Recent Tube

মরুভূমির হাতছানি, --৩৬, ---মুহিউল ইসলাম মাহিম চৌধুরী।



 
            
              মরুভূমির হাতছানি... 
                                পর্ব--৩৬;

 হজ্জ ভ্রমণ'১৭;
--------------------------------- 

জাবালে নূরের চূড়ায় ''গারে হেরা''র পাশে দাঁড়িয়ে ''আল্লাহু আকবার'' বলেছি----

রিয়াদ থেকে আমাদের বড় ভাই আমাদেরকে দেখতে এসেছেন । আপাততঃ আমরা চার ভাইবোন মিলে আবস্থান করছি অাল্লাহর ঘরের সান্নিধ্যে, পবিত্র মক্কা আল মুকাররামায় ।। সবাই মিলে সিদ্ধান্ত নিলাম সেই ''গারে হেরা'' দেখতে যাবো যেখানে ধ্যানমগ্ন থেকে প্রিয় নবী (স.) অশান্ত পৃথিবীর মানুষগুলির জন্য মুক্তির পথ খুঁজেছিলেন । অতঃপর ফিরে এসেছিলেন এক আলোকিত চেরাগ হাতে নিয়ে । যা সারা দুনিয়াবাসীকে পথ দেখাবে ক্বিয়ামাত পর্যন্ত (৬১০ খৃঃ)।

  সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আমরা ভোরেই রওয়ানা করি কাংখিত গন্তব্যের উদ্দেশ্যে ।

    আমাদের টেক্সি মসজীদে হারাম সংলগ্ন আজইয়াদ রোড থেকে অল্প সময়ের মধ্যেই পৌছে যায় জাবালে নূর এ ।

    সমতল ভূমি থেকে পাহাড়ের ওপরের দিকে প্রায় ২০০ থেকে ২৫০ ফুট পথ গাড়িতে যাওয়া যায়। সেখান থেকে ৮৯০ ফুট উচ্চতায় হেরা গুহা অবস্থিত। হেরা গুহায় যেতে আরও প্রায় ১০০ ফুট রাস্তা পাড়ি দিতে হয়।

   গাড়ী থেকে নেমে আমরা সমতল থেকে উঁচুতে উঠতে থাকি । আমার মেঝবোন সিদ্ধান্ত নিলেন আমার সাথে তিনি ও একদম উপরে উঠবেনই । আমি তাতে কিছুটা বিব্রতবোধ করলেও তাঁর সাফ কথা আমাদের মা হযরত খাদীজা (রাঃ) কাফেরদের চোখ এড়িয়ে প্রতিদিন নবীজি (সঃ) কে খাবার পৌছে দেওয়ার জন্য এ পাহাড়ের চূড়ায় উঠতে পারলে আমরা কেন পারবোনা?  আমরাতো আমাদের উম্মত জননীদের উত্তরসূরী । যাক আমি আর বাঁধ সাধতে পারলামনা । শুরু হল আমাদের হিল ট্রেকিং । উপরে উঠতে উঠতে হাঁপিয়ে উঠেছি তবুও পথ ফুরোয়না । আকাবাঁকা ঝুকিপূর্ন পাথুরে পাহাড় অতিক্রম করা খুব সহজ নয় ।  নীচের দিকে তাকালে মনে হত যেন মাথা ঘুরে এখনই পড়ে যাব । তারপরও কোরআনে কারীমের কয়েকটি সূরা তেলাওয়াত করতে করতে উঠতে থাকলাম ।
   এক পা ফেলে আরেক পা ফেলতে দম নিতে লাগলাম ।  শ্বাসপ্রশ্বাস ভারী হয়ে উঠলো তবুও অপ্রতিরোধ্য মনোবল আমাদেরকে এগিয়ে নিচ্ছে আল্লাহর ওহীর নূরের জ্যোতি পড়েছে যেই পবিত্র জায়গায়।।  সবসময় মনের অলিন্দে সদা জাগ্রত রাখলাম এ কথাটি যে, আমিতো সেদিকেই ধাবমান হচ্ছি যে জায়গা থেকে কোরআনে হাকিম অবতীর্ণ হতে শুরু করেছিল । 
   অতঃপর মহান আল্লাহর সাহায্য আমাদেরকে তাঁর প্রিয় হাবীবের নির্জনবাসের জায়গা পর্যন্ত পৌছে দিল  ।

     জাবালে নূরের একদম চূড়ায় উঠে ইচ্ছে হল শরীরের সবটুকু শক্তি একত্রিত করে আজান দেই কিন্তু অনেকে সেখানে নামাজ পড়ছে তাতে বিঘ্ন ঘটতে পারে মনে করে আল্লাহু আকবার,আল্লাহু আকবার আল্লাহু  আকবার বলেছি । দু'রাকাত নামাজ অাদায় করে মুনাজাত করলাম।
যদিও এখানে নামাজ আদায়ের বাড়তি কোন ফজিলত নেই ।  

     অতঃপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করলাম সেদিকে যেই জায়গাটায় বসে এক এবং অদ্বিতীয় স্বত্বার ধ্যানে মশগুল থাকতেন আমাদের প্রিয়নবী (স)।। জাবালেে নূরের চূড়া থেকে খানিকটা নিচের দিকে তাকালেই দেখা যায় সেই জান্নাতি গুহা যেই গুহার প্রবেশ পথে লিখা রয়েছে '' ইক্বরা বিছমি রাববিকাল্লাজি খালাক্ক,খালাক্বাল ইনসানা মিন আলাক্ব ।
-----------------------------------------------------------
লেখকঃ ইসলামিক আর্টিকেল,প্রবন্ধ  লেখক ও অনলাইন এক্টিভিস্ট। 

Post a Comment

0 Comments