدَّرْدَاءِ وَأَنَسٍ وَأَبِي أُمَامَةَ وَمُعَاذٍ وَوَاثِلَةَ وَأَبِي الْيَسَرِ وَاسْمُهُ كَعْبُ بْنُ عَمْرٍو ‏.‏ قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ عَلِيٍّ حَدِيثٌ حَسَنٌ لاَ نَعْرِفُهُ إِلاَّ مِنْ هَذَا الْوَجْهِ مِنْ حَدِيثِ عُثْمَانَ بْنِ الْمُغِيرَةِ ‏.‏ وَرَوَى عَنْهُ شُعْبَةُ وَغَيْرُ وَاحِدٍ فَرَفَعُوهُ مِثْلَ حَدِيثِ أَبِي عَوَانَةَ ‏.‏ وَرَوَاهُ سُفْيَانُ الثَّوْرِيُّ وَمِسْعَرٌ فَأَوْقَفَاهُ وَلَمْ يَرْفَعَاهُ إِلَى النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم وَقَدْ رُوِيَ عَنْ مِسْعَرٍ هَذَا الْحَدِيثُ مَرْفُوعًا أَيْضًا ‏.‏ وَلاَ نَعْرِفُ لأَسْمَاءَ بْنِ الْحَكَمِ حَدِيثًا مَرْفُوعًا إِلاَّ هَذَا ‏.‏

 আসমা ইবনু হাকাম আল-ফাযারী (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ:

    তিনি বলেন, আমি ‘আলী (রাঃ)-কে বলতে শুনেছিঃ আমি এমন এক ব্যক্তি ছিলাম যখন আমি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর কোন হাদীস শুনতাম, আল্লাহ তা’আলা যতটুকু চাইতেন আমি তা হতে ফায়দা উঠাতাম। যখন তাঁর কোন সাহাবী আমার নিকট হাদীস বলতেন আমি তাঁকে শপথ করাতাম। সে যখন শপথ করে বলত আমি তাকে বিশ্বাস করতাম। আবূ বকর (রাঃ) আমাকেও হাদীস বলেছেন, আর তিনি সত্যিই বলেছেন। তিনি বলেছেন, আমি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বলতে শুনেছিঃ যে কোন ব্যক্তি যদি গুনাহ করে ফেলে, তারপর উঠে পবিত্রতা অর্জন করে কিছু নামায আদায় করে আল্লাহ তা’আলার নিকট তাওবা করে আল্লাহ তা’আলা তার গুনাহ মাফ করে দিবেন। তারপর তিনি (রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)) এ আয়াত পাঠ করলেনঃ “যাদের অবস্থা এরূপ যে, তাদের দ্বারা যদি কোন অশ্লীল কাজ সংঘটিত হয় অথবা তারা কোন গুনাহ করে নিজেদের উপর যুলুম করে বসে, তবে সংগে সংগেই তারা তারা আল্লাহ তা’আলার কথা মনে করে এবং তাদের গুনাহের ক্ষমা প্রার্থনা করে। আল্লাহ তা’আলা ছাড়া গুনাহ মাফ করতে পারে এমন কে আছে? এ লোকেরা জেনে বুঝে নিজেদের অন্যায় কাজ বারবার করে না”-(সূরাঃ আলে ইমরান-১৩৫)।

হাসান, ইবনু মাজাহ-(১৩৯৫)।
জামে' আত-তিরমিজি ৪০৬

    বেশি করে আল্লাহর জিকির  ও তাসবীহ-তাহলীল করা
  রমজান মাসে বেশি করে তাসবীহ পাঠ করে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের চেষ্ঠা করতে হবে। মহান আল্লাহ তা’আলা ইরশাদ করেন ,

وَالَّذِينَ إِذَا فَعَلُواْ فَاحِشَةً أَوْ ظَلَمُواْ أَنْفُسَهُمْ ذَكَرُواْ اللّهَ فَاسْتَغْفَرُواْ لِذُنُوبِهِمْ وَمَن يَغْفِرُ الذُّنُوبَ إِلاَّ اللّهُ وَلَمْ يُصِرُّواْ عَلَى مَا فَعَلُواْ وَهُمْ يَعْلَمُونَ
   আর যারা কোন অশ্লীল কাজ করে অথবা নিজেদের প্রতি যুলুম করে আল্লাহকে স্মরণ করে, অতঃপর তাদের গুনাহের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করে। আর আল্লাহ ছাড়া কে গুনাহ ক্ষমা করবে ? আর তারা যা করেছে, জেনে শুনে তা তারা বার বার করে না। 
সূরা আল-ইমরানঃ ১৩৫

    রমযান মাসে লাইলাতুল কদর অন্বেষণ করা
রমজান মাসের শেষের দশদিনের বেজোড় রাত্রিতে লাইলাতুল কদরের জন্য বেশি করে আল্লাহর ইবাদত করতে হবে এবং সারা বিশ্ববাসীর শান্তি, ক্ষমা ও স্থিতিশীলতার জন্য দোয়া করতে হবে। মহান আল্লাহ বলেন,
لَيْلَةُ الْقَدْرِ خَيْرٌ مِّنْ أَلْفِ شَهْرٍ
লাইলাতুল কদর এক হাজার মাসের চেয়ে উত্তম। 
সূরা কদরঃ ৩

রমযানের পবিত্রতা রক্ষা করা :
রমযান মাসে এমন কিছু করা যাবে না যা শরীয়তপরিপন্থী। যেমন রোযাদারহীন ব্যক্তি রোজাদারদের সামনে পানাহার করা। সেই সাথে অশ্লীল ও অনৈতিক কার্যাবলী থেকে বিরত থাকতে হবে। মহান আল্লাহ বলেন-

وَلاَ تَقْرَبُواْ الْفَوَاحِشَ مَا ظَهَرَ مِنْهَا وَمَا بَطَنَ
আর অশ্লীল কাজের নিকটবর্তী হবে না তা থেকে যা প্রকাশ পায় এবং যা গোপন থাকে। 
সূরা আন-আমঃ ১৫১

ইনশাআল্লাহ চলবে.............!
-------------------------------------------------------------
লেখকঃ ইসলামিক আর্টিকেল লেখক ও অনলাইন এক্টিভিস্ট। 

Post a Comment

0 Comments