বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম
ইসলামের বিজয় কোন পথে?
____________________________
বাংলা,পাক ও ভারতে "মেকি পীরতন্ত্র ,অন্ধ আকাবিরতন্ত্র এবং অযোগ্য অথর্ব সাহেবজাদাতন্ত্র" বিশ্বজয়ী ইসলামী শক্তিকে শতধা বিভক্ত করে তাগুতি শক্তির উত্থান ঘটিয়েছে।
______________________
খোলাফায়ে রাশেদাহ,সাহাবায়ে কেরাম ,তাবিয়ীনে এযাম এবং তবেয় তাবেয়ীন ও আইম্মায়ে মুজতাহিদীনের যুগে পীরতন্ত্র,আকাবিরতন্ত্র ও সাহেবজাদাতন্ত্রের অস্তিত্ব ছিল না।
যোগ্যতা ও তাকওয়াহ ছিল ইসলামী নেতৃত্বের প্রকৃত মানদন্ড। হযরত আবু বকর (রা)এর ছেলে হযরত আব্দুর রহমান (রা)এবং হযরত উমর ফারুক(রা) এর সাহেবজাদা হযরত আব্দুল্লাহ বিন উমর (রা)বিরল যোগ্যতার অধিকারী থাকার পরও হযরত আবু বকর(রা)ও হযরত উমর ফারুক (রা)
সাহেবজাদা তন্ত্রের পথ অবলম্বন করেন নি।এটাই ইসলাম।
সালাফে সালিহীনদের স্বতন্ত্র কোন মসলক ছিল না।কুরআন ও সুন্নাহই ছিল তাদের একমাত্র পাথেয়।হযরত আব্দুল্লাহ কাদির জিলানী (রহ) (৪৭১-৫৬১হি) যুগ থেকেই প্রচলিত পীরতন্ত্রের সূচনা হয়। রাসূল(সা)দুনিয়া থেকে চলে যাওয়ার প্রায় ৫০০ বছর পরে এ মসলকের জন্ম হয়।তারপর ক্রমান্বয়ে শুরু হলো পীরতন্ত্র কেন্দ্রিক ইসলামে বিভাজন। শুনেছি বাংলাদেশে নাকি কয়েক হাজার পীর আছেন যারা নিজ নিজ মসলক দিয়ে মুসলমানকে ভাগ ভাগ করে রেখেছেন।কোনো কোনো পীর নাকি ময়দানে মাহশরে জাহাজে করে মুরীদদের বিনা হিসেবে জান্নাতে প্রবেশ করানোর প্রলোভন দিচ্ছেন। বর্তমানে সূফিবাদকে ও সাহেবজাদাতন্ত্র গ্রাস করে ফেলেছে।পীরের ছেলে অযোগ্য হলেও গদীনিশিন পীর হচ্ছেন।এভাবে ইসলাম আজ হাসির পাত্রে পরিণত হচ্ছে।
প্রকাশ থাকে যে ইসলামী স্বর্ণালী যুগে শুধুমাত্র ছাত্র শিক্ষককেরই সম্পর্ক ছিল-পীর মুরিদীর কোনো অস্তিত্ব ছিলনা।
পরবর্তীতে অন্ধ আকাবিরতন্ত্রের আবির্ভাব হয়েছে।অনেকে আকাবিরদেরকে নবীদের মর্যাদায় উন্নীত করছেন।কুরআন সুন্নাহর আলোকে ইসলামকে না জেনে আকাবিরদের জীবন কর্ম দিয়ে কুরআন সুন্নাহর অপব্যাখ্যা করছেন।এভাবে পরোক্ষভাবে ইসলামী সমাজে আকাবীর পূজা শুরু হয়ে গিয়েছে।তবে কুরআন সুন্নাহর আলোকে জীবন পরিচালনাকারী আকাবীরগণ অবশ্যই বরণীয়।কেননা তাদের অনুসরণ আসলে কুরআন সুন্নাহরই অনুসরণ।
সর্বশেষ এডিশন হচ্ছে -প্রতিষ্ঠানকেন্দ্রিক সাহেবজাদা তন্ত্র। এ পদ্ধতির মাধ্যমে অযোগ্যরা নেতৃত্বের আসনে সমাসীন হচ্ছেন।ফলে ইসলামী শিক্ষা ও এলমী ও মালি আমানত আজ সমাজের কাছে প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে।ইসলামী প্রতিষ্ঠানের দায়িত্বশীল নিয়োগের এ পথ পরিহার করতে হবে। ইলমী যোগ্যতার যথাযথ মূল্যায়ন ,আমানতদারী ,বয়োজ্যষ্ঠতা এবং অভিজ্ঞতা আলোকে পরিচালক নিয়োগের ব্যবস্থা রাখতে হবে।আর্থিক স্বচ্ছতা ও আমানতদারী রক্ষা করে শিক্ষা কারিকুলাম পরিচালনা করতে হবে। তাহলে দেশ ও জাতি উপকৃত হবে।
সারকথা
পীরতন্ত্র ,অন্ধ আকাবিরতন্ত্র এবং সাহেবজাদাতন্ত্র বর্তমান বিশ্বে ইসলামী ঐক্যে বিভাজনের সূত্রপাত করেছে। যার ফলে মুসলিম মিল্লাহ আজ ইসলামী খেলাফতের স্বাদ থেকে বঞ্চিত রয়েছে।
ইসলামী খেলাফত ও ইসলামের অতীত গৌরব ,পুনরুদ্ধার করতে হলে আমাদেরকে তিনটি গুনে গুনান্বিত হতে হবে :
এক: কুরআন ও সুন্নাহর দিকে ফিরে আসা।
দুই:ঐক্যবদ্ধভাবে আল্লাহর রজ্জুকে আকড়িয়ে ধরা।
তিন: বিভাজনের সকল তন্ত্র মন্ত্র পরিহার করা।
এ প্রসঙ্গে আল্লাহ বলেন
সূরা আল ইমরান আয়াত ১০২-১০৩
"হে ঈমানদারগণ আল্লাহকে যেমন ভয় করা উচিত ঠিক তেমনিভাবে ভয় করতে থাক।এবং অবশ্যই মুসলমান না হয়ে মৃত্যুবরণ করোনা।
(আয়াত ১০২)
"আর তোমরা সকলে আল্লাহর রজ্জুকে সুদৃঢ় হস্তে ধারন কর আর পরস্পর বিচ্ছিন্ন হয়োনা।
(আয়াত ১০৩)
Allah says : O You who believe,Fear Allah as He should be feared and die not except in a state of Islam (Al -Imran 102)
And hold fast,all of you together to the rope of Allah (This Quran) and be not divided among yourselves.
(Al-Imran 103)
______________________
লেখকঃ
শায়খ ইসহাক আল মাদানী।
ইসলামি চিন্তাবিদ,গবেষক, শিক্ষক।
0 Comments