Recent Tube

মাওলানা মামুনুল হক এই মুহুর্তে মজলুম। তার পাশে দাড়ানো ইসলামপন্থীদের জন্য অতীব জরুরী, ---অপু আহমেদ।

  মাওলানা মামুনুল হক এই মুহুর্তে মজলুম। তার পাশে দাড়ানো ইসলামপন্থীদের জন্য অতীব জরুরী। তার চিন্তাধারা, রাজনৈতিক অভিজ্ঞতা, চাপ সামলানোর সক্ষমতা মরহুম শাইখুল হাদিস রহ এর লেবেলে যেতে বহু বছর পাড়ি দিতে হবে। 

     ইসলামী সংগঠনের নেতাদের বলবো, তাকে সাহায্য করুন, সাহস দিন। ঘরে বাইরের সকল কুচক্রিদের টার্গেট এখন মামুনুল হক। এই টার্গেটের পেছনে যে কারণটা সব থেকে বড় সেটা হলো তিনি যা কিছু বলছেন, সরাসরি বলছেন। ঘুরিয়ে পেচিয়ে কিছু বলছেন না। বয়োবৃদ্ধ মুরব্বীরা হেকমতের কারণে যেটা বলতে পারছেন না সেটাই তো মামুনুল হক প্রকাশ্যেই  বলছেন। অতএব, তাকে আগলে রাখা সব দলের দায়িত্বের মধ্যে পড়ে।

   এবার মামুনুল হক সাহেবকে কিছু পরামর্শ দেবো।প্রথম ইসলামপন্থী হওয়ার কারণে আমরা জালিম এবং তাদের জুলুমের বিরুদ্ধে উচ্চকিত সকল কণ্ঠগুলোকে আল্লাহর জন্য ভালোবাসি। যারা ভিতরে এক বাহিরে এক  তাদের জন্য আমাদের কোনো বক্তব্য নেই। তাদের শ্লোগান, তাদের হুঙ্কার বাতিলের কানে লাগে না, সেটা আমরা দেখতে পাচ্ছি এক যুগ ধরে। অতএব, আপনার আওয়াজ যাদের কানে লাগছে তারা আপনাকে খুব সহজে ছেড়ে দেবে মনে করলে ভুল করবেন। একটু সতর্ক থাকুন, একাকী চলাফেরা পরিহার করুন।

    আমি বিশ্বাস করি, জামায়াত ইসলামী লক্ষ লক্ষ জনশক্তি আপনাকে ভালোবাসে। এই ভালোবাসা আপনার প্রতিবাদী মানসিকতার জন্যই, আপনি কার সন্তান, কোন দল করেন এগুলো আমাদের কাছে বিবেচ্য নয়। কিন্তু কিছু বাস্তবতার কারণে আমরা আপনার পক্ষে ওপেন কথা বলতে চাচ্ছি না। যেহেতু জামায়াত শিবির বিষয়টি আপনাকেও বিব্রত করে, আপনিও গা বাচিয়ে চলতে চাচ্ছেন, চলুন তাতে আমাদের কোনো সমস্যা নেই এবং আপনাদের প্রতি ভালোবাসা একটুও কমবে না।

    বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি যেভাবে পিচ্ছিল হচ্ছে, সেখানে কে শত্রু, কে মিত্র এটা বুঝার উপায় কেবলমাত্র একটাই। যাদের স্বর যে কোন উপায়ে, পরোক্ষ বা প্রত্যক্ষ ভাবেই হোক না কেন; জালিমের জুলমকে বৈধতা দিচ্ছে তাদের সাথে কথা বলার ক্ষেত্রে নিরাপত্তার বিষয়টি মাথায় রাখুন। আপনি হয়তো জানেন না যে, আপনার কাছের লোকটিই আপনার সব থেকে বড় শত্রু। যাকে ভাই, মুরব্বি বলে মনে করেন সেই আপনার জনপ্রিয়তায় সব থেকে বেশি কাতর। অতএব, শত্রু মিত্রতা পরিমাপ করুন যারা আপনার কাজে সহযোগী, কথায় নয়, এই মানদন্ডে।

    মুসলিম মিল্লাতের প্রতিটি ভূখন্ডে খন্ডবিখন্ড দল, মতের লোকদের আন্তরিকতার ঐক্যকে প্রাধান্য দেওয়া উচিত। সাংগঠনিক ঐক্য এখন শুধুরপরাহত ব্যপার। এ নিয়ে আমাদের কোনো পরিকল্পনা করা উচিত হবে না । আমরা যেটা করেত পারি সেটা হলো অন্তরের ঐক্য, নিয়তের ঐক্য। খুলুসিয়াত ঠিক রাখার ঐক্য। যারাই সত্যিকার অর্থে দ্বীন ক্বায়েম করতে চায়, তারা যেন পরস্পর পরস্পরকে খুটিনাটি বিষয়ের জন্য শত্রু জ্ঞান না করে, গোমরা প্রমাণে ব্যস্ত না হয়ে যায়। পাশাপাশি একের বিপদে অন্য যেন সাড়া দেয়, সেই ঐক্যই আমরা চাই। স্বার্থের কারণে যারা সত্য বলতে ভয় পায়, ঐ ধরনের বর্ণচোরাদের সাথে সাংগঠনিক ঐক্যের কি দরকার ? এতে বরং ক্ষতিই বাড়বে।

     ঐক্যের ফরমুলা হাফিজী হুুজুর রহ অনেক আগেই দেখিয়ে গেছেন। শুধুমাত্র কলেমার ভিত্তিতে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। তবে যারা প্রত্যক্ষভাবে শিরকের সাথে জড়িত, সমকালিন তাগুত, জালেমের সহযোগী, সহরথী বা সুবিধাখোর তাদের বাদ দিয়ে উম্মাহ প্রেমী, তাওহীদে বিশ্বাসী প্রত্যেক দল ও গোষ্টির আন্তরিকতাপূর্ণ সম্পর্ক সৃষ্টিতে ভূমিকা নিন। 

    এই কাজে নিজ ঘরানার পাশাপাশি জামায়াত ইসলামীর নেতৃবৃন্দের সাথেও কথা বলূন। মনে রাখবেন, যতই গা বাচিয়ে রাখতে চান না কেন, স্বার্থের আঘাত আসলে যে কেউ আপনাকে জামায়াত ট্যাগ দিতে পারে, অতএব এটা ভয়ের সাথে নয়, বীরত্বের সাথে মোকাবেলা করুন। যদি ভয় পান তাহলে হেরে যাবেন, ওরাও জাপটে ধরবে আরো বেশি করে।

     কোনো এক লাইভে আপনি বলেছিলেন যে, জামায়াত যদি মাওলানা মওদূদী সম্পর্কে ওলামায়ে হক্কানীদের আপত্তিগুলো নিয়ে নতুন করে চিন্তা ভাবনা করে তাহলে তাদের সাথেও কাজ করা যেতে পারে। এই বিষয়ে আমি দুটো দাবি করবো।
এক- প্রথম হক্কানী ওলামদের সংজ্ঞা জাতির সামনে পেশ করুন এবং তাদের তালিকা পেশ করুন! এবং তাদের করা আপত্তিগুলো নোট করুন, অতঃপর নিজ জিম্মায় যাছাই বাছাই করতে মওদূদী রহ এর বইগুলো থেকে সরাসরি অধ্যায়ন করে নিজের মতামত জামায়াত নেতৃবৃন্দের কাছে পেশ করুন। ইনশাআল্লাহ তারা আপনাকে হতাশ করবে না। আপনার ঘরানার ওলামারাই হক, আশা করছি এমন উগ্র চিন্তাধারা পোষন করার লোক আপনি নন। এই চিন্তাধারাই উম্মাহকে বিভক্ত করছে। আশা করছি এই লাইনে সামান্য কষ্ট স্বিকার করবেন।

      দুই-জামায়াত ইসলামী তার দলের গঠনতন্ত্রে, আক্বীদা বিশ্বাসে, ফিকহী ইখতেলাফের কোন স্তরে মাওলানার চিন্তাধারা দলের ভিতরে চালিয়ে দিচ্ছে বা অনুসারী বলে মনে করেন সেগুলোও যত্ন সহকারে নোট করুন। আল্লাহর ভয় অন্তরে ধারণ করে, উম্মাহর কল্যানে এই সামান্য কাজটুকো করুন। ইনশআল্লাহ কেন্দ্রিয় জামায়াত আপনার ওপরে কৃতজ্ঞ থাকবে। কারণ আমার জানা মতে জামায়াতের কোনো স্তরের দায়িত্বশীল ব্যক্তি বা জনশক্তিরা মওদূদী র কে আক্বায়েদ, বা ফিকহের ইমাম মনে করে না। যদি দেখাতে পারেন তাহলে আমরা তার ওপরে অধ্যায়ন করতে পারবো। তবে, দয়া করে মনসুরুল হক বা সাঈফি টাইপের মিথ্যকুদের চটি কিতাব থেকে মওদূদী বিরোধী রেফারেন্স ধার করা থেকে নিজেকে পবিত্র রাখুন। আপনার মতো মেধাবীর জন্য এটা মানানসই নয়। ঐগুলো মুর্খ, বাটপারদের হাতিয়ার।

   আমরা অনলাইনে হাজারো ভাই আপনার এই প্রচেষ্টার অপেক্ষায় থাকবো ইনশাআল্লাহ। আল্লাহ আপনাকে কবুল করুন, জালিমের রোষানল থেকে হেফাজত রাখুন। 
------------------------------------------------------------------ 
লেখকঃ ইসলামিক আর্টিকেল লেখক ও অনলাইন এক্টিভিস্ট। 

Post a Comment

0 Comments