Recent Tube

মরুভূমির হাতছানি..- ৩৫; ---মুহিউল ইসলাম মাহিম চৌধুরী






  
      মরুভূমির হাতছানি...
                     পর্ব-৩৫;

--------------------♦--------------------


হজ্জ ভ্র ণ '১৭;

    গারে সওরে বিশ্বনবী (সঃ) -
কাফেরদের অত্যাচারের মাত্রা দিন দিন বাড়তে থাকলো । তাদের জাতীয় সংসদ '' দারুন নদওয়ায় '' সিদ্ধান্ত হল মুহাম্মদকে হত্যা করতে হবে। মহান আল্লাহ আদেশ করলেন নবী অাপনি হিজরত করুন । মদীনায় চলে যান ।  
হিজরতের সময় য়খন চলে আসলো তখন নিজ বিছানায় হযরত আলী ( রাঃ) কে শুইয়ে রেখে আবু বকর সিদ্দিক (রাঃ) কে সাথে করে কাফেরদের চোখ এড়াতে উল্টোপথে মিসফালার ভেতর দিয়ে ছুটলেন মদীনার দিকে । পাথুরে পাহাড়ের পথ বেঁয়ে চলতে চলতে আর এগুতে পারেননা । এখানে এসে সওর পর্বতের গুহায় ঢুকে পড়লেন।

      স্থানটি মসজিদে হারাম থেকে প্রায় ৪ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত।
সাওর পর্বতের উচ্চতা ৪৫৮ মিটার। পর্বতটির মোট আয়তন ১০ বর্গমিটার।

      কাফেররা খুঁজে খুঁজে যখন গুহার একদম কিনারে এসে গেল তখন হযরত আবু বকর (রাঃ) বললেন হুজুর আমরা মনেে হয় ধরা পড়ে গেলাম। তারা যদি তাকায় আমাদেরকে দেখতে পাবে । নবীজি ( স.) বললেন, ''ও আমার সাথী ভয় পেয়োনা!  নিশ্চয় আল্লাহ আমাদের সাথে আছেন''। 

   সাওর পাহাড়ের গুহায় আত্মগোপন প্রসঙ্গে হাদিসে ইরশাদ হয়েছে, হযরত আনাস (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, হযরত আবু বকর সিদ্দিক (রা.) আমার কাছে হাদিস বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেন, আমি নবী করিম (সা.)-এর সঙ্গে গুহায় ছিলাম, আমি মুশরিকদের পদচারণা প্রত্যক্ষ করছিলাম, আমি বললাম, ইয়া রাসূলুল্লাহ (সা.) তাদের কেউ যদি পা উঠায় তাহলেই আমাদের দেখে ফেলবে, তিনি বললেন, আমাদের দু’জন সম্পকে তোমার কী ধারণা? আমাদের তৃতীয় জন হলেন- আল্লাহ। অর্থাৎ তিনি আমাদের সাহায্যকারী। ’ –সহিহ বোখারি ও মুসলিন।

   আল কোরআন এভাবে কোড করেছে নবী (স) এর কথা -

   ‘'যদি তোমরা তাকে (নবী মুহাম্মদকে) সাহায্য না করো, তবে মনে রেখো, তাকে কাফেররা (মক্কা থেকে) বহিষ্কার করেছিল।

      তিনি ছিলেন দু’জনের একজন, যখন তারা উভয়ে গুহার মধ্যে ছিলেন, তখন তিনি আপন সঙ্গীকে বললেন, চিন্তা করো না, আল্লাহ আমাদের সঙ্গে আছেন। ’' -সূরা তাওবা: ৪০

    আবু বকর সিদ্দীক ( রা) এর কোলের উপরে মাথা রেখে নবীজি ঘুমিয়ে গেলেন। আবু বকর 
(রা)  লক্ষ করলেন গুহার চতূর্দিকে অনেকগুলো ছিদ্র। কোন ছিদ্র দিয়ে সর্প এসে দংশন করে নাকি!  এই ভয়তে নিজের গাঁয়ের চাদর ছিড়ে চিড়ে গর্ত বন্ধ করতে লাগলেন। কয়েকটা গর্ত বন্ধ করা গেলনা তাই পা দিয়ে চেপে ধরলেন। একটি গর্ত দিয়ে সাপ এসে সিদ্দীকে অাকবরের পায়ে দংশন করেছে। তাঁর চোখ দিয়ে দরদর করে পানি পড়ছে। নবীজির ঘুম ভেংগে গেল। তাকিয়ে দেখলেন আবু বকর ( রাঃ)  এর চোখে পানি। জানতে চাইলেন আবু বকর তোমার চোখে পানি কেন?  বাড়ির কথা মনে পড়ে গেল নাকি! আবু বকর 
(রাঃ) জবাব দিলেন যেই দিন থেকে ঈমান এনেছি ঐদিন থেকে আমার মাতাপিতা,আমার ছেলেমেয়ে এমনকি আমার পরিবার পরিজনের চাইতেও নবী (স) আমি আপনাকে বেশী ভালবাসি । আমি কাঁদছি সাপে আমাকে দংশন করেছে।  সাথে সাথে নবীজি নিজের পবিত্র মুখের মুবারক থুথু আবু বকরর( রা)  এর দংশিত জায়গায়য় লাগিয়ে দিলেন। বিষক্রিয়া বন্ধ হয়ে গেল। নবী (স) বললেন আগে কেন আমাকে বলোনাই তাহলে তুমি কষ্ট পেতেনা। আবু বকর (রা) বললেন,এটাতো সাপে কাটার যন্ত্রনা। আমি অবু বকরের কলেজাটা ছিড়ে যদি টুকরো হয়ে যেত তবুও আল্লাহর নবীর আরামের ভেতরে বিঘ্ন ঘটাতে পারতামনা.....

      বিশ্নবীর (স) স্মৃতিকে আজও অক্ষয় করে রেখেছে জাবালে সওর এর গুহা । সারা দুনিয়ার হাজিরা এখানে জিয়াত করতে 
আসেন ।

      আজও ডানা ঝাপটিয়ে উড়ছে অসংখ্য কবুতরের দল।। আমার জানতে খুব ইচ্ছে হলো এরা সেই কবুতরের বংশধর কিনা। যে কবুতর গুহার মুখে মাকড়শার জালে ডিম পেড়ে প্রিয় নবীকে (স) সুরক্ষা দেওয়ার চেষ্টা করেছিল? ।
-----------------------------------------------------------
লেখকঃ ইসলামিক আর্টিকেল লেখক কলামিস্ট ও অনলাইন এক্টিভিস্ট। 

Post a Comment

1 Comments