কুরআন ও হাদীসের আলোকে বিবাহের গুরুত্ব, ফজিলত, না করার পরিণতি এবং করণীয়-বর্জনীয়
৩য় পর্ব ;
--------------------------------
বিবাহ ঈমানের অর্ধেকঃ
নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন,
إذَا تَزَوَّجَ العَبدُ فَقَد استَكمَلَ نِصْفَ الدِّين فَلْيَتَّقِ اللهَ في النِّصف البَاقي.
‘‘ বান্দা যখন বিবাহ করে, তখন সে তার অর্ধেক ঈমান (দ্বীন) পূর্ণ করে। অতএব বাকী অর্ধেকাংশে সে যেন আল্লাহকে ভয় করে।’’
আল-জামিউস সাগীর ওয়া যিয়াদাতুহ ৬১৪৮
আনাস বিন মালিক রা. বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,
مَنْ رَزَقَهُ الله امْرَأَةً صَالِحَةً فَقَدْ أَعَانَهُ عَلٰى شَطْرِ دِينِهِ فَلْيَتَّقِ الله فِي الشَّطْرِ الْبَاقِي
‘‘আল্লাহ যাকে পুণ্যময়ী স্ত্রী দান করেছেন, তাকে তার অর্ধেক দ্বীনে সাহায্য করেছেন। সুতরাং বাকী অর্ধেকের ব্যাপারে তার আল্লাহকে ভয় করা উচিত।’’
ত্বাবারানীর আওসাত্ব ৯৭২, হাকেম ২৬৮১, বাইহাক্বী, তারগীব ওয়াত তারহীব ১৯১৬
বিবাহের মাধ্যমে কিভাবে দ্বীনের অর্ধেক পূর্ণ হয়?
কোন পুরুষ যদি কোন সৎ-দ্বীনদার নারীকে বিবাহ করতে পারে তাহলে সে যেন জান্নাতে যাওয়ার অর্ধেক পথ অতিক্রম করল। কেননা, দুনিয়াতে মানুষ যত দ্বীন বিরোধী কার্যক্রম, পাপাচার ও অন্যায়-অপকর্ম করে তা দুটির জিনিসের মাধ্যমে করে।
১. দু চোয়ালের মধ্যস্থিত বস্তু তথা মুখ ও জিহ্বা।
২. দু রানের মধ্যস্থিত বস্তু তথা লজ্জাস্থান।
عَنْ سَهْلِ بْنِ سَعْدٍ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللّٰهُ عَلَيْهِ وَسَلَّم مَنْ يَضْمَنْ لِيْ مَا بَيْنَ لَحْيَيْهِ وَمَا بَيْنَ رِجْلَيْهِ أَضْمَنْ لَهُ الْجَنَّةَ-
সাহল ইবনু সা’দ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ:
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি আমার কাছে (এই অঙ্গীকার করবে যে, সে) তার দুই চোয়ালের মধ্যস্থিত বস্তুর এবং তার দু’পায়ের মধ্যস্থিত বস্তুর যিম্মাদার হবে, আমি তার জন্য জান্নাতের যিম্মাদার হব’।
মিশকাত ৪৬০১, বুখারী ৬৪৭৪
সুতরাং কোন ব্যক্তি যদি একজন সৎ নারীকে বিবাহ করে তাহলে এর মাধ্যমে তার লজ্জাস্থান হেফাজত হল। সৎ নারী এ জন্য শর্ত করা হয়েছে যে, অসৎ নারীর কারণে হয়ত সে দ্বীন ও দুনিয়া উভয় ক্ষেত্রে আরও ফেতনা-ফ্যাসাদ ও ক্ষয়-ক্ষতির সম্মুখীন হবে। কিন্তু দ্বীনদার সৎ চরিত্রবান নারী তাকে চরিত্র হেফাযতের পাশাপাশি দ্বীন পালনে সাহায্য করবে। এতে করে সে যেন দ্বীনের পথে টিকে থাকার অর্ধেক অবলম্বন পেয়ে গেলো।
বাকি থাকল আরও অর্ধেক। সুতরাং সে যেন বাকি অর্ধেকের ব্যাপারে আল্লাহকে ভয় করে। সে মুখকে নিয়ন্ত্রণ করবে। মুখে হারাম খাবার ও পানীয় প্রবেশ করাবে না, ভাষাকে নিয়ন্ত্রণ করবে এবং আল্লাহর অসন্তুষ্টি মূলক কোন কথা বলবে না। এভাবে সে দ্বীনের বাকি অর্ধেক পূরণ করবে।
বিবাহ দৃষ্টি নিয়ন্ত্রণকারী, যৌন অঙ্গের পবিত্রতা রক্ষাকারী;
عَنْ عَلْقَمَةَ قَالَ بَيْنَا أَنَا أَمْشِي مَعَ عَبْدِ اللهِ فَقَالَ كُنَّا مَعَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ مَنْ اسْتَطَاعَ الْبَاءَةَ فَلْيَتَزَوَّجْ فَإِنَّهُ أَغَضُّ لِلْبَصَرِ وَأَحْصَنُ لِلْفَرْجِ وَمَنْ لَمْ يَسْتَطِعْ فَعَلَيْهِ بِالصَّوْمِ فَإِنَّهُ لَهُ وِجَاءٌ
‘আলকামাহ (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ:
তিনি বলেন, আমি ‘আবদুল্লাহ (রাঃ)-এর সঙ্গে চলতে ছিলাম, তখন তিনি বললেন, আমরা আল্লাহ্র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সাথে ছিলাম, তিনি বললেনঃ যে ব্যক্তির সামর্থ্য আছে, সে যেন বিয়ে করে নেয়। কে
ননা বিয়ে চোখকে অবনত রাখে এবং লজ্জাস্থানকে সংযত করে। আর যার সামর্থ্য নেই, সে যেন সওম পালন করে। সওম তার প্রবৃত্তিকে দমন করে।
বুখারী ১৯০৫
চলবে.....।
---------------------------------------
লেখকঃ ইসলামিক আর্টিকেল লেখক ও অনলাইন এক্টিভিস্ট।
0 Comments