Recent Tube

দ্বীনি প্রশ্নোত্তর।

 প্রশ্ন:
গত তিন মাস আগে আমার মেয়ে গর্ভে মারা যায় এবং গত এক মাস আগে আমার ভাইয়ের একটি ছেলে জন্মের চার দিন পর মারা যায়। এখন আমার প্রশ্ন হল আমার মেয়ের এবং আমার ভাইয়ের ছেলের কি আকীকা এবং নাম রাখতে হবে কিনা? যদি আকীকা না দেওয়া হয়, তাহলে কি কিয়ামতের মাঠে তাদের সাফায়াত পাওয়া যাবে না?
ত্ত  ;
 দুআ করি মৃত সন্তানগণ যেন কিয়ামতের দিন আপনাদের জান্নাতে প্রবেশের কারণ হয়।
অত:পর-
জানা প্রয়োজন যে, আকীকা দেয়া সুন্নতে মুয়াক্কাদা; ফরজ বা ওয়াজিব নয়। কেননা হাদীসে এসেছে:
🔸 রাসূসুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেনঃ
(من أحب منكم أن ينسك عن ولده فليفعل)
“যে ব্যক্তি তার সন্তানের আকীকা করতে চায়, সে যেন উহা পালন করে”। (আহমাদ ও আবু দাউদ)
🔸 আরেক হাদীসে বর্ণিত হয়েছে, রাসূল সা. বলেন:
كُلُّ غُلامٌ مُرْتَهَنٌ بِعَقِيقَتِهِ
“ প্রত্যেক বাচ্চা তার আক্বীকার বিনিময়ে বন্ধক থাকে। [সহীহ ইবনু মাজাহ, অধ্যায়, যাবাইহ, নং ৩১৬৫/আবু দাউদ/তিরমিযী/নাসাঈ]

শাইখ বিন বায রহ. বলেন: উপরোক্ত হাদীসগুলো সকল প্রকার ভূমিষ্ট সন্তানকে শামিল করে-চাই সে জীবিত অবস্থায় ভূমিষ্ট হোক অথবা মৃত অবস্থায় হোক। অর্থাৎ সন্তান জীবিত থাকলে যেমন তার আকীকা করা সুন্নতে মুআক্কাদা তেমনি যদি মাতৃগর্ভে থাকা অবস্থায় শরীরে রূহ ফুঁকার পর ( পাঁচ মাস বা তার চেয়ে বেশি বয়সের সন্তান) যদি মারা যায় তার বেলায়ও তা প্রযোজ্য।

সুতরাং রূহ ফুঁকার পর সন্তান যদি মাতৃগর্ভে মারা যায় তাহলে গর্ভপাত হওয়ার পর তার পক্ষ থেকে আকীকা দেয়া হলে পিতামাতা একটি সুন্নত পালনের কারণে সওয়াব পাবেন ইনশাআল্লাহ। কিন্তু যদি আকীকা না দেয় তাহলে কোন গুনাহ নাই। কারণ তা সুন্নত; ফরজ বা ওয়াজিব নয়।

উল্লেখ্য যে, উক্ত মৃত সন্তানের নাম রাখা, আকীদা দেয়া, কাফন-দাফন, জানাযা সব কিছুই প্রযোজ্য হবে। কারণ এ মর্মে বর্ণিত হাদীসগুলো আমভাবে বর্ণিত হয়েছে। তাই জীবিত ও মৃত উভয় প্রকার সন্তানই এর মধ্যে শামিল হবে।

নাবালক অবস্থায় সন্তান মৃত্যু বরণের ফযীলত:

আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ
مَا مِنَ النَّاسِ مِنْ مُسْلِمٍ يُتَوَفَّى لَهُ ثَلاَثٌ لَمْ يَبْلُغُوا الْحِنْثَ، إِلاَّ أَدْخَلَهُ اللَّهُ الْجَنَّةَ بِفَضْلِ رَحْمَتِهِ إِيَّاهُمْ ‏”‏‏.‏
“কোন মুসলিমের তিনটি সন্তান সাবালক হওয়ার আগে মারা গেলে তাদের প্রতি রহমত স্বরূপ অবশ্যই আল্লাহ তা’আলা ঐ ব্যাক্তিকে জান্নাতে দাখিল করবেন।”[ সহীহ বুখারী – ১১৭৬ ]

অন্য একটি হাদীসে এসেছে:
‏ أَيُّمَا امْرَأَةٍ مَاتَ لَهَا ثَلاَثَةٌ مِنَ الْوَلَدِ كَانُوا حِجَابًا مِنَ النَّارِ ‏”‏‏.‏ قَالَتِ امْرَأَةٌ وَاثْنَانِ‏.‏ قَالَ ‏”‏ وَاثْنَانِ ‏”‏‏.‏
যে স্ত্রীলোকের তিনটি সন্তান মারা যায়, তারা তার জন্য জাহান্নামের প্রতিবন্ধক হবে। তখন এক মহিলা প্রশ্ন করলেন, দু’ সন্তান মারা গেলে? তিনি বললেন, দু’ সন্তান মারা গেলেও। [ সহীহ বুখারী – ১১৭৭ ]

 আল্লাহু আলাম।
    ▬▬●❖●▬▬
উত্তর প্রদানে:
আব্দুল্লাহিল হাদী বিন আব্দুল জলীল
(লিসান্স, মদীনা ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়)
দাঈ, জুবাইল দাওয়াহ এন্ড গাইডেন্স সেন্টার, সউদী আরব।

Post a Comment

0 Comments