Recent Tube

ধর্ষন এর ভয়াবহতা এবং তা প্রতিকারের উপায় : পর্ব ১


 
 

  র্ষ এর ভয়াহতা বং তা    
  প্রতিকারের পা
                             র্ব ১;
---

   সময় যতই গড়াচ্ছে, নবুয়তের জামানা থেকে আমরা যতই দূরে যাচ্ছি, ততই গুনাহের পরিবেশ ধীরে ধীরে আরো ভারী হচ্ছে। ধর্ষণের ব্যাপারে এতো বেশি সংবাদ যা খুবই কষ্টকর, খারাপ লাগে। মুমিন মাত্রই তার শুনতে খারাপ লাগে। চতুর্দিকেই শুধু দুঃসংবাদ আর দুঃসংবাদ। ধর্ষণের সংবাদ, বিভিন্ন হত্যাকাণ্ডের সংবাদ, আরো নানান বিষয়, খুবই কষ্টকর। মুমিনের দুনিয়ার হায়াতের যিন্দেগী বড়ই কষ্টকর। যাই হোক হতাশ হলে চলবে না। 

   মুমিনের কাজই হল আল্লাহকে সর্বদা সন্তুষ্ট রাখার কাজে নিজেকে নিয়োজিত রাখা। যে কাজে আল্লাহ তা'লা  সন্তুষ্ট হন, সে কাজে মগ্ন থাকা।
যে কাজে আল্লাহ তা'য়ালা নারাজ হন, সেখান থেকে হাজার মাইল দূরে থাকা। এটাই হচ্ছে বান্দার প্রথম এবং সবচেয়ে ভারী দায়িত্ব। আল্লাহ পাক নিজ দয়ায় আমাদেরকে তৌফিক দান করেন।

   তো এত এত ধর্ষণ। এর কারণ কি? এর সমাধানই বা কি? এগুলো নিয়ে চিন্তা করলে যে বিষয়টা বুঝা যায়, কিছু কারণ এমন আছে, যেগুলো ব্যক্তিগত উদ্যোগের মাধ্যমে, পারিবারিক উদ্যোগের মাধ্যমে সমাধান করা সম্ভব। ব্যক্তি উদ্যোগ পারিবারিক উদ্যোগ যদি গ্রহণ করা হয় দেখা যাবে যে, আমরা আশাবাদী বর্তমানে যে সকল ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে তার সিংহভাগই কমে যাবে।

   কিছুদিন আগে পত্রিকায় একটি খবর পড়লাম যে, ৬৮ বছরের এক বৃদ্ধ লোক ১৩ বছরের  কিশোরীকে ধর্ষণ করেছে। ঐ মেয়ে বৃদ্ধ লোকের বাড়িতে কাজ করতো। সে ধর্ষণ করেছে। পরে ঐ মেয়ে গর্ভবতী হয়ে গিয়েছে। এই ঘটনা নিয়ে যদি আমরা একটু চিন্তা করি, এই ধর্ষণের কারণ কি? 
সম্ভাব্য কারণ যা বুঝা যায় সেটা হচ্ছে ঐ লোকটির বয়স ৬৮ বছর। আর তার স্ত্রীর বয়স হতে পারে ৬০/৬২ বছর। আমাদের দেশের অবস্থা হলো স্বামী স্ত্রীর দুজনের বয়স কাছাকাছি থাকে। হয় সমান সমান অথবা দু চার বছরের ছোট বড়। স্বামী দুই চার বছরের বড় থাকে। সেই হিসাবে এই ৬৮ বছর  বৃদ্ধের স্ত্রীর বয়স হতে পারে ৬০/৬২ বছর হবে। আর মহিলাদের যৌন সক্ষমতা ৫০/৫২ বা সর্বোচ্চ ৫৫ বছর পর্যন্ত থাকে। এরপরে তার স্বামীর চাহিদা সে পুরা করতে সক্ষম হয় না। মহিলার যৌন জীবন তখন আর বাকি থাকে না। 

   আর পুরুষদের ব্যাপারটা ভিন্ন। সব মানুষের একরকম না। অন্যান্য বিষয় যেমন শারীরিক শক্তি, খাবারের চাহিদা ইত্যাদি বিভিন্ন বিষয় যেরকম মানুষের ভিন্ন ভিন্ন হয়ে থাকে, কারো বেশি কারো কম। এই বিষয়টাও সব পুরুষের এক সমান না। কোনো পুরুষের চাহিদা থাকে বেশি। আর এ কারণেই শরীয়ত সুযোগ রেখেছে। আল্লাহ পাক  সুযোগ দিয়ে রেখেছেন যে, একসাথে সে চার জন স্ত্রী রাখতে পারবে। আবার কোনো কোনো পুরুষ আছে তার এক স্ত্রী দিয়েই জরুরত পুরা হয়ে যায়, তার চাহিদা কম।

  যার চাহিদা বেশি তাকে যদি বলা হয়, তুমি এক স্ত্রী নিয়েই জীবন কাটাও। তাহলে তো তার উপর জুলুম করা হল। যদি বাস্তবতা এরকম হয় যে, কোনো পুরুষের চাহিদা বেশি এবং তার আর্থিক সঙ্গতিও আছে এবং সে তার স্ত্রীদের উপর জুলুমও করবে না। সে সমতা রক্ষা করে চলবে। তাহলে তো তাকে দ্বিতীয় বিয়ে করতে বাধা দেওয়া মোটেও ঠিক না। বরং গুনাহ হবে। 

   যা বলতেছিলাম, ঐ ৬৮ বছরের বৃদ্ধের স্ত্রী তো এখন তার স্বামীর যৌন চাহিদা পুরা করতে পারছে না। আবার আমাদের সামাজিক অবস্থা হলো কোনো পুরুষের বয়স যখন ৬০/৬৫ বছর হয়ে যায়, তখন সে দ্বিতীয় বিয়ে করবে, সমাজও তা মেনে নেয়না। তার স্ত্রী মেনে নেয় না, তার ছেলে মেয়েরা মেনে নেয় না, তার আত্মীয় স্বজনরা মেনে নেয় না। তখন ঐ লোক পরে বিপদে। এখন সে কি করবে?
   বৈধ পন্থায় সে তার শারীরিক চাহিদা পূরণ করতে পারছে না। এজন্য তখন সে ভিন্ন পথে হাঁটে। সে তখন গুনাহের দিকে চলে যায়। তার নফস তখন কড়া দৃষ্টি রাখে, কোথায় তার খায়েশাত পুরা করতে পারবে। তো সে দেখেছে যে, এই মেয়েকে সহজেই পাওয়া যায়, তার বাড়িতেই কাজ করে। ব্যাস, সে এখানে ঝাঁপিয়ে পড়েছে। এই হচ্ছে আমাদের সামাজিক অবস্থা।

  আর এরকম ঘটনা সব প্রকাশ হচ্ছে, বিষয়টা এরকম না। খুব কমই প্রকাশ পাচ্ছে। যে বিষয়টি শুরুতেই বলেছিলাম যে, আমরা যদি আমাদের ব্যক্তিজীবনে ও পারিবারিক জীবনে ইসলামকে  প্রতিষ্ঠিত করার জন্য চেষ্টা করতাম, তাহলে এই ধরনের ঘটনা তো ঘটার কথা না। কোনো পুরুষ যখন বুঝতেছে তার বয়স যদিও এখন ৬০/৬৫ বছর হয়ে গিয়েছে কিন্তু তার শারীরিক চাহিদা আছে। অন্যদিকে তার স্ত্রী সেই চাহিদা পূরণ করতে সক্ষম না, তখন তো তার জন্য দ্বিতীয় বিয়ে করা জরুরী হয়ে যায়।

  যদি কোনো পুরুষ মনে করে যে, দ্বিতীয় বিয়ে না করলে এখন আমার দ্বারা গুনাহ হয়ে যাওয়ার প্রবল আশঙ্কা আছে। তখন তো তার জন্য দ্বিতীয় বিয়ে করা জরুরী হয়ে পরে। কিন্তু আমাদের সামাজিক অবস্থান তো ভিন্ন। যা আগেই বলা হয়েছে। 

  আসলে মূল বিষয় হলো ইসলাম থেকে আমরা যতটা দূরে থাকব, আল্লাহ পাক আমাদের যে হুকুম আহকাম দিয়েছেন, তা থেকে আমরা যতটা দূরে থাকবো দুনিয়ার জীবনে আমরা ততটাই লাঞ্চিত হব। আখেরাতের জীবনেও ততটা লাঞ্ছিত হবে। নাউযুবিল্লাহ

   এ লাঞ্চনা থেকে বাঁচার একমাত্র উপায় হলো সর্বশেষ নবী হযরত মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লামের সুন্নত শরীয়তকে শক্তভাবে, মজবুত ভাবে আঁকড়ে ধরা। নবীজি সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম হাদীসের মধ্যে পরিষ্কার ভাবে বলেছেন- "যে ব্যক্তি আমার সুন্নত কে ভালোবাসলো মুহাব্বত করল, সে যেন আমাকেই মুহাব্বত করল, আমাকেই ভালবাসলো। আর যে আমাকে মুহাব্বত করলো, সে জান্নাতে আমার সঙ্গে থাকবে।" -তিরমিযী

    শরীয়তের হুকুম হচ্ছে বয়স ৫০ বছর হোক ৬০/৭০ বছর যাই হোক। যখন কোনো পুরুষ মনে করবে যে, আমার স্ত্রী আমার শারিরিক চাহিদা মেটাতে সক্ষম না, এখন যদি আমি দ্বিতীয় বিয়ে না করি তাহলে আমার দ্বারা গুনাহ হয়ে যাওয়ার প্রবল আশঙ্কা আছে। তখন তার জন্য তো বিয়ে করা জরুরী। তখন বিয়ে করা শুধু সুন্নত থাকে না বরং ওয়াজিব হয়ে যায়। আল্লাহ তা'লা আমাদেরকে শরীয়তের উপর অটলভাবে চলার তৌফিক দান করেন। আমীন... (চলবে ইনশাআল্লাহ)
২১/৪/২০২০;
রবিউল আকরাম।
সহযোগীতায় - মুহাম্মাদ মুনতাছির। 

Post a Comment

0 Comments