Recent Tube

তাফহিমুল কুরআন এমন একটি কিতাব যা পড়লে মৃত হৃদয়ে বিল্পব শুরু হয়ে যায়।৷ --- ইবনে যুবাইর।






 
 তাফহিমুল কুরআন এমন একটি কিতাব যা পড়লে মৃত হৃদয়ে বিল্পব শুরু হয়ে যায়।


    আমাদের পাশের মসজিদের ঈমাম।তিনাকে চাকরি করে দিতে আমার শ্রম ছিল সাধ্যমত।ঈমামের প্রথম জু্ময়া খুতবা শোনার জন্য আমি সেই মসজিদে উপস্হিত হলাম।

     খুতবা শুরু হল জান্নাত জাহান্নামের আলোচনা দিয়ে এবং শেষও করলেন  জান্নাত ও জাহান্নাম কয়টি আছে এই নামের তালিকা প্রকাশ করে।এই আলেম আলিয়া মাদারসা থেকে শিক্ষা দিক্ষা গ্রহণ করেছেন।

    আমি তার খুতবা শুনে আর জ্ঞানের সংকৃর্ণতা দেখে রীতিমত অবাক হয়েছিলাম।পরে তাকে বললাম,শুধু ঈমাম হিসাবে বা ঈমামতি করার জন্য নয়,মুসলমান হিসাবে কুরআন হাদিসকে ভালোভাবে জানুন,বুঝুন।শুধু এখানেই শেষ নয়,বর্তমান বিশ্ব ব্যবস্হাকে জানুন,বুঝুন,অনেক কাজে দেবে।

    অন্যজন কওমি ঘরানার আলিম,দাওরা পাস।তিনি বললেন,মামু,খুব মানবেতর জীবনযাপন করছি,যদি কিছুমিছু(ঈমামতি)'র একটা ব্যবস্হা  করে দিতেন।
তারও ব্যবস্হা হল।খুতবা দেয়ার মত পর্যাপ্ত জ্ঞান তার আছে বলে মনে হয়নি।ভাবলাম,দুইজন দুই ঘরানার আলিম,দুইজনেরই একই অবস্হা।কিন্তু আলেম হবার পরও বিষয়টি এমন হবে কেন?তারা কি কুরআন হাদিস বুঝেন না,নিশ্চয় বুঝেন?

     এক বিকালে আলিয়া আলিমের সাথে সাক্ষাত হল,বাজারে।তাকে ডাকলাম,কুশল বিনিময় হল।তিনি স্বহাস্যে বললেন,আপনার পরামর্শ আমার জন্য খুব ফলপ্রসূ হয়েছে।আমার মধ্যে যে জড়তা,অজ্ঞতা কাজ করছিল সেটা কাটিয়ে উঠা সম্ভব হয়েছে।

      এরপর কিছুক্ষণ নীরব থেকে বললেন,আল্লাহু আকবার!তিনি এমন একজন বড় মাপের ইসলামী চিন্তাবিদ,সমাজ ও রাষ্ট্র সংস্কারক তা কোনদিন জানা হয়নি।আল্লাহ তাকে জান্নাতের সুউচ্চ মাকাম দান করুন।

     এর কিছুদিন পর কওমী মামুর সাথে দেখা হলে সালাম বনিময়ের পর স্বহাস্যে তিনি বললেন,মামু,এতদিন একটা ঘোর অমানিশার মধ্যে ছিলাম।আপনার পরামর্শে দু চোখের ছানি কেটে গিয়ে গাড় কালো অন্ধকার সরে গিয়েছে।

     এমন একজন উঁচুমানের ইসলামী চিন্তাবাদি সমাজ ও রাষ্ট্রবিজ্ঞানীকে নিয়ে অনেক কটু বলেছি,শুনেছি। আপনার পরামর্শে তার লেখা বই পড়ে আমাকে বিমুগ্ধ করেছে এবং গোত্রীয় কুসংস্কারের প্রাচীর ভেঙ্গে  আমি এখন রিপোর্ট রাখা শুরু করছি।দুয়া রাইখেন,আল্লাহু যেন কবুল করেন।

    ক'দিন পর মামুর মুখ কালো দেখে কারণ জানতে চাইলে একটা ম্লান হাসি দিয়ে তিনি বললেন,চাকরিটা হয়তো আর থাকছে না,মামু।বললাম,কেন কি হয়েছে?

     তিনি বললেন,আমারই স্বগোত্রীয় ওমুক আলেম আমার জায়গায় নিয়োগ নিচ্ছেন!বললাম,তিনি তো নাবালিকা ছাত্রীদের সাথে কি যেন করার  কারণে অন্য এক মসজিদ ও ঈদগাহের খতিব থেকে প্রত্যাখাত হয়েছেন,তবে যে?

      মামু বললেন,আমার চেয়েে তার বয়স,জ্ঞান- অভিজ্ঞতা বেশি, শুনছি এইটায় নাকি কারণ ।বললাম,ঠিক বলেছেন,আপনার থেকে সব বিষয়ে তার অভিজ্ঞতা বেশি,হ সব বিষয়ে!নিজেকে ছোট করে ওখানে চাকরি করার দরকার নেই,মামু।ওরা আপনাকে তালাক দেয়ার আগেই আপনি ওদের তালাক দিয়ে দিন।
মামু তাই করেছিলেন।

    মাস তিন পর মামুর সাথে দেখা।স্বহাস্যে তিনি বললেন,আপনার দুটোয় পরামর্শ আমার খুব উপকার দিছে।তারা আমাকে তালাক দেয়ার আগেই আমি তাদের তালাক দিছি,এতে আমার মানসম্মান অক্ষুণ্ণ ছিল।এখন আমি সম্মানের সাথে বেশি বেতনে চাকরি করছি,আল হামদুলিল্লাহ!

   আর ইসলামের বুনিয়াদি শিক্ষা বই এবং তাফহিমুল পড়ার পর খুতবার পুরো ধরণই আমার পাল্টে গিয়েছে।

    ইসলামের বুনিয়াদী শিক্ষা বইটি সেই ,ইসলামকে সহজ করে বুঝার জন্য এই বইয়ের কোন তুলনা হয় না,মামু। আর তাফহিমুল এমন একটি কিতাব যা পড়লে মৃত হৃদয়ে বিল্পব শুরু হয়ে যায়।

    মৃদু হেসে বললাম,আমি প্রথমে যখন ইসলামের বুনিয়াদি শিক্ষা বইটি পড়ছিলাম তখন তার প্রতিটি বাক্য গোগ্রাসে গিলে ফেলছিলাম।প্রতিটি খতিব যদি এই বইটি পড়ে এবং পড়া দরকার-তাহলে তিনি বুঝতে পারবেন,বইটির শব্দ চয়ন এবং কথামালাগুলো ইসলামকে সহজলভ্য করে পেশ করার জন্য অনন্য একটি বই এটি।

Post a Comment

0 Comments