Recent Tube

একুশে আগষ্ট ও পিলখানার ঘটনা : দিল্লীর রাডার এবং মিডিয়ার রটনা ; মিনার রশিদ।




 একুশে আগষ্ট ও পিলখানার ঘটনা :    দিল্লীর রাডার এবং  মিডিয়ার রটনা ;
--------------------------------- 

   একুশে আগষ্টের ঘটনায় শেখ হাসিনার মৃত্যু হলে বিএনপি নেতৃত্বাধীন চারদলীয় জোট সরকারের  সেদিনই পতন হতো এতে বিন্দুমাত্র   সন্দেহ  নেই । এটা জেনেও এরকম নিজের পায়ে নিজে কুড়াল মারার মত কাজ কি দুনিয়ার  চরমতম  বোকা  কোনো সরকার  গ্রহন করতে পারে  ? শেখ হাসিনা অগত্যা নিহত  হলেও  তাঁর  পরিবারের আরো অন্তত:
ছয়জন  সদস্য বাকি ছিলেন  যারা জনগণের অধিকতর সহানুভূতি নিয়ে বিএনপির জন্যে আরো শক্তিশালী প্রতিপক্ষ হয়ে পড়তে পারতেন   ! এসব  জেনেও বিএনপি নেতৃত্ব কেন এই  আত্মবিধ্বংসী কাজটি  করতে যাবে ? 

   একই ভাবে  বিপরীত দিক থেকে প্রশ্ন আসে , রাজনৈতিক  প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে নিজের জীবনের উপর কিংবা নিজেদের নেত্রীর উপর  এরকম রিস্ক কোনো ব্যক্তি বা দল কি আসলেই নিতে পারে ? আওয়ামী লীগ নেতৃত্বই বা কেন আত্মহত্যার এই কাজটি করতে যাবে ??  
দুটি প্রশ্নই অত্যন্ত জটিল  !
এই দুটির একটিও যদি সম্ভব  না হয় তাহলে এই হামলার পেছনে  মাষ্টার মাইন্ডটি আসলে কে ছিল  ?

  কী ছিল তাদের  টার্গেট ? 
সেই টার্গেট কি তারা এচিভ করেছে ? 
 এখন  কি তাদের সেই প্রাপ্তিগুলি   দৃশ্যমান হচ্ছে ? 

 একুশে আগষ্ট না হলে কি এদেশের রাজনীতিতে  ‘এক-এগারো ‘ আসতে পারতো  ? 
 এক- এগারো না আসলে কি বর্তমান বাকশালকে  এমন কিছিমে ক্ষমতায় বসিয়ে দেশটিকে এমনভাবে কব্জা করা যেতো ? 

 দেশটির সকল জিওপলিটিকেল সুবিধা /এস্টেটগুলোকে এমনভাবে  তছনছ করা যেতো ?  
 
  এই প্রশ্নগুলি  নিয়ে কিছুক্ষণ ভাবলে এবং গত এক যুগের রাজনীতির গতি ধারা পর্যবেক্ষণ করলে সেই প্রশ্নটির জবাবও দিবালোকের মত  স্পষ্ট হয়ে  পড়ে     । 

   পরস্পর মুখোমুখি  দুটি পক্ষের একটি পক্ষ  এই কর্ম কান্ড কিছুটা আঁচ করতে  পারলেও এর ভয়াবহতা সম্ভবত   তাদেরও অগোচরে রাখা  হয়েছিল  ! কিংবা নিজেদের দলের  মধ্যে  দুয়েকজন কিছুটা  জানলেও বাকিদের কাছে পুরো বিষয়টি অজানাই   ছিল  ! 

   এই সম্ভাব্য হামলার কথা আগের রাতে নেত্রীকে জানিয়েছিলেন বলে ঢাকা দক্ষিণের প্রাক্তন মেয়র    সাঈদ খোকন  সম্প্রতি  একটি অনুষ্ঠানে  জানিয়েছেন  ।   এই বিষয়টিও পর্যবেক্ষকমহলের কপালে ভাঁজ   ফেলে  দিয়েছে   !  পাশের দেশের প্রশিক্ষিত ও অত্যন্ত দক্ষ  ইন্টেলিজেন্স  সময়ের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ 
তাদের সবচেয়ে   বিশ্বস্থ  দলটিকে  যে খবরটি জানাতে পারলো না , সেই খবরটি সাঈদ খোকনের বাবা কেমন করে এত সঠিকভাবে  জানতে পারলেন  ?

   কী ছিল তখনকার প্রাক্তন  মেয়র  হানিফের মত একজন বেসরকারী ব্যক্তিত্বের   ইন্টেলিজেন্স সোর্স ?  এখানে স্মর্তব্য যে ২০০২ সালের এপ্রিলেই  জনাব হানিফের  মেয়রের মেয়াদ শেষ হয়েছিল ! 

  এটা স্পষ্ট যে  এই  হামলার মাষ্টার মাইন্ড জানত  , পরস্পর মুখোমুখি দুটি দলের একপক্ষের  পেটে ব্যথা হলেও প্রথমেই অপর পক্ষকে  দায়ী করে ! আমাদের সার্বিক  অসহিষ্ণু মানসিকতাটি তৈরি করেছে এদেশের মিডিয়া । আর  এই সুযোগটি গ্রহন করেছে ২১শে আগষ্টের  পেছনের এই মাষ্টারমাইন্ড !  ক্ষোভের এই  অগ্নিটিতে  
বাতাস দিয়েছে তাদেরই খুদ- কুড়ায় গড়ে ওঠা মিডিয়া ! 

   নিজেদেরকে আড়াল করতে এবং ঘটনাটিকে যথাযথ বিশ্বাসযোগ্য দেখাতে   জজমিয়া নাটকের মত কিছু নাটকেরও আঞ্জাম দেয়া    হয়েছে পুরো জাতিকে  আরেকটু  গোলক ধাঁধাঁয় ফেলতে  । জজমিয়া নাটকটিও সম্ভবত একই নটরাজের  মহা নাটকের অংশ !  আমাদের  অতি উৎসাহী ও নির্বোধ কিছু সরকারী কর্মচারী কিংবা তাদেরই  পুঁতে রাখা কোনো এজেন্ট এই সুযোগটি করে দিয়েছে । বরাবরের মতই  ইউরেকা বলে বাতাস দিয়েছে  আলো-স্টার - সিপিডি - চ্যানেল আই চক্র !  
 স্বনামধন্য  সাময়িকী  The Economist জানিয়েছিল ২০০৮ সালে আওয়ামীলীগকে ক্ষমতায় আনতে  Bags of  Indian Cash and advice কীভাবে ব্যবহার করা হয়েছিল ! 

   এই উপদেশ এবং টাকার থলি পেয়েই এদেশের মিডিয়ার একটা অংশ 
“ জজ মিয়া “ নাটকটিকে হিট - সুপারহিট বানিয়ে নটরাজের আসল মহানাটকটিকে  জাতির মগজ বা দৃষ্টি থেকে আড়াল  করে দিয়েছে   ! 

   গত একযুগের বেশি সময় ধরে একুশে আগষ্ট ও পিলখানার  বেনেফিশিয়ারির ( দুটি একই সূত্রে গাঁথা ) 
অজস্র মওকা  দেখে বিষয়টি এখন দিবালোকের মত স্পষ্ট হয়ে পড়েছে ! দিন যত যাচ্ছে  , ততই তা স্পষ্ট হচ্ছে  ! 

  আমাদের অস্তিত্বের স্বার্থেই ঘটনা গুলি  নিয়ে নির্মোহ গবেষণা হওয়া প্রয়োজন  ! যার যতটুকু দায় , যার যতটুকু বোকামি  আমরা চাই - তা বেরিয়ে আসুক ! এগুলির রিপিটেশন বন্ধ হোক ! জাতি তার সকল সেন্স ফিরে পাক ! কারণ এর সাথে আঠারো কোটি আত্মা এবং তাদের আগত প্রজন্মের বাঁচা - মরা জড়িয়ে পড়েছে ! আমরা সজাগ না হলে , আমাদের সচেতনতার উত্তাপ জানান দিতে না পারলে পেছনের কুশীলব আমাদেরকে বোকা ঠাহর করে এই কিছিমের কাজ করতেই থাকবে ! 

  ২১ শে আগষ্টের ঘটনা নিয়ে আরো  কতগুলি প্রশ্নের সুরাহা করা হয় নাই । 
অনুষ্ঠান শুরুর কয়েক ঘন্টা আগে অনুষ্ঠানের জায়গাটি কেন পরিবর্তন করা হলো - অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ  এই ক্লূ টিও আমরা এড়িয়ে গিয়েছি  । 

    তখনকার সরকার এফবিআই /স্কটল্যান্ড ইয়ার্ডের মত নিরপেক্ষ ও গ্লোবালি পরিচিত সংস্থা দিয়ে ঘটনাটির  তদন্ত করাতে চেয়েছিল । আওয়ামীলীগ নেতৃত্ব তাতেও সহযোগিতা করে নাই । ঘটনার সঠিক তদন্তের চেয়ে প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতেই বেশি উৎসাহ  দেখা গেছে  এবং আজও  সেই প্রবণতাটিও বেশি দেখা যাচ্ছে ! 

   আপনাদের হয়তো মনে আছে , পিলখানায় নৃশংস ঘটনা ঘটানোর পরে  ২০০৯ সালের মার্চ  মাসে  পাশের  দেশটির ইন্টেলিজেন্সের অন্যতম থিংক ট্যাংক ও তাদের  প্রাক্তন সেনাপ্রধান জেনারেল  শংকর রায় চৌধুরী লিখেছিলেন , Delhi can not  afford to let  Dhaka slip of its Radar .  একটি স্বাধীন দেশ নিয়ে এমন অবমাননাকর কথা বললেও আমাদের নতজানু সরকার বা ব্যাঘ্র  বাহিনীর কেউ কোনো হুংকার প্রদর্শন  করে নাই । এই ব্যাঘ্ররা দেশের ভেতরে অনেক নিরীহ  মানুষের রক্ত ঝড়ালেও এটা নিয়ে  একটু আওয়াজও তুলেন নি ! 

   মূলত ঢাকাকে দিল্লীর রাডারের আওতায় রাখতেই ২১ শে আগষ্ট এবং পিলখানা হত্যাকাণ্ডের মত ঘটনার সৃষ্টি করা হয়েছে বলে আজ দিবালোকের মত স্পষ্ট হয়ে পড়েছে   । যদিও ঘটনা ঘটে যাওয়ার পর পরই শংকর রায় চৌধুরীরা এরকম বিভ্রান্তমূলক লেখা  লিখে আমাদের দৃষ্টিকে অন্যদিকে ঘুরিয়ে দিতে চেষ্টা  করেছিলেন    । পিলখানা হত্যাকাণ্ডের পর  সেই আর্টিকেলটি  লেখা হয়েছিল যাতে আমরা পিলখানা হত্যাকান্ডের পেছনে কিছু পাকিস্তানী ভূতকে দেখতে পাই ! 

   শংকর রায় চৌধুরীদের এই চিকনা বুদ্ধির কারণে তারা সাময়িক লাভবান হয়েছে তাতে কোনো সন্দেহ নাই  । কিন্তু শেষ বিচারে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত তারাই  হয়েছে । তাদের এই চিকনা বুদ্ধির কারণে নিজেদের দেশটিও খন্ড বিখন্ড হয়ে পড়লেও অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না । কারণ এখন তাদের চেয়েও বড় সেয়ানা চীন দাঁড়িয়ে গেছে ! 
সবচেয়ে বিস্ময়ের ব্যাপার হলো পৃথিবীর একমাত্র  হিন্দু রাষ্ট্র নেপালও মহা ভারতের রাডার থেকে স্লিপ করে   চীনের প্রতি ইনক্লাইন্ড হয়ে পড়েছে । শংকর রায়দের চিকনা  বুদ্ধির দৌরাত্মেই  প্রায় ১৮ কোটি বাংলাদেশীই চরমভাবে ইন্ডিয়া বিদ্বেষী হয়ে পড়েছে !  এখন ইন্ডিয়ার একজন প্রতিবেশীও অবশিষ্ট নেই যারা এদের এই চিকনা বুদ্ধির যন্ত্রণায় দূরে সরে না গিয়েছে । 

   নিজের জনগোষ্ঠির বিরাট একটা সংখ্যাকে চরম দারিদ্রতায় ডুবিয়ে রেখে ইন্ডিয়া নিজেই 
আফগানিস্তানের এক দালাল ও করাপ্টেড 
সরকারের পেছনে কয়েক বিলিয়ন ডলার খরচ করেছে ! হামিদ কারজাই /আশরাফ  ঘানিদের পেছনে  সম্মিলিত ইনভেষ্টমেন্ট  কয়েক ট্রিলিয়ন ডলার । সবকিছুর ফলাফল হয়েছে একটা বিরাট শূণ্য ! 

   আমার লেখাগুলি ইন্ডিয়ার অনেক বাংলাভাষা ভাষী পড়েন বলেই অনুমিত হয় । তাদের মাধ্যমে ইন্ডিয়ান অথরিটির কাছে কিছু ম্যাসেজ পৌঁছাতে চাই । দয়াকরে আমাদের নিয়ে আপনাদের মরন খেলা বন্ধ করুন !  আমরা আপনাদের ভাবনামত  সাব- হিউম্যান লেবেলের কোনো প্রাণী নই । আমাদেরও মন আছে । সেই মনে কষ্ট ও ক্ষোভ জমা হয় । 

    আপনারা দুয়েকজন আশরাফ ঘানি / শেখ হাসিনার সাথে সম্পর্ক না গড়ে  প্রতিবেশি  
দেশগুলির  জনগণের সাথে সম্পর্ক গড়ুন । সেজন্যে বিলিয়ন/ ট্রিলিয়ন  ডলার খরচ করতে হবে না । শুধু খরচ করতে হবে আপনাদের সামান্য গুডউইল!  
আমাদের পেইন দিয়ে আপনাদের নিজেদেরও  ক্ষতি ছাড়া কোনো গেইন বা লাভ  হবে না ! আফগানিস্তানের তালিবানরা চোখে আঙুল দিয়ে তা আপনাদের দেখিয়ে দিয়েছে
-------------------------------------- 

Post a Comment

0 Comments