Recent Tube

যে সকল আত্মীয়-স্বজন নানাভাবে ক্ষতি করার চেষ্টা করে তাদেরকে এড়িয়ে চলা বৈধ। আব্দুল্লাহিল হাদী বিন আব্দুল জলীল।




 যে সকল আত্মীয়-স্বজন নানাভাবে ক্ষতি করার চেষ্টা করে তাদেরকে এড়িয়ে চলা বৈধ
-------------- ●◈●-------------- 
 প্রশ্ন: 
 যেসব আত্মীয়-স্বজন (যেমন: শ্বশুর-শাশুড়ি) কুফরি কালাম বা যাদু-টোনার মাধ্যমে সংসার ভেঙ্গে দেওয়ার চেষ্টা করে, সংসারে অশান্তি সৃষ্টি করে, সংসারের সদস্যদের শারীরিক, মানসিক ও অর্থনৈতিক ক্ষতির সম্মুখীন করে। এ ধরণের আত্মীয়দের সাথে কি সম্পর্কচ্ছেদ করা জায়েজ আছে? তাদের সাথে কোন ধরণের যোগাযোগ-দেখাসাক্ষাৎ না করলে কি গুনাহ হবে?

 উত্তর:

  যাদের সাথে সম্পর্ক রাখলে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে যথাসম্ভব ধৈর্যের সাথে তাদের সাথে সুসম্পর্ক বজায় রেখে তাদেরকে সংশোধন করার চেষ্টা করা উচিৎ। হাদিসে আত্মীয়-স্বজনের খারাপ আচরণে ধৈর্য ধারণ করত: তাদের সাথে সুসম্পর্ক বজায় রাখার ব্যাপারে পর্যাপ্ত উৎসাহিত করা হয়েছে। এটি নি:সন্দেহে উত্তম চরিত্রের বহিঃপ্রকাশ। 
পাশাপাশি যদি মনে হয় আপনার প্রতি তাদের বিশেষ কোনও অভিযোগ বা দাবি-দাওয়া আছে যার কারণে তারা শত্রুতা করছে তাহলে দ্রুত সমাধান করা জরুরি। কিন্তু নানা চেষ্টা করার পরও সমঝোতা করা সম্ভব না হলে বা তাদের সাথে সুসম্পর্ক বজায় রাখা সম্ভব না হলে এবং তাদের দ্বারা ক্ষতির আশঙ্কা করলে তখন ক্ষত-ক্ষতি থেকে বাঁচার স্বার্থে তাদেরকে এড়িয়ে চলা এবং সাময়িকভাবে কথাবার্তা ও যোগাযোগ বন্ধ রাখা জায়েজ রয়েছে-তারা রক্ত সম্পর্কীয় বা একান্ত নিকটাত্মীয় হলেও।

  এ কথায় কোনও সন্দেহ নাই যে, সমাজের কিছু মানুষ অন্যের ক্ষতি করতে বা মানুষকে কষ্ট দিতে সিদ্ধহস্ত। তাই অন্যরা সাধ্যমত তাদের থেকে দূরে থাকতে চেষ্টা করে। এমন মানুষ আল্লাহ তা‘আলার নিকট সর্ব নিকৃষ্ট।
মানুষের ক্ষয়-ক্ষতি থেকে বাঁচার স্বার্থে অথবা কারো কথাবার্তা ও আচার-আচরণ খারাপ হলে তাদের থেকে দূরে থাকার অনুমতি পাওয়া যায় নিম্নোক্ত হাদিস সমূহ থেকে:

  ◼ ১. আয়েশা রা. থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন: রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,

إِنَّ شَرَّ النَّاسِ عِنْدَ اللهِ مَنْزِلَةً يَوْمَ الْقِيَامَةِ مَنْ تَرَكَهُ النَّاسُ اتِّقَاءَ شَرِّهِ

 ‘‘নিশ্চয়ই কিয়ামতের দিন আল্লাহ তা‘আলার নিকট সর্ব নিকৃষ্ট ব্যক্তি সে যাকে অন্যরা পরিত্যাগ করে তার অনিষ্ট থেকে বাঁচার জন্যে’’। (বুখারি ৬০৩২; মুসলিম ২৫৯১)

 ◼ ২) রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন,
إِنَّ شَرَّ النَّاسِ مَنْزِلَةً عِنْدَ اللَّهِ يَوْمَ الْقِيَامَةِ مَنْ وَدَعَهُ أَوْ تَرَكَهُ النَّاسُ اتِّقَاءَ فُحْشِهِ
“কিয়ামতের দিনে আল্লাহর কাছে ঐ ব্যক্তি নিকৃষ্ট স্তরের বলে গণ্য হবে, যাকে লোকজন তার দুর্ব্যবহারের জন্য পরিত্যাগ করে।” (মুসলিম: ৬৪৯০; বুখারি: ৬০৩২; আবু দাউদ; ৪৭৯১)।
 ◼ ৩. রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামবলেছেন,
إِنَّ شَرَّ النَّاسِ مَنْ تَرَكَهُ النَّاسُ ـ أَوْ وَدَعَهُ النَّاسُ ـ اتِّقَاءَ فُحْشِهِ
“নিশ্চয় সবচেয়ে নিকৃষ্ট লোক সে-ই যার অশালীনতা থেকে বেঁচে থাকার জন্য মানুষ তার সংশ্রব ত্যাগ করে।” (বুখারি: ৬০৫৪)।
আল্লাহ তাআলা আমাদেরকে সমাজের অসাধু, ক্ষতিকর ও খারাপ মানুষের ক্ষয়-ক্ষতি থেকে হেফাজত করুন। আমীন।
আল্লাহু আলাম।
➖➖➖➖➖➖
উত্তর প্রদানে:
আব্দুল্লাহিল হাদী বিন আব্দুল জলীল (মাদানি)
জুবাইল দাওয়াহ এন্ড গাইডেন্স সেন্টার, সৌদি আরব
#abdullahilhadi

Post a Comment

0 Comments