Recent Tube

ঐক্যের উত্তাপ কি তাড়াতাড়ি পানিতে নিভে গেল?কারা জিতলেন? ---কুতুব শাহ।


ঐক্যের উত্তাপ কি তাড়াতাড়ি পানিতে নিভে গেল? আল্লামা কাশেমী, মামুনুল হক্ব বনাম চরমোনাই  কারা জিতলেন?

  এই স্ট্যাটাস বুঝতে হলে প্রেক্ষাপট জানা জরুরী। গতকাল শুক্রবার একই স্থানে উভয় পক্ষের সমাবেশ ছিল। প্রশাসন থেকে দুই পক্ষ আলাদা অনুমতিও নিয়েছিল কিন্তু গেঞ্জাম লেগে ঠ্যালাঠ্যালি হলেও ভাগ্য ভাল হাতাহাতি হয়নি। সমাবেশের আগে দুই পক্ষের মাঝে সমঝোতা হয়েছিল সমমনা ছয় দলের সভাপতি আল্লামা নূর হোসেন কাসেমী বাইতুল মোকাররম থেকে সংক্ষিপ্ত বক্তব্য রাখবেন। এরপরই তারা মিছিল বের করে সবাইকে নিয়ে বিজয় নগরে চলে আসবেন। বাকি সমাবেশ সেখানেই শেষ হবে। সমমনা ছয় দল বাইতুল মোকাররম থেকে চলে যাওয়ার পর ইসলামী আন্দোলন সেখানে সমাবেশ করবে। কিন্তু জুমা শেষ হতেই দেখা গেল ভিন্ন চিত্র। ইসলামী আন্দোলনের কর্মীরা জুমার সালাম ফেরানের সাথে সাথেই তাকবীর দিয়ে উত্তর গেইটের মূল জায়গায় তাদের ব্যানার নিয়ে দখল করে নিল। অবস্থা নাজুক দেখে আল্লামা মামুনুল হক্ব, কাশেমীর ছয় দল জায়গা ছেড়ে দিয়ে সরে গেল।
এখন দুই পক্ষের মাঝে কচলা,কচলি চলছে কার দোষ বেশী কার দোষ কম? এক পক্ষের অভিযোগ চরমোনাইর কর্মীরা কেন ওয়াদা ভঙ্গ করে মাঠ দখলে নিলো! চরমোনাইর পক্ষ থেকে জবাব দেয়া হচ্ছে তারাই প্রশাসন থেকে আগে অনুমতি নিয়েছেন সেখানে কেন আল্লামা কাশেমীর ছয় দলীয় জোট সমাবেশ করতে গেল?  এই হল, ঘটনার প্রেক্ষাপট।

আমার প্রশ্ন, এখানে দুই পক্ষের দাবী একই এবং দুই পক্ষই একই আক্বীদা মানহাযের, একই ঘরানার। তাহলে একই প্ল্যাটফর্মে সমাবেশ করতে অসুবিধা কি ছিল? প্রকাশ্যে সংঘাত হয়নি সে জন্য শোকরিয়া কিন্তু আল্লামা কাশেমীর ছয় দল চুপচাপ সরে না গেলে তো সংঘাত অনিবার্য ছিল! তর্ক যখন শুরু তাহলে সবাই শালীন জবাব দিবে তা নয় ব্যাঙ্গ বিদ্রুপও হবে। সে সূত্রে চরমোনাই কর্মীদের কেউ কেউ দাবী করছে আল্লামা মামুনুল হক্ব এবং কাশেমীর ছয় দল মিলে চরমোনাইর ইশা আন্দলোনের অর্ধেক লোকও জোগাড় করতে পারেনি তাই পালিয়ে গেছে! গেঞ্জাম না?

দেখেন সেক্রেটারি সাপ, আহলে হাদীস বনাম কথিত মাজার পন্থী এবং জামায়াত বনাম চরমোনাই কখনো কোনভাবেই ঐক্য হবেনা তা সূর্যের আলোর মত স্পষ্ট। কিন্তু সমমনা, একই ঘরানার লোকেরা একটু উদার হলে কিছুটা ছাড় দিলে তো নিজদের মাঝে ঐক্য হওয়া যায়। তাইনা? কিন্তু গতকালের ঘটনা কি প্রমাণ করলো? আমরা সবাই রাজা আমার রাজত্বে। ব্যাস এই মনোভাব।

উল্লেখ্য, মাত্র কয়েক সপ্তাহ আগে চরমোনাই আয়োজিত এক প্রোগ্রামে আল্লামা মামুনল হক্ব, খালেদ সাইফুল্লাহ আয়ূবীরা গেলেন। অনেকে খুশীতে তৃপ্তির ঢেকুর তোলে অভিনন্দন জানালেন। ঐক্যের স্বপ্নে ঠোঁটে হাসি দেখা গেল, ওয়েল। উক্ত প্রোগ্রামে জনৈক বক্তা ঐক্যের গুরুত্ব প্রয়োজনীয়তা কেন তা উদাহরণ সহ বুঝিয়ে বল্লেন, আমরা ঐক্য হলে মওদূদীবাদ ধুলোয় মিশে যাবে। আমরা খুশী হয়ে হাত তালি দিলাম।  সুলতানুল ওয়ায়েজীন, খতীবুল বাঙ্গালেরা অন্তত তাদে ভাষায় মওদূদীবাদ নিচিহ্ন করার লক্ষ্যে হলেও ঐক্য হোক।

কিন্তু কয়েক সপ্তাহ যেতে না যেতেই মাঠ দখল নিয়ে দুই পক্ষের মাঝে ঘষাঘষি, ঠ্যালাঠ্যালি। আল্লামা মামুনুল হক্ব এখন পড়েছেন চিপায়। কারণ, চরমোনাইর প্রোগ্রামে গরম বক্তৃতার উত্তাপ যেতে না যেতেই গতকালের প্যাঁদানী নিয়ে কোন মুখে চরমোনাইর বিরুদ্ধে অভিযোগ করবে? তাই তাদের পক্ষের কর্মীদের কিউট এক লাইনের বক্তব্য হল, ছয়দল নাকি চরমোনাইকে সম্মান করে জায়গা ছেড়ে দিয়েছে। 

বাংলার এরদোয়ান চরমোনাইর নায়েবে আমীরের সাথে খেলতে গেলে পচুর বুদ্বি লাগবে! না হয়, নিরবে মাঠ ছেড়ে বলতে হবে পীর্সাপকে সম্মান করে সরে গিয়েছি। তো ভাই, ভিত্রে ভিত্রে তোমরা এভাবে গুতাগুতি যখন করবেই আবার ঐক্যের সুর সঙ্গীত শুনিয়ে আমাদের মনে কেন আশা জাগাও, সেক্রেটারি সাপ জবাব চাই।
--------------------------------------------------------
লেখকঃ  ইসলামিক  আর্টিকেল  লেখক  ও অনলাইন এক্টিভিস্ট। 

Post a Comment

0 Comments