Recent Tube

শায়খ আব্দুল্লাহ জাহাঙ্গীর রহঃ বলেনঃবাংলাদেশে মুসলিমগণেরবিভক্তির অবস্থা পর্যালোচনাকরলে নিম্নের বিষয়গুলো দেখাযায়:------মুহাম্মদ তানজিল ইসলা।

 শায়খ আব্দুল্লাহ জাহাঙ্গীর রহঃ বলেনঃ বাংলাদেশে মুসলিমগণের
বিভক্তির অবস্থা পর্যালোচনা
করলে নিম্নের বিষয়গুলো দেখা
যায়:-

---------------------------
(ক) শিরক-কুফর ও খৃস্টধর্ম প্রচারের
ব্যাপক সুযোগ সৃষ্টি
আমরা দেখিছ যে, তাওহীদ, সুন্নাহ ও
শরীয়াহ পালনের গুরুত্বে
বিশ্বাসীগণের মধ্যে বিভক্তি
প্রকটতর। এতে একদিকে শিরক, কুফর ও
বিদআতের প্রচারকদের জন্য ময়দান খুবই
নিরাপদ হয়েছে। শিয়া,
কাদিয়ানী, বাহাঈ ইত্যাদি ধর্মের
বা মতের অনুসারীরা তাদের
দাওয়াতী কর্মকা- ব্যাপকভাবে
এবং অনেকটা নির্বিবাদেই
চালাতে পারছেন। সর্বোপরি
খৃস্টান মিশনারিগণ হাজার হাজার
মুসলিমকে খৃস্টধর্মে ধর্মান্তরিত
করছেন। দীন প্রেমিক মুসলিমগণ
পরস্পরের মত খ-ন, প্রতিবাদ ও
প্রতিরোধে ব্যস্ত থাকার কারণে এ
সকল বিষয় তাদের নজর এড়িয়ে
যাচ্ছে। অনেক সময় নজরে আসলেও
গুরুত্ব দিতে ব্যর্থ হচ্ছেন। এমনকি
অনেক সময় তারা এ সকল বিষয়ে গুরুত্ব
আরোপের বিরোধিতা করছেন।
কেউ বলছেন, অমুক মতের অনুসারী
মূলতই কাফির, কাজেই তারা
কাদিয়ানী, বাহাঈ, শিয়া বা
খৃস্টান হলেই কি আর না হলেই কি!
কেউ বলছেন, অমুক মতের অনুসারীরা
তো মুসলিম নামের কলঙ্ক, তাদের
কাদিয়ান বা খৃস্টান হয়ে যাওয়াই
ভাল। হয় আমাদের মতে এসে সঠিক
ইসলাম অনুসরণ করুক অথবা খৃস্টান হয়ে
ইসলামের কলঙ্ক দূর করুক!
কেউ বলেন, খৃস্টান হচ্ছে হোক, পরে
ওদেরকে সামাজিক প্রতিরোধের
মাধ্যমে ফিরিয়ে আনা যাবে, এখন
অমুক মত বা দল ঠেকাও!! যারা খৃস্টান
হচ্ছে তারা আবার পরে আমাদের
আখলাক দেখে মুসলিম হয়ে যাবে,
যেভাবে হুদাইবিয়ার সন্ধির পরে
কাফিররা সাহাবীগণের আখলাক
দেখে মুসলিম হয়ে গিয়েছিলেন!
কাজেই কাদিয়ানী, বাহাঈ বা
খৃস্টান ধর্মান্তর নিয়ে এখন চিন্তা
করার কোনো দরকার নেই, এখন
বাতিলদেরকে ঠেকাও!! কেউ
বলছেন, এগুলো নিয়ে চিন্তা করে
লাভ নেই, অমুক বা তমুক পদ্ধতিতে
দীনের প্রচার বা প্রতিষ্ঠার কাজ
চালিয়ে যান, এক সময় সব ঠিক হয়ে
যাবে!!!
.

(খ) আলিমগণ সম্পর্কে ব্যাপক
কুৎসাচার
সমকালীন বিভক্তির অন্যতম দিক
আলিম ও দাঈগণের বিষয়ে ব্যাপক
কুৎসাচার। বিশেষত প্রযুক্তির কারণে
সকলের কথা একই স্থানে
ইন্টারনেটে বা টিভির পর্দায়
পাওয়া যাচ্ছে। আমাদের সমাজের
কমবেশি ১৫/২০% মানুষ দীন পালন
করেন এবং কোনো না কোনো
ইসলামী ‘ধারার’ অনুসরণ করেন।
বাকি প্রায় ৮০/৮৫% মুসলিম দীন
পালনে অবহেলা করেন এবং
কোনো ধারারই অনুসরণ করেন না।
এদের অধিকাংশই দীন ও আলিমদের
প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তারা ব্যক্তিগত,
পারিবারিক বা সামাজিক
বিভিন্ন সমস্যায় আলিমদের পরামর্শ
নেওয়ার চেষ্টা করেন। বর্তমানে
এরূপ কোনো ব্যক্তি যদি ঈমানী,
আমলী বা দীনী কোনো সমস্যায়
সমাধানানের জন্য গ্রহণযোগ্য আলিম
অনুসন্ধানের জন্য ইন্টারনেটে প্রবেশ
করেন তবে তিনি দেখবেন যে,
প্রসিদ্ধ প্রত্যেক আলিম ও দাঈর
বিষয়েই ব্যাপক কুৎসা বা নিন্দাচার
বিদ্যমান এবং প্রত্যেককেই
ভিন্নমতের আলিম বা দাঈদেরকে
ইসলামের দুশমন বা ইহূদী-
নাসারাদের দালাল বলে চিত্রিত
করেছেন। এতে প্রত্যেক দলের
অনুসারী পরিতৃপ্ত বা আনন্দিত হলেও
সংখ্যাগরিষ্ঠ সাধারণ মুসলিমগণ
এবং বিশেষত তরুণগণ খুবই সমস্যায়
পড়ছেন। সমাজের আলিমগণ সকলেই
খারাপ, কিছু বুঝেন না ইত্যাদি
চিন্তা তরুণদেরকে সমাজবিচ্ছিন্ন ও
আলিমগণ থেকে বিচ্ছিন্ন করছে।
এছাড়া শিয়া, বাহাঈ, কাদিয়ানী,
খৃস্টান, আহলে-কুরআন ও অন্যান্য ধর্মের
বা মতের প্রচারকগণ কুরআন-হাদীসের
নামে এদেরকে সহজেই গ্রাস করতে
পারছেন। তারা কুরআনের কিছু
আয়াত অথবা বুখারী, মুসলিম বা অন্য
কোনো সহীহ নামে প্রসিদ্ধ গ্রন্থের
কয়েকটি হাদীস নিয়ে এসে বলছেন:
(১) কুরআন-হাদীস মানতে হবে, 
(২)সমাজের আলিম ও ইমামগণ অযোগ্য,
অসৎ ও অজ্ঞ, কাজেই আমাদের এ
মতের বিষয়ে তাদের কাছে প্রশ্ন
করে বা সমাধান চেয়ে লাভ নেই,
(৩) আমরা কুরআন-হাদীস দেখাচ্ছি,
কাজেই আমাদের মতে চলে এস…।
.

(গ) হানাহানি ও রক্তারক্তি
ভিন্নমত খন্ডনের নামে ভিন্নমত
অনুসারীদের প্রতি শত্রুতা, বিদ্বেষ
বা বিচ্ছিন্নতা পোষণ ও প্রচারের
কারণে প্রত্যেক মতের অনুসারীদের
মধ্যেও উত্তেজনা বাড়ছে। কোনো
কোনো এলাকায় ইতোমধ্যেই
মুসাল্লীদের মারামারির সংবাদ
আমরা জেনেছি। কোথাও কোথাও
সালাত পদ্ধতির মতপার্থক্যকে কেন্দ্র
করে নামাযী মুসলিমগণ মারামারি
করে কেউ কেউ ‘শহীদ’ (!!!) হয়েছেন
বলেও আমরা জেনেছি। রাশ না
টানলে কয়েক বছরের মধ্যে পুলিশ
প্রহরা ছাড়া এদেশের মসজিদের
সালাত আদায় অসম্ভব হয়ে যাবে
বলেই মনে হয়।
------------------------------------------------
লেখকঃ ইসলামি চিন্তাবিদ গ্রন্থপ্রনেতা ও মাওলানা।         

Post a Comment

0 Comments