Recent Tube

চরমোনাইকে দিয়ে ঘুঘু ফাঁদ লাভ কার? কুতুব শাহ।

 চরমোনাইকে দিয়ে ঘুঘু ফাঁদ লাভ কার? 

 দলটির জন্ম লগ্ন থেকেই স্বজাতি বা একই আক্বীদা মনহাজের লোকদের  সাথে দ্বন্দ্বে লিপ্ত। ১৯৮১ সালের ২৯ নভেম্বর তৎকালীন আলেম সমাজের মধ্যমণি মুহাম্মদুল্লাহ হাফেজ্জী হুজুরের নেতৃত্বে প্রতিষ্ঠিত হয় বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলন। সেই দলের গুরুত্বপূর্ণ নেতা ছিলেন চরমোনাই সাবেক পীর সৈয়দ ফজলুল করীম। পরে উক্ত দল ভেঙ্গে ১৯৮৭ সালে আল্লামা আজিজুল হক্বের গঠিত ইসলামী শাসনতন্ত্র আন্দোলনে আশ্রয় নেন। ইসলামী শাসনতন্ত্র আন্দোলনও বেশীদিন টেকেনি। সেদল থেকে বের হয়ে ১৯৮৯ সালের ১২ অক্টোবর আল্লামা আজিজুল হকের নেতৃত্বে গঠিত হয় খেলাফত মজলিশ। যাইহোক, ভাঙ্গা গড়ার লম্বা ইতিহাস। নেতৃত্বের লোভে উস্তাদের সাথে বেয়াদবি করে দল ভাঙ্গেন বলে তাদেরই কওমী এক মুরব্বীর মুখে শুনেছি।

 চরমোনাই দল নিজদের কওমী ট্যাগ লাগিয়ে সুবিধা নিতে চাইলেও কওমীদের বৃহৎ অংশের কাছে এই দলের পরিচয় এখন কীর্তনখোলার করীম ব্রাদার্স কোম্পানি হিসাবে। ইসলামী শাসনতন্ত্রের আমির মুফতী সৈয়দ মুহাম্মদ ফজলুল করীম পীরসাহেব ২০০৬ সালের ২৫ নভেম্বর মারা যান। এরপর দলের আমির নিযুক্ত হন তার তৃতীয় ছেলে মুফতী সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম। এ ছাড়া রেজাউল করীমের দুই ভাই মুফতী সৈয়দ ফয়জুল করীম দলের সিনিয়র নায়েবে আমির ও মাওলানা মোসাদ্দেক বিল্লাহ আল মাদানী প্রেসিডিয়াম সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। এ ছাড়া রেজাউল করীমের অপর দুই ভাইও দলের বিভিন্ন পদে আসীন। ইসলামী শাসনতন্ত্র আন্দোলন বর্তমানে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ নামে নির্বাচন কমিশনের নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল হিসাবে নিবন্ধিত হলেও খেয়াল করেন একটা যৌত ফ্যামিলি ক্লাব। একই ফ্যামিলির সবাই যোগ্য আর তারাই উক্ত দলের নেতা🤣

... কিছুদিন পর পর শুনবেন ইসলামীদল গুলোর ঐক্যের গুঞ্জন। ঐক্য তো দূরে থাক কেউ কাছাকাছি বসলে, দাঁড়ালেও চরমোনাইর দল ঝাপিয়ে পড়ে আগে তা ধূলিস্যাৎ করবে। যেমন, আল্লামা শফির জানাযায় মামুনুল হক্বের পাশে জামায়াত নেতা দেখা গিয়েছিল, ব্যাস। এরপর এমন অবস্থা করেছে বেচারা মামুনুল হক্বকে ফেইসবুকে বিশাল ব্যাখ্যা দিতে হয়েছে তিনি ইচ্ছা করে জামায়াত নেতার পাশে দাঁড়ায়নি। এরপরও চরমোনাইকে জবাবদিহিতা করতে গিয়ে জামায়াতকেও তুচ্ছতাচ্ছিল্য করে বসেন মামুন সাহেব। ওয়েল অসুবিধা নাই। 

এরপর আল্লামা মামুনুল হক্ব সাহেবেরা চরমোনাইর এক প্রোগ্রাম শামিল হলেন তিনি বড় ভাই ফয়জুল করিমের সাথে ফালুদা খাওয়ার স্মৃতি চারণ করলেন। খালেদ সাইফুল্লা আয়ূবী ঐক্য হয়ে জামায়াতকে জমিন থেকে মুছে দেয়ার গরম বক্তৃতা ঝাড়লেন। মুহুর্মুহু করতালিতে ঠিইইইইক বলে মঞ্চ কাঁপালেন সেখানে বাঁশ ছিলনা তাই কেউ লাফিয়ে বাঁশে উঠেনি। ওয়েল সব মচৎকার। অন্তত তারা তারা ঐক্য হল। কিন্তু এক মাস হতে না হতে ফ্রান্স ইস্যুতে আল্লামা মামুনুল হক্ব, নূর হোসাইন কাশেমী মিলে সর্বদলীয় ইসলামী ঐক্যজোটের ব্যানারে বায়তুল মোকাররমে প্রতিবাদ বিক্ষোভের ডাক দিলেন। সর্ব দলীয় ইসলামী ঐক্য নাম হলেও সেখানে চরমোনাইকে রাখা হয়নি। উক্ত স্থানে একই দিন বিক্ষোভ কর্মসূচি দিলেন চরমোনাই ব্রাদার্স কোং। এবার মামুনুল হক্বদের তাড়িয়ে জায়গা দখলে নিলেন চরমোনাইর মুজাহিদেরা। ইন্টারেস্টিং না? ফালুদা খাওয়ানো ঠিকাছে কিন্তু আমাদের বাদ দিয়ে ঐক্য করলে প্যাঁদানি খাবে, হুম।

✍️যাইহোক,  মুসলিম বিশ্ব এখন এক জটিল ফাঁদের শিকার। মুসলমানদেরকে দিয়েই মুসলমানদের মাঝে বিভেদ, ফাসাদ এমনকি হত্যা করা হচ্ছে, এ যেন ঘুঘুর ফাঁদ। ঘুঘুকে দিয়ে ফাঁদ বানিয়ে অন্য ঘুঘুকে খাঁচায় বন্দী করা পাখি শিকারিদের একটা পুরোনো কৌশল। একটা হৃষ্টপুষ্ট ঘুঘুকে আদর-যত্ম করে খাঁচায় রেখে দেয় শিকারি। এ ধরণের ঘুঘু তার শিকারি মালিকের শিসের মাধ্যমে নিয়ন্ত্রিত হয়। যেখানে ঘুঘুর আনাগোনা বেশি সেখানে খাঁচাটি রেখে দেওয়া হয়। এরপর আশেপাশে ঘুঘুর উপস্থিতি টের পেয়ে মালিক শিস বাজায় এবং শিস বাজানোর সঙ্গে সঙ্গে পোষা ঘুঘু খাঁচায় বসে বিশেষ শব্দে ডাকতে শুরু করে। স্বজাতির ডাকে সাড়া দিয়ে নির্ভয়ে ও নির্দ্বিধায় খাঁচায় ঢুকে বন্দী হয়ে পড়ে সাধারণ ঘুঘুরা। পোষা ঘুঘু নিজেও বুঝতে পারে না সে তার স্বজাতির কত বড় ক্ষতি করছে। বর্তমানে জেনে-বুঝে অথবা অজান্তে স্বজাতির সদস্যদের বিভ্রান্ত করে ধ্বংসের মুখে ঠেলে দেওয়া ঘুঘুর ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছেন অনেক মুসলমান। তারা মুসলিম নিধনযজ্ঞের সহায়কে পরিণত হয়েছেন।  

✍️ বাংলাদেশে এখন অন্যদের পোষা ঘুঘু হল চরমোনাইর দল। তাই তারা রফিকীদের মত ভাঁড় দিয়ে কিছুদিন পরপর  তাদের ভাষায় মওদূদীর স্বরুপ উম্মোচন করে, সংখ্যালঘু নির্যাতনের পরিসংখ্যানে চরমোনাইর দল জামায়াতকে জড়িয়ে দেয় আবার তারাই প্রয়োজনে মামুনল হক্বদের কাছে টেনে ফালুদার গল্প শুনে কিন্তু মামুনুল হক্বেরা ঐক্য হচ্ছে দেখলে বায়তুল মোকাররমের প্রোগ্রাম থেকে  তাড়িয়ে জায়গা দখল করে।
----------------------------------------------------------------
লেখকঃ ইসলামিক আর্টিকেল লেখক ও অনলাইন এক্টিভিস্ট। 

Post a Comment

1 Comments

  1. আলহামদুলিল্লাহ লেখা গুলো পড়ে ভালো লাগলো।

    ReplyDelete