Recent Tube

আফগানিস্তান থেকে মার্কিন সেনাদের প্রত্যাহার এই উপমহাদেশের রাজনৈতিক হিসাব নিকাশ পালটে দেবে ??? ৷ ইবনে যুবাইর।









 
আফগানিস্তান থেকে মার্কিন সেনাদের প্রত্যাহার এই উপমহাদেশের রাজনৈতিক হিসাব নিকাশ পালটে দেবে ???


    আফগানিস্তান থেকে মার্কিন সেনাদের প্রত্যাহার এই উপমহাদেশের রাজনৈতিক হিসাব নিকাশ পালটে দেবে বলেই মনে হচ্ছে। চারিদিকে সেই আলামত স্পষ্ট হয়ে উঠছে। সবচেয়ে বেশী সম্ভাবনা আছে যে এই পরিবর্তনটা সুচিত হবে কাশ্মীরকে ঘিরে।

    কীভাবে সেই আলাপটা করছি। আমি কয়েকটা তথ্য, কয়েকটা সাম্প্রতিক ডেভলপমেন্ট এবং ভু রাজনৈতিক বিষয় একসাথে মিলিয়ে আপনাদের সামনে পুরো বিষয়টা উপস্থাপন করছি। মিলিয়ে দেখে নিন। 

     আমেরিকা আফগানিস্তান থেকে সেনা প্রত্যাহারের ঘোষণা দেয়ার কিছুদিনের মধ্যেই মোদি কাশ্মীরের সব রাজনৈতিক নেতাদের ডেকে বলেছে যে কাশ্মীরে নির্বাচন দেবে এবং পুর্ণ রাজ্যের মর্যাদা দেবে। শুধু তাই না, বলেছে যথাযথ সময়ে কাশ্মীরের আগের অবস্থা ফিরিয়ে দেয়া হবে।

    ওরে আমার ওরে ওরে। কত ভালো মানুষ মোদি। শুধু তাইনা গো রক্ষক আর মুসলমান পেটানো আর এস এস হিন্দু মুসলমান ভাতৃত্বের কথা বলতেছে। ওরে আমার খোদা। কী শুনতেছি এইসব। 

    কাশ্মীরের বিশেষ স্ট্যাটাস কেড়ে নিয়ে লক্ষ লক্ষ সেনা পাঠিয়ে বছরের পর বছর কার্ফু দিয়ে, ইন্টারনেট কানেকশন বন্ধ করে দিয়ে কাশ্মীরকে পৃথিবীর সবচেয়ে বড় জেলখানা বানানোর হিম্মত দেখানো মোদি-অমিত শাহের বাঘ কীভাবে বিড়াল হয়ে গেলো? শুধু বিড়াল হওয়াই নয় লেজ গুটিয়ে কেন মিউ মিউ শুরু করলো? তা বুঝতে হলে নিচের ম্যাপটা দেখুন। আফগানিস্তান থেকে আজাদ কাশ্মীর হয়ে ভারত অধিকৃত কাশ্মীর একই সীমান্তের পাশাপাশি লাগোয়া জনপদ। আফগানিস্তান আর কাশ্মীর তার পোরাস বর্ডার দিয়ে এক অভিন্ন জনপদ হয়ে ওঠার সম্ভাবনা আছে। অভিন্ন জনপদ মানেই অভিন্ন লড়াইয়ে সামিল হওয়ার সম্ভাবনা আছে। 

      কাশ্মীরের সাথে ভারতের শাসকের ধারাবাহিক বেইনসাফি দেখে কাশ্মীরের জনগন বুঝে গেছে ভারতে কাশ্মীরী জনগনের নিয়মতান্ত্রিক রাজনীতির বেইল নাই। সেটা নেহেরু আমলেই হোক বা বিজেপি আমলেই হোক। কাশ্মীরীদের এখন নিয়মতান্ত্রিক লড়াইয়ের পথে থাকার সম্ভাবনা ক্ষীণ। যতই তাদের বুঝানো হোক। আর সেটা সম্ভব না। তাই শেষ রক্ষা করার জন্য মোদি কাশ্মীরীদের হাতে পায়ে ধরতেছে। তবে কাম হবার সম্ভাবনা শুন্য। ভারতই সেই সম্ভাবনাকে ধ্বংস করে দিয়েছে। 

     আফগানদের সাথে ধর্মের বন্ধন তো আছেই কাশ্মীরিদের এছাড়াও থাকছে অজেয় আফগানিদের নৈতিক আর সামরিক সহায়তার সম্ভাবনা। এখন যদি আফগানেরা কাশ্মীরীদের সামরিক সহায়তা দেয় তাহলে মোদির এমন পাতলা পায়খানা শুরু হবে যে বাংলাদেশের ওরাল স্যালাইনও এই ডায়রিয়া সারাতে পারবে না। 

      আফগানরা যে কাশ্মীরে আসতে পারে সেই অনুমান আমার নয় খোদ ইন্ডিয়া আর্মি চিফ বিপিন রাওরাতের। আমেরিকা আফগানিস্তান থেকে সরে যাবার ঘোষণা দেবার পরে বিপিন বাবু ১৫ এপ্রিল রয়টারকে বলেছিলেন, আফগানিস্তান থেকে আমেরিকা চলে যাওয়ার ঘোষণায় ভারত চিন্তিত। ভারতের চিন্তার কারণ হিসেবে রয়টার লিখেছিলো। 

"India’s big worry is that instability in Afghanistan could spill over into its Muslim-majority territory of Kashmir where it has been fighting militants for three decades"

  "ভারতের বড় ভয় যে আফগানিস্তানের অস্থিরতা মুসলমান প্রধান কাশ্মীরে গড়িয়ে পড়তে পারে যেখানে গত তিন দশক থেকে ভারত জঙ্গিদের বিরুদ্ধে লড়েছে।" 

     নিরস্ত্র কাশ্মীরিদের গুলি করে মারার মতো হানিমুন পিরিয়ড শেষ হয়েছে ভারতের। এবার তাদের সামনে রিয়েল ফাইটের সম্ভাবনা। সেই ফাইটে ভারতের জয়ের বিন্দুমাত্র সম্ভাবনা নাই। সোভিয়েত আর মার্কিন সেনা খেদানো অজেয় আত্মবিশ্বাসী আফগানদের ফেইস করার নৈতিক বা সামরিক সাহস ভারতের নাই। তাই তড়িঘড়ি করে মোদি কাশ্মীরের আগের স্ট্যাটাস ফিরিয়ে দিয়ে নির্বাচন দেয়ার ভালোমানুষি করতে এসেছে। কিন্তু সারা দুনিয়া জানে মোদি কত ভালো মানুষ। 

      কিন্তু অনেক দেরী হয়ে গেছে ভায়া। কাশ্মীরের যেই বেইনসাফি করা হয়েছে সব মনে রেখেছে কাশ্মীরের জনগনই শুধু নয় মনে রেখেছে সারা দুনিয়া। মোদি অমিত শাহের হিন্দুত্ববাদি জোশের কথা আমরা কেউই ভুলিনি। কাশ্মীরের জমি কেনা, কাশ্মীরী নারীদের বিয়ে করার খায়েশ আমরা দেখেছি। কাশ্মীর ভারতের হাতছাড়া হয়ে যাবার সময় এসেছে। পাশার দান উলটে গেছে। আমির আজিজের সেই অমর কবিতার কথা মনে করিয়ে দিতে চাই।

      তোমরা রাত লেখো আমরা লিখব চাঁদ
তোমরা জেলে ঢোকাও দেয়াল ভেঙে লিখব আমরা
তোমরা এফআইআর লেখো, আমরা প্রস্তুত
তোমাদের হত্যাকাণ্ডের সব প্রমাণ লিখব
তোমরা আদালতে বসে মশকরা লেখো
আমরা রাজপথে দেয়ালে লিখব ইনসাফ

     মোদি-অমিত শাহ, তোমাদের পাপের আর বেইনসাফির কাফফারা দেয়ার জন্য তৈরি হও। দেয়ালে দেয়ালে লেখা ইনসাফ কায়েমের সময় এসে গেছে। ইতিহাস কোন বেইনসাফিকে ক্ষমা করেনা। লেখা-পিনাকী ভট্রাচার্য।
--------------------------------- 
লেখকঃ ইসলামিক আর্টিকেল লেখক ও অনলাইন এক্টিভিস্ট। 

Post a Comment

0 Comments