সমালোচনা নাকি বিদ্বেষ?
“স্কুলে ছাত্রীরা নিরাপদ নয়। লম্পট শিক্ষক ও ছাত্রদের দ্বারা তারা যৌন হেনস্তার শিকার হয়। সুতরাং মেয়েকে স্কুলে পাঠানোর আগে আরও একবার ভাবুন,তাকে কার কাছে পাঠাচ্ছেন......! ”
উপরের কথাগুলো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রতি খুবই নিম্নমানের অযাচিত আক্রমণ মনে হচ্ছে, তাইনা? এটাই স্বাভাবিক।
অথচ স্কুল কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রী /শিক্ষিকাকে যৌন হয়রানির ঘটনা আমাদের নিকট অতি পরিচিত। পত্রিকায় পাতা খুললেই প্রতিনিয়ত এমন ঘটনা আমাদের চোখে পড়ে। এখন আমরা এমন সংবাদে আর অবাকও হইনা। হয়তো কষ্ট পাই, প্রতিবাদ করি,ভিক্টিমদের পাশে দাঁড়াই, যৌন হেনস্তাকারীর যথাযথ বিচার চাই........ কিন্তু শিক্ষা প্রতিষ্ঠান/ব্যবস্থার প্রতি আমাদের সম্মান অটুট থাকে,কারণ অন্যায়ের জন্য অন্যায়কারী নিজেই দায়ী। একজন কুলাঙ্গারের জন্য পুরো শিক্ষা প্রতিষ্ঠান/ব্যবস্থা,সকল শিক্ষকমন্ডলী,ছাত্র-ছাত্রীদের কখনোই দায়ী করা শুধু অন্যায়ই নয় অপরাধও বটে।
“মাদরাসায় কোমলমতি শিশুরা তাদের হুজুর কতৃক বলাৎকার হয়। সুতরাং আপনার আদরের শিশুকে কার হাতে তুলে দিচ্ছেন আরেকবার ভাবুন..... ”
এই টাইপের বাঁকা ইঙ্গিতপূর্ণ বাক্য কয়েকদিন থেকেই নিউজফিডে বারংবার চোখে পড়ছে। পোস্টগুলোর কমেন্ট বক্সে হুজুর ও মাদরাসার প্রতি বিষেদাগার চোখে পড়ার মতো!
জেনারেল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অহরহ যৌন হয়রানির জন্য আমরা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে দায়ী না করলেও মাদরাসার ক্ষেত্রে অনেকে প্রতিষ্ঠানকে ঠিকই দায়ী করছেন, এটা কি নিরপেক্ষ সমালোচনা? এটা কি সুস্থ বিবেচনা?
মসজিদ -মন্দির কিংবা রাস্তা পৃথিবীর যেখানেই যৌন হয়রানি ঘটুক,তা নিঃসন্দেহে অন্যায়।
স্কুলে যৌন হয়রানি হয় একথা যেমন সত্য মাদরাসার ক্ষেত্রেও তেমনই সত্য,যদিও স্কুল-কলেজের তুলনায় তা খুবই কম। মাদরাসায় এই অপকর্মগুলোকে সর্বোচ্চ “বিচ্ছিন্ন পর্যায়ের” ঘটনা বলা যেতে পারে।
মাদরাসা কতৃপক্ষ এসব নরপশুদের ব্যাপারে সর্বদা জিরো টলারেন্স নীতির উপর অটল থাকে এবং সাধ্যের মধ্যে সর্বোচ্চ ক্ষমতা প্রয়োগ করে তাদের প্রাতিষ্ঠানিক শাস্তি নিশ্চিত করে। মাদরাসায় এসব কুলাঙ্গার কি পরিমাণ ঘৃণিত তা কল্পনাতীত, আমি নিজে তার সাক্ষী!
অসংখ্য পথহারা মানুষকে আলোর পথ দেখানো আলেমগণ মাদরাসা থেকেই শিক্ষা নেন। জেলখানায় গিয়ে দেখুন জেনারেল শিক্ষিতদের তুলনায় শতকরা কতজন অপরাধী মাদরাসা পড়ুয়া! কিন্তু দুঃখজনকভাবে কতিপয় সমালোচনাকারী এই অপকর্মের দায় সরাসরি মাদরাসা শিক্ষা ব্যবস্থার উপর চাপিয়ে সমাজে ভুল মেসেজ ছড়াচ্ছে,যা নির্জলা অপবাদ বৈকি! গঠনমূলক সমালোচনা সবার অধিকার কিন্তু সমালোচনা যেন বিষেদাগার না হয় এটাই কাম্য!
--------------------------------------------------------
লেখকঃ ইসলামিক আর্টিকেল লেখক কলামিস্ট শিক্ষক ও অনলাইন এক্টিভিস্ট।
0 Comments