Recent Tube

লাল কার্ডের মত আকীদা কার্ড শো করার আগে নিজেরা প্র্যাকটিক্যাল হয়ে উঠুন......? সম্পাদনায় : শামীম আজাদ।

লাল কার্ডের মত আকীদা কার্ড শো করার আগে নিজেরা প্র্যাকটিক্যাল হয়ে উঠুন......?

 সানি লিওনকে ডেকে এনে দেশে একটা 'বিকিনি শো' করান- দেখবেন, এদেশের মুসলিম ধর্মীয় পুরোহিতগোষ্ঠীর তাতে কিছু যাবে আসবেনা। কিন্তু প্রীচার ও দ্বায়ী জাকির নায়েককে একবার আনার চেষ্টা করুন, দেখবেন তার আগমন ঠেকানোকেই এই ধর্মের ঠিকাদাররা জান্নাতে যাওয়ার একমাত্র বিকল্প বলে মনে করবে। তদ্রুপ মিজানুর রহমান আজহারীর বিরুদ্ধে কান ভারী করে তাকে দেশ থেকে তাড়িয়ে দেওয়াকেই তারা বিশাল সওয়াবের কাজ ও হকের পক্ষে সফলতা হিসেবে গণ্য করবে।

    তারপর দেখেন, দেশের মুসলিম জনগোষ্ঠীর একটি বিশাল অংশ দেদারসে ইন্ডিয়ার পরকিয়া চ্যানেলের মেগা সিরিয়াল দেখে দেখে রাত পার করে দিচ্ছে, প্রতিটা মুসলমানের গৃহ যেন এখন মন্দিরে পরিণত হয়েছে, সন্ধ্যা বেলায় টিভিতে উলু ধ্বনি বাজে- এসব নিয়ে এই হকের ডীলারদের কোন চিন্তা-ভাবনা নেই, ফতোয়া নেই, আন্দোলন নেই, বক্তৃতা-বিবৃতি নেই! কিন্তু যেই না 'দিরিলিস আরতুগ্রুল' বা এ জাতীয় যে সিরিয়ালগুলো মুসলিদের ইতিহাস, ঐতিহ্য ও সংস্কৃতিকে শৈল্পিক আকারে আকর্ষণীয়ভাবে (যদিও এগুলোতে ইসলামের অ্যাসেন্স পুরোপুরিভাবে থাকেনা) ফুটিয়ে তোলার মাধ্যমে মুসলিম জনগোষ্ঠীকে বিনোদন দানের চেষ্টা করে, ভারতীয় পৌত্তলিক সংস্কৃতির বিকল্প বিনোদন তৈরী করে- তখনি এদের গা জ্বালা করা শুরু করে, শুরু হয় ফতোয়ার বান-তুফান।

   তারপর ধরেন জাফর ইকবাল, আনিসুল আর প্রথম আলোর প্রডাক্টগুলা যে এই জাতির কিশোর যুবাদের সেক্যুলারাইজড করে দিচ্ছে এর বিপরীতে তাদের বিকল্প কোন কাজও নেই, চিন্তা-ফিকিরও নেই, এর বিরুদ্ধে তাদের কোন ফতোয়াও নেই। কিন্তু এগুলোকে কাউন্টার করার জন্য আবুল আসাদ যখন 'সাইমুম সিরিজ' রচনা করেন, তখন তারা ইনিয়ে বিনিয়ে এগুলোকে 'হারাম' কাজ হিসেবে উপস্থাপনের জন্য উঠেপড়ে লাগেন। এই গোষ্ঠীর অনলাইনজীবীরা 'সাইমুম', 'গার্ডিয়ান'- এসবের বিরুদ্ধে 'মডারেট' তকমা লাগিয়ে নানাবিধ ফতোয়াও ডেলিভারী দিতে থাকেন।

   শাহবাগীদের কারণে যেমন একটা জাতি ধ্বংস হতে পারে, ঠিক তেমনি এই ফতোয়ার ঠিকাদারদের কারণে ইসলাম ও মুসলিমদের অপূরণীয় ক্ষতি হতে পারে। অতীতেও এদের এইটা হারাম, ঐটা হারাম-এই 'হারাম হারাম' ফতোয়ার কারণে এই উপমহাদেশে মুসলমানরা বহু জায়গায় পিছিয়ে গেছে। এখন আবার প্রায় সবগুলাকেই তারা 'হালাল' করে নিয়েছে। এরা শাহবাগীদের মতই হিংসুটে, ঘৃণাজীবী, পরমত বিদ্বেষী ও অনেক ক্ষেত্রে ধ্বংসাত্মক। 

     সারা বিশ্বে আজ মুসলিমদের দুর্দশার জন্য যতটা না অমুসলিমরা দায়ী, তার চেয়ে অনেক অনেক বেশী দায়ী এই দুই প্রজাতি (শাহবাগী সেক্যু মুসলমান আর ফতোয়াজীবী)। এরা প্রকৃত অর্থে নন-প্রডাক্টিভ শ্রেণী। অনৈক্য সৃষ্টি করা ছাড়া এদের আর কোন কিছু করারই সক্ষমতা নেই। 

      ইসলামকে প্রাকটিক্যালি বাস্তবায়নের জন্য এই গোষ্ঠীর কোন কাজ নেই। এরা মনে করে ওয়াজ করলে আর ফতোয়া দিলেই সবকিছু আলবৎ হয়ে যাবে। এই ধরেন যে জিনিসটাকে তারা হারাম বলে বলে ফতোয়া দিচ্ছে, তার বিকল্প সেইম হালাল কিছু তারা প্রাকটিক্যালী করে দেখাতে পারেনা, সেই মুরোদ তাদের নেই। তারপর ধরেন তারা সুদের বিরুদ্ধে ওয়াজ করবে, কিন্তু সুদী ব্যাংক ব্যবস্থার বিরেদ্ধে বিকল্প অর্থনৈতিক ব্যবস্থা গড়ে তোলার চেষ্টা-প্রচেষ্টা তাদের নাই। পশ্চিমা এনজিওদের গালাগালি করবে, কিন্তু নিজেরা কোন এনজিও গড়ে তুলতে পারবে না। 

      আরে মানুষকে হালাল বিকল্প না দিতে পারলে তারা তো আজে-বাজে জিনিস খাবেই। একসময় তারা বলত- 'পত্রিকা পড়া হারাম', কিন্তু এখন তারা পত্রিকা পড়ে। অথচ দুঃখের বিষয় হল তাদের নিজেদের তৈরী করা কোন একটি পত্রিকাও নেই। এই হল তাদের প্র্যাকটিক্যাল লাইফের অবস্থা!  

     শাহবাগীদের নতুন করে চেনানোর প্রয়োজন নেই, কারণ বাংলাদেশের আজকের দুর্গতির জন্য এরা অলরেডি ট্রেড মার্কড হয়ে গেছে। এখন প্রশ্ন হল ইসলামী ট্রেড মার্কড কারা? এ ব্যাপারে আমাদের নিজস্ব দৃষ্টিভঙ্গী আছে। অনেকের সাথে তা নাও মিলতে পারে। তবে শাহবাগীদের মত এই ইসলামিকদেরও সব দেশেই পাওয়া যাবে। 

     সাংস্কৃতিক, অর্থনৈতিক ও প্রশাসনিক ক্ষেত্রে এই ধর্মীয় পুরোহিতশ্রেণি নিজেরা কিছু প্র্যাকটিক্যালি করে দেখাতে পারবেনা, শুধু তত্ত্ব আর কিতাবী বাগাড়ম্বর নিয় বসে থাকবে, আর অন্যরা ইসলাম রিলেটেড প্র্যাকটিক্যালি কিছু করতে গেলেই সাথে সাথে তারা লাল কার্ডের মত করে আকিদা কার্ড শো করে এবং তারা বাস্তবতা না বুঝেই ডাইরেক্ট হালাল হারামের ফতোয়া জারি করে দেয়।

    বুঝলাম আপনাদের খুলুসিয়াতে কোন সন্দেহ নাই এবং এটাও জানি ইসলামের সাথে মিক্সড করে জগাখিচুড়ী মার্কা কিছু করারও অনুমোদনও ইসলামে নাই। সেহেতু আপনারা এসব বিষয়ে আকীদা কার্ড শো করার আগে ওয়াজের মাইক আর তত্ত্বের কিতাবী বই থেকে ময়দানে বেরিয়ে যে খুলুসিয়াত দিলে পোষণ করেন সেই খুলুসিয়াত নিয়ে প্র্যাকটিক্যালি কিছু করে মুসলিম জাতিকে উপহার দেন। তবেই মানুষ আপনাদের ফতোয়াকে গ্রহণ করবে। নতুবা যতই ফতোয়া দেন না কেন মানুষ 'দিরিলিস আর্তুগ্রুল'-এর মত ইসলামিক ভেজাল গিলতেই থাকবে।

Courtesy by Ummah Ahad 
সম্পাদনায়ঃঃ শামীম আজাদ। 

Post a Comment

0 Comments