Recent Tube

সাইয়েদ আবুল আ'লা মওদুদী (র.) এর সংক্ষিপ্ত জীবনী। শামীম আজাদ।


সাইয়েদ আবুল আ'লা মওদুদী (র.) এর সংক্ষিপ্ত জীবনী
=============

জন্মঃ ২৫ সেপ্টেম্বর ১৯০৩
আওরঙ্গাবাদ, মহারাষ্ট্র, হায়দ্রাবাদ, ব্রিটিশ ভারত।
মৃত্যুঃ ২২ সেপ্টেম্বর ১৯৭৯ (৭৫ বছর)
বাফেলো, নিউ ইয়র্ক, যুক্তরাষ্ট্র।

যুগ আধুনিক যুগ, বিংশ শতাব্দী
অঞ্চল মুসলিম বিশ্ব (বিশেষতঃ ভারতবর্ষ)
ধারা সুন্নি ইসলাম এবং মুজতাহিদ
আগ্রহ তাফসির, হাদিস, ফিকাহ, রাজনীতি, অর্থনীতি, সংস্কৃতি
অবদান “We cannot expect the rest of mankind to embrace Islam without any effort on our part”

ভাবগুরুঃ
শাহ ওয়ালিউল্লাহ, ইবনে তাইমিয়া, ইবন আল কাইয়িম, হাসান আল বান্না, আল্লামা ইকবাল, মাওলানা মুহাম্মাদ আলী জাওহার।

ভাবশিষ্যঃ
সাইয়েদ কুতুব, জালালুদ্দিন উমরি, ইউসুফ ইসলাহী, ইসরার আহমেদ, হাফিজ সাঈদ, সাইয়েদ আলী শাহ গীলানী, মালিক গুলাম আলী , তুফাইল মুহাম্মাদ , ইউসূফ আল-কারযাভী, গোলাম আজম, কাজী হুসাইন আহমাদ।

সাইয়েদ আবুল আ'লা মওদুদী (২৫ সেপ্টেম্বর ১৯০৩ - ২২ সেপ্টেম্বের ১৯৭৯), যিনি মাওলানা মওদুদী, বা শাইখ সাইয়েদ আবুল আ'লা মওদুদী নামেও পরিচিত, ছিলেন একজন মুসলিম গবেষক, সাংবাদিক, রাজনৈতিক নেতা ও বিংশ শতাব্দীর একজন গুরুত্বপূর্ণ ইসলামী চিন্তাবিদ ও দার্শনিক।

  তিনি তার নিজ দেশ পাকিস্তানের একজন গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বও ছিলেন। তিনি জামায়াতে ইসলামী নামক একটি ইসলামী রাজনৈতিক দলেরও প্রতিষ্ঠাতা।

 তিনি ছিলেন ২০ শতাব্দীর সবচেয়ে প্রভাবশালী মুসলিম স্কলারদের মধ্যে একজন।

   তিনি ইতিহাসের দ্বিতীয় এবং সর্বশেষ ব্যক্তি যাহার গায়েবানা জানাজার নামাজ পবিত্র কাবাতে পড়া হয়।

প্রভাব ও ধারাবাহিকতা:

   মাওলানা মওদুদীর প্রভাব ছিল ব্যাপক। ইতিহাসবেত্তা ফিলিপ জেনকিন্সের মতে, মিসরের হাসান আল বান্না এবং সাইয়েদ কুতুব তার বই পড়ে অনুপ্রাণিত হন। সাইয়িদ কুতব তার কাছ থেকে আদর্শ গ্রহণ করেন এবং এটি আরো সম্প্রসারিত করেন। তিনি একটি অগ্রগামী ইসলামী বিপ্লবী দল গঠনের প্রয়োজনীয়তার কথা বলেন। ফিলিস্তিনি ইসলামপন্থী জুরিস্ট আবদুল্লাহ আযযামও তার আদর্শে অনুপ্রাণিত হন। দক্ষিণ-এশীয় জনগন (বিরাট সংখ্যক ব্রিটেন প্রবাসী সহ) মাওলানা মওদুদীর দ্বারা ব্যাপকভাবে প্রভাবিত হয়েছেন। এমনকি শিয়া অধ্যুষিত ইরানেও মওদুদীর বড় ধরণের প্রভাব আছে। ইরানের ইসলামী বিপ্লবের নেতা আয়াতুল্লাহ রুহুল্লাহ্ খোমেনী ১৯৬৩ সালে মাওলানা মওদুদীর সাথে সাক্ষাত করেন, পরবর্তীতে ইমাম খোমেনী মওদুদীর বইগুলো ফার্সি ভাষায় অনুবাদ করেন। এখনো পর্যন্ত প্রায়শঃই ইরানের ইসলামী সরকার মাওলানা মওদুদীর কর্মপন্থা অনুসরন করে থাকে।

    ইমাম ইবনে তাইমিয়ার পর তিনি (মওদুদী) দ্বিতীয় চিন্তাবিদ যিনি আধুনিক বিশ্বে ইসলামী রাজনৈতিক চিন্তাধারা-কে প্রভাবিত করেছেন।

মওদূদীর (র.) প্রচলিত ইলমি সনদ :

১. তাকে যারা চিনতেন এবং তার সাথে কাজ করতেন তারা জানতেন তিনি একজন আলিম; এমনকি যারা পরে তার সংশ্রব থেকে দূরে সরে গিয়েছিলেন তারাও তার আলিম হওয়াকে অস্বীকার করতেন না। তার সাথে অন্য বিষয়ে মতভেদ করতেন বলে দূরে সরে গিয়েছিলেন। কিন্তু কিছু লোক যারা নিজেরা মূলত আলিম নয়, তারাই তার বিরুদ্ধে কুৎসা রটায় এবং বলে যে তিনি আলিম ছিলেন না।

২. ইসলামে আলিম হবার নিয়ম কী? আলিম হবার নিয়ম হচ্ছে আপনি একজন আলিমের তত্ত্বাবধানে নির্দিষ্ট বিষয় অধ্যয়ন করবেন। এরপর আপনার উস্তাদ যখন নির্দিষ্ট বিষয়ে আপনি পারঙ্গম হয়েছেন বলে নিশ্চিত হবেন তখন তিনি আপনাকে ইজাযাহ (সনদ) দান করবেন। এভাবে আপনি ঐ বিষয়ে আলিম হবেন। ইসলামে আলিম হবার এটাই হচ্ছে প্রচলিত পদ্ধতি। এই পদ্ধতিতেই আলিম হয়েছেন আমাদের আগের দিনের উলামারা - আয়িম্মায়ে আল-মুজতাহিদীন, মুহাদ্দিসীনগণ সবাই। এখনকার মাদ্রাসা বা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি নেওয়াটা মূলত ঐ ইজাযাহ পদ্ধতি থেকে চলে আসা পথ।

৩. উস্তাদ সাইয়েদ আবুল আ’লা মওদূদী (রহিমাহুল্লাহ) মূলত সেই প্রচলিত ইসলামী ইজাযাহ পদ্ধতিতে গড়ে ওঠা আলিম। তিনি ইসলামের মৌলিক সবগুলো বিষয়ে তৎকালীন ভারতের প্রসিদ্ধ আলিমদের থেকে ইজাযাহ প্রাপ্ত। তাই তাকে যারা চিনতেন তেমন বিরোধীরাও তার আলিম হওয়া নিয়ে কথা বলতো না। তার পরিবারের কাছে তার ইজাযাহগুলো এখনও সংরক্ষিত। মুশকিল হচ্ছে তার জীবনীকাররা তার ইজাযাহগুলো সম্পর্কে যথেষ্ট পরিমাণে লিখেননি। এমনকি জামায়াতে ইসলামী থেকেও তার যে সমস্ত জীবনী বের করা হয়েছে - যেমন আব্বাস আলী খানের লিখা "মাওলানা মওদূদী: একটী জীবন, একটি ইতিহাস" - সেগুলোতেও এগুলোর যথাযথ উল্লেখ নেই। এর কারণ সম্ভবত উস্তাদ মওদূদীর (রহিমাহুল্লাহ) আত্মপ্রচার প্রচারবিমুখতা।

৪.সে যাই হোক! আমি নিজে তার সম্পর্কে পড়তে গিয়ে অল্প কয়েকটা বিষয়ে জানতে পারলাম। আল- আজহার বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক ও বিশিষ্ট ফকীহ এবং আলিম ড. সায়্যিদ আব্দুল হালিম মুহাম্মদ হুসাইন (হাফিজাহুল্লাহ) এর লেখা "নাযারাত ফী ফিকরি আবীল-আলা আল- মওদূদী কিতাবে আল্লামা মওদূদীর শিক্ষাগত যোগ্যতার যে বিবরণ তিনি দিয়েছেন তা থেকে আমি পাঠকদের জন্য উল্লেখ করছি।

(ক) আরবী ভাষা, নাহু, সরফ, আল-মা'ক্বুলাত ওয়াল-বালাগাহ ওয়াল মা'আনী: এগুলোতে তিনি ইজাজাহ লাভ করেছেন দিল্লীর দারুল উলুমে ভারতের প্রখ্যাত আলিম মাওলানা শায়খ আব্দুস-সালাম নিয়াজীর (রহিমাহুল্লাহ) কাছ থেকে।

(খ) হাদীস ও উলুম আল-হাদীস: শায়খ ইশফাক্বুদ্দীন কান্দাহলাবীর (রহিমাহুল্লাহ) কাছ থেকে এ বিষয়ে ইজাযাহ লাভ করেন তিনি।

(গ) ফিক্বহ, তাফসীর বায়দাওয়ী এবং আল- মাতূল ফী 'ইলম আল-মা'আনী ওয়াল- বালাগাহ: এ বিষয়গুলোতে তিনি ইজাযাহ লাভ করেন শায়খ শরীফুল্লাহর (রহিমাহুল্লাহ) কাছ থেকে।

(ঘ) ইংরেজী ভাষা: মৌলভী মুহাম্মদ ফাদিল এর হাতে মাত্র চার মাসে তিনি ইংরেজী ভাষা শিক্ষায় বুৎপত্তি লাভ করেন।

৫. ড. শায়খ আব্দুস-সালাম আযাদী নীচের মন্তব্যে উস্তাদ মওদূদীর শিক্ষাগত যোগ্যতা নিয়ে আরো লিখেছেন: উস্তাদ নাদীমুল্লাহ হাসনাইন ও শায়খ নিয়ায ফাতেহপুরীর কাছ থেকে তিনি প্রাথমিক শিক্ষা লাভ করেন। মুহাম্মাদ ফাদিল এর কাছে শুধু ইংরেজি ভাষা নয়, ইতিহাস, দর্শন, সমাজ বিজ্ঞান ও বিভিন্ন ধর্মের তুলনা মূলক আলোচনা পড়েছেন। তিনি মাওলানা ইশফাকুর রহমান কান্ধেল্ভীর কাছ থেকে হাদীস ফিকহ ও আরবী সাহিত্য পাঠদানের ইজাযাহ নেন ১৯২৭ সালে এবং তিরমিযি ও মুওয়াত্তা ইমাম মালিক শিক্ষা দানের ইজাযাত গ্রহন করেন ১৯২৮ সনে। এই দু বছর তিনি সম্পূর্ণ সময় ব্যয় করেছেন লেখা পড়ার পেছনে।

৬. দেওবন্দে আল্লামা মওদূদী তাদের পত্রিকা আলজামইয়্যাতের সম্পাদক তখনই হতে পেরেছেন যখন সেখানকার আলিমরা তাকে সার্টিফাই করেছেন। কিছু মুর্খ লোক বলে 'তিনি আলিম ছিলেন না'। তারা জানেন না মাওলানার অনেক বই বুঝতে হলে ছোটো-খাটো আলেম হলেও চলবে না।

৭. ইসলামে যখন কাউকে আলিম বলা হয় তখন মাদ্রাসা পাশ কাউকে বুঝায় না। আলিম একটা বিরাট ব্যাপার। সায়্যিদ মওদূদী মূলত আলিম শব্দটার যথার্থ অর্থেই আলিম। 

৮. তার সার্টিফিকেটগুলো পাকিস্তান জামায়াতে ইসলামী একত্রিত করে বই আকারে বের করেছেন।

জীবনকাল:

 জন্মস্থানঃ আওরঙ্গাবাদ (বর্তমানে মহারাষ্ট্রের মধ্যে), হায়দারাবাদ, ভারত,

 ১৯০৩- জন্ম গ্রহণ করেন। জন্মস্থানঃ আওরঙ্গাবাদ (বর্তমানে মহারাষ্ট্রের মধ্যে), হায়দারাবাদ, ভারত।

১৯১৮- সাংবাদিক হিসেবে 'বিজনোর' (Bijnore) পত্রিকায় কাজ শুরু করেন।

১৯২০- জবলপুরে 'তাজ' পত্রিকার এডিটর হিসেবে নিয়োগ লাভ করেন।

১৯২১- দিল্লিতে মাওলানা আব্দুস সালাম নিয়াজির কাছে আরবি শিক্ষা গ্রহণ করেন।

১৯২১- দৈনিক 'মুসলিম' পত্রিকার এডিটর হিসেবে নিয়োগ লাভ করেন।

১৯২৫- নয়া দিল্লির 'আল জামিয়াহ' পত্রিকার এডিটর হিসেবে নিয়োগ লাভ।
 
১৯২৬- দিল্লির 'দারুল উলুম ফতেহপুরি' থেকে 'উলুম-এ-আকালিয়া ওয়া নাকালিয়া' সনদ লাভ করেন।

১৯২৭- 'আল জিহাদ ফিল ইসলাম' নামে জিহাদ বিষয়ক একটি গবেষণাধর্মী গ্রন্থ রচনা শুরু করেন।

১৯২৮- উক্ত প্রতিষ্ঠান (দারুল উলুম ফতেহপুরি) থেকে 'জামে তিরমিযি' এবং 'মুয়াত্তা ইমাম মালিক' সনদ লাভ করেন।

১৯৩০- 'আল জিহাদ ফিল ইসলাম' নামের বিখ্যাত বইটি প্রকাশিত হয়। তখন তার বয়স ২৭ বছর।
 
১৯৩৩- ভারতের হায়দারাবাদ থেকে 'তরজুমানুল কুরআন' নামক পত্রিকা প্রকাশ শুরু করেন।

১৯৩৭- তার ৩৪ বছর বয়সে, লাহোরে, দক্ষিণ এশিয়ার কিংবদন্তিতুল্য মুসলিম কবি ও দার্শনিক আল্লামা মুহাম্মাদ ইকবালের সাথে পরিচয় হয়। পরিচয় করিয়ে দেন চৌধুরী নিয়াজ আলী খান।

১৯৩৮- তার ৩৫ বছর বয়সে, হায়দারাবাদ থেকে পাঠানকোটে গমন করেন। সেখানে তিনি দারুল ইসলাম ট্রাস্ট ইনস্টিটিউটে যোগদান করেন, যেটি ১৯৩৬ সালে আল্লামা ইকবালের পরামর্শে চৌধুরী নিয়াজ আলী খান কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। পাঠানকোটের ৫ কিমি পশ্চিমে, জামালপুরে, চৌধুরী নিয়াজ আলী খানের ১০০০ একর এস্টেট ছিল। চৌধুরী নিয়াজ আলী খান সেখান থেকে ৬৬ একর জমি দান করেন।

১৯৪১- লাহোরে 'জামায়াতে ইসলামী হিন্দ' নামে একটি ইসলামী রাজনৈতিক দল প্রতিষ্ঠা করেন এবং এর আমির হন।

১৯৪২ - জামায়াতে ইসলামীর প্রধান কার্যালয় পাঠানকোটে স্থানান্তর করেন।

১৯৪২ - তাফহীমুল কুরআন নামক তাফসির গ্রন্থ প্রনয়ন শুরু করেন।

১৯৪৭ - জামায়াতে ইসলামীর প্রধান কার্যালয় লাহোরের ইছরায় স্থানান্তর করেন। 

সাইয়েদ আবুল আ'লা মওদুদীর বাড়ির প্রবেশ পথ, ইছরা, লাহোর

১৯৪৮ - 'ইসলামী সংবিধান' ও 'ইসলামী সরকার' প্রতিষ্ঠার জন্য প্রচারণা শুরু করেন।

১৯৪৮ - পাকিস্তান সরকার তাকে কারাগারে বন্দী করে।

১৯৪৯ - পাকিস্তান সরকার জামায়াতের 'ইসলামী সংবিধানের রূপরেখা' গ্রহণ করে।

১৯৫০ - কারাগার থেকে মুক্তি লাভ করেন।

১৯৫৩- 'কাদিয়ানী সমস্যা' নামে একটি বই লিখে কাদিয়ানী বা আহমদিয়া সম্প্রদায়কে অমুসলিম প্রমাণ করেন। ফলে ইতিহাসখ্যাত বড় রকমের কাদিয়ানী বিরোধী হাঙ্গামার সৃষ্টি হয়। এ সময় অনেকগুলো সংগঠন একযোগে কাদিয়ানীদেরকে সরকারিভাবে অমুসলিম ঘোষনার দাবিতে আন্দোলন শুরু করে। তারা সর্বদলীয় কনভেনশনে ২৭ ফেব্রুয়ারি তারিখে 'ডাইরেক্ট একশন কমিটি' গঠন করে। জামায়াত এই কমিটির বিরোধিতা করে অহিংস আন্দোলনের পক্ষে অবস্থান নেয়। কিন্তু তথাপি মার্চ মাসের শুরুতে আন্দোলন চরম আকার ধারণ করে এবং পুলিশের গুলিতে কিছু লোক নিহত হয়।
পরে একটি সামরিক আদালত আবুল আ'লাকে এই গোলযোগের জন্য দোষী সাব্যস্ত করে মৃত্যুদন্ডের আদেশ দেয়, (যদিও কাদিয়ানী সমস্যা নামক বইটি বাজেয়াপ্ত করা হয়নি)। অবশ্য সেই মৃত্যুদন্ডাদেশ কার্যকর করা হয়নি।

১৯৫৩- মুসলিমপ্রধান দেশগুলোর চাপ এবং দেশী বিদেশী মুসলিম নেতৃবৃন্দের অনুরোধে মৃত্যুদন্ডাদেশ পরিবর্তন করে যাবজ্জীবন কারাদন্ড করা হয়, কিন্তু পরে তা-ও প্রত্যাহার করা হয়।

১৯৫৮- সামরিক শাসক ফিল্ড মার্শাল আইয়ুব খান 'জামায়াতে ইসলামী'কে নিষিদ্ধ ঘোষণা করেন।
 
১৯৬৪- আবারো তাকে কারাবন্দী করা হয়।

১৯৬৪- কারাগার থেকে মুক্তি দেয়া হয়।

১৯৭১- পাকিস্তান থেকে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান আলাদা হবে কিনা এ প্রশ্নে সিদ্ধান্ত নেওয়ার অধিকার পূর্ব পাকিস্তান জামায়াতের উপর ন্যাস্ত করেন,

১৯৭২- তাফহীমুল কুরআন নামক তাফসির গ্রন্থটির রচনা সম্পন্ন করেন।
    
১৯৭২- জামায়াতে ইসলামীর আমির পদ থেকে ইস্তফা দেন।

১৯৭৮- তার রচিত শেষ বই 'সিরাতে সারওয়ারে আলম' প্রকাশিত হয়। এটি নবী মুহাম্মাদ-এর জীবনী গ্রন্থ।
    
১৯৭৯- চিকিৎসার জন্য যুক্তরাষ্ট্রে গমন করেন।
    
১৯৭৯- যুক্তরাষ্ট্রে তার মৃত্যু হয়।
    
১৯৭৯- লাহোরের ইছরায় সমাধিস্থ করা হয়।

গ্রন্থাবলী

কুরআনঃ

১. তরজমায়ে কুরআন মজীদ – তরজুমায়ে কুরআন মজীদ।

২. তাফহীমুল কুরআন- তাফহীমুল কুরআন।

৩. তাফহীমুল কুরআন বিষয় নির্দেশিকা – মাওয়ূয়াতে কুরআনী।

৪. কুরআনের মর্মকথা – মুকাদ্দামায়ে তাফহীমুল কুরআন।

৫. কুরআনের চারটি মৌলিক পরিভাষা – কুরআন কী চার বুনয়াদী ইসতেলার্হী।

হাদীস/সুন্নাহঃ

৬. সুন্নাতে রাসূলের আইনগত মর্যাদা – সুন্নাত কী আইনী হাইসিয়ত।

৭. কুরআনের মহত্ব ও মর্যাদা – ফাযায়েলে কুরআন (হাদীস কী রোশনী মেঁ)।

ইসলামী জীবন দর্শনঃ

৮. ইসলাম পরিচিতি –রিসালায়ে দ্বীনীয়াত।

৯. ঈমানের হাকিকত – হাকীকতে ঈমান।

১০.ইসলামের হাকিকত-হাকীকতে ইসলাম।

১১. নামায রোযার হাকিকত – হাকীকতে সাওম আওর সালাত।

১২. জিহাদের হাকিকত – হাকীকতে জিহাদ।

১৩. হজ্জের হাকিকত – হাকীকতে হজ্জ।

১৪. যাকাতের হাকিকত – হাকীকতে যাকাত।

১৫. তাকদীরের হাকিকত – মাসয়ালায়ে জবর ওয়া কদর।

১৬.তাকওয়ার হাকিকত – হাকীকতে তাকওয়া।

১৭. শিরকের হাকিকত – হাকীকতে শিরক;

১৮. তাওহীদের হাকিকত – হাকীকতে তাওহীদ।

১৯. শান্তিপথ – সালামতী কা রাস্তা।

২০. একমাত্র ধর্ম – দ্বীনে হক;

২১. তাওহীদ রিসালাত ও আখিরাত – তাওহীদ রিসালাত আওর যীন্দেগী বা’দ মওতকা আকলী সুবুত।

২২. ইসলামের জীবন পদ্ধতি – ইসলাম কা নেযামে হায়াত।

২৩. ইসলাম ও জাহেলিয়াত – ইসলাম আওর জাহেলিয়াত।

২৪. ইসলামের শক্তির উৎস – ইসলাম কা ছের চশমায়ে কুঅত।

২৫. কুরবানীর তাৎপর্য – ইসবাতে কুরবানী বিআয়াতে কুরআনী।

২৬. ইসলামের নৈতিক দৃষ্টিকোণ – ইসলাম কা আখলাকী নোকতায়ে নযর।

২৭. ইসলামী দাওয়াতের দার্শনিক ভিত্তি – ইসলাম আওর মাগরিবী লা দ্বীনী জমহুরিয়ত।

২৮. ইসলাম ও সামাজিক সুবিচার – ইসলাম আওর আদলে ইজতেমায়ী।

২৯. ইসলামী জীবন ব্যবস্থার মৌলিক রূপরেখা – ইসলামী নেযামে যিন্দেগী আওর উসকে বুনয়াদী তাসবিরাত।

৩০. ইসলাম ও পাশ্চাত্য সভ্যতার দ্বন্দ্ব – তানকীহাত।

৩১. ইসলামী সংস্কৃতির মর্মকথা – ইসলামী তাহযীব আওর উসকে উসুল ওয়া মুবাদী।

৩২. ইসলাম ও জাতীয়তাবাদ – মাসয়ালায়ে কাওমিয়াত।

৩৩. ইসলাম ও সমাজতন্ত্র।

৩৪. শিক্ষা ব্যবস্থা : ইসলামী দৃষ্টিকোণ – তা’লীমাত।

৩৫. আল জিহাদ – আল জিহাদু ফিল ইসলাম।

৩৬. নির্বাচিত রচনাবলী (১-৩ভাগ) – তাফহীমাত (১-৩জিলদ)।

আইন, রাজনীতি ও রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থাঃ

৩৭. ইসলামের রাজনৈতিক মতবাদ -ইসলাম কা নযরিয়ায়ে সিয়াসী।

৩৮. ইসলামী রাষ্ট্র – ইসলামী রিয়াসত।

৩৯. ইসলামী শাসনতন্ত্র প্রণয়ন – ইসলামী দস্তুর কি তাদবীন।

৪০. ইসলামী শাসন্তন্ত্রের মূলনীতি – ইসলামী দস্তুর কি বুনিয়াদী।

৪১. ইসলামী আইন – ইসলামী কানুন।

৪২. ইসলামে মৌলিক মানবাধিকার – ইনসানকে বুনিয়াদী হুকুম।

৪৩. ইসলামী রাষ্ট্রে অমুসলিমদের অধিকার – ইসলামী রিয়াসত মে জিম্মীয়ু কী হুকুক।

৪৪. খেলাফত ও রাজতন্ত্র – খিলাফত ওয়া মুলূকিয়াত।

৪৫. উপমহাদেশের স্বাধীনতা আন্দোলন ও মুসলমান (১-২খন্ড) – তাহরীকে আযাদী হিন্দ আওর মুসলমান (১-২জিলদ)।

৪৬. কুরআনের রাজনৈতিক শিক্ষা – কুরআন কী সিয়াসী তা’লীমাত।

৪৭. মুরতাদের শাস্তি – মুরতাদ কী সাযা।

৪৮. জাতীয় ঐক্য ও গণতন্ত্রের ভিত্তি – কওমী ওয়াহদাত।

৪৯. দাক্ষিণাত্যের রাজনৈতিক ইতিহাস – দাককিন কী সিয়াসী তারীখ।

ইসলামী আন্দোলন ও সংগঠনঃ

৫০. ইসলামী দাওয়াত ও কর্মনীতি – দাওয়াতে ইসলামী আওর উসকা তারীক কার।

৫১. ইসলামী আন্দোলনের নৈতিক ভিত্তি – তাহরীকে ইসলামী কী আখলাকী বুনিয়াদী।

৫২. দায়ী ইলাল্লাহ দাওয়াত ইলাল্লাহ – দায়ী ইলাল্লাহ দাওয়াত ইলাল্লাহ।

৫৩. ভাঙা ও গড়া – বানাও আওর বেগাড়।

৫৪. একটি সত্যনিষ্ঠ দলের প্রয়োজন – এক সালেহ জামায়াত কা জরুরত।

৫৫. সত্যের সাক্ষ্য – শাহাদাতে হাক।

৫৬. জামায়াতে ইসলামীর দাওয়াত – জামায়াতে ইসলামী কা দাওয়াত।

৫৭. জামায়াতে ইসলামীর উদ্দেশ্য,ইতিহাস,কর্মসূচী – জামায়াতে ইসলামী কা মাকসাদে তারীখ আওর লায়েহায়ে আ’মল।

৫৮. ইসলামী বিপ্লবের পথ – ইসলামী হুকুমাত কিসতারাহ কায়েম হূতী হ্যায়।

৫৯. মুসলমানদের অতীত, বর্তমান ও ভবিষ্যতের কর্মসূচী – মুসলমানু কা মাযী হাল মুস্তাকবেল কে লিয়ে লায়েহায়ে আমল।

৬০. ইসলামী আন্দোলন সাফল্যের শর্তাবলী – তাহরীকে ইসলামী কামিয়াবী কা শারায়েত।

৬১. আন্দোলন সংগঠন কর্মী – তাহরীক আওর কারে কুন।

৬২. ইসলামী আন্দোলনের ভবিষ্যৎ কর্মসূচী – তাহরীকে ইসলামী কা আয়েনদাহ লায়েহায়ে আমল।

৬৩. শাহাদাতে হুসাইন রাঃ – শাহাদাতে ইমাম হসাইন রাঃ।

৬৪. আল্লাহর পথে জিহাদ – জিহাদুন ফি সাবীলিল্লাহ।

৬৫. বিশ্ব মুসলিম ঐক্যজোট আন্দোলন – ইত্তেহাদে আলমে ইসলামী।

৬৬. আজকের দুনিয়ায় ইসলাম – ইসলাম আসরে হাযের মে।

৬৭. ইসলামী রেনেসা আন্দোলন – তাজদীদ ওয়া ইহইয়ায়ে দ্বীন।

৬৮. জামায়াতে ইসলামীর ঊনত্রিশ বছর – জামায়াতে ইসলামী কা ঊনত্রিশ সাল।

অর্থনীতি ও ব্যাংক ব্যবস্থাঃ

৬৯. ইসলামী অর্থব্যবস্থার মূলনীতি – ইসলামী মায়া’শিয়াত কে উসুল।

৭০. কুরআনের অর্থনৈতিক নির্দেশিকা – কুরআন কী মায়াশী তা’লীমাত।

৭১. ইসলাম ও আধুনিক অর্থনৈতিক মতবাদ – ইসলাম আওর জাদীদে মায়া’শী নযরিয়াত।

৭২. অর্থনৈতিক সমস্যার ইসলামী সমাধান – ইনসান কা মায়া’শী মাসয়ালা আওর উসকা ইসলামী হল।

৭৩. ভূমির মালিকানা বিধান – মাসয়ালায়ে মিলকিয়তে যমীন।

৭৪. জাতীয় মালিকানা – কওমী মিলকিয়ত।

৭৫. ইসলামী অর্থনীতি – মায়াশিয়াতে ইসলাম।

৭৬. সুদ ও আধুনিক ব্যাংকিং – সুদ।

দাম্পত্য জীবন ও নারীঃ

৭৭. পর্দা ও ইসলাম – পর্দা।

৭৮. মুসলিম নারীর নিকট ইসলামের দাবী – মুসলিম খাওয়াতীন সে ইসলাম কে মুতালিবাত।

৭৯. স্বামী স্ত্রীর অধিকার – হুকুকুয যাওজাইন।

৮০. ইসলামের দৃষ্টিতে জন্ম নিয়ন্ত্রণ – ইসলাম আওর যবতে বেলাদাত।

তাযকিয়ায়ে নফসঃ

৮১. হিদায়াত – হিদায়াত।

৮২. ইসলামী ইবাদতের মর্মকথা – ইসলামী ইবাদত পর তাহকীকী নযর।

৮৩. আত্মশুদ্ধির ইসলামী পদ্ধতি – তাযকিয়ায়ে নফস।

৮৪. ইসলামের বুনিয়াদি শিক্ষা – খুতবাত।

সীরাতঃ

৮৫. আদর্শ মানব – সরওয়ারে আলম কা আসলী কারনামা।

৮৬. খতমে নবুয়্যাত – খতমে নবুওয়াত।

৮৭. সীরাতে সরওয়ারে আলম (১-২খন্ড) – সীরাতে সরওয়ারে আলম (১-২জিলদ)।

৮৮. নবীর কুরআনী পরিচয় – কুরআন আপনে লায়ে ওয়ালে কো কেসরং মেঁ পেশ করতা হায়।

৮৯. সাহাবায়ে কিরামের মর্যাদা – মাকামে সাহাবা।

অন্যান্যঃ

৯০. কাদিয়ানী সমস্যা – কাদিয়ানী মাসয়ালাহ।

৯১. রাসায়েল ও মাসায়েল (১-৫খন্ড) – রাসায়েল ওয়া মাসায়েল (১-৫জিলদ)।

৯২. যুব সমাজের মুখোমুখি মাওলানা মওদূদী – তাসরীহাত।

৯৩. যুব জিজ্ঞাসার জবাব (১-২খন্ড) – ইসতিফসারাত (১-২জিলদ)।

৯৪. বিকালের আসর (১-২খন্ড) – আসরী মাজালিশ (১-২জিলদ)।

৯৫. খুতবাতুল হারাম – খুতবাতুল হারাম।

৯৬. বেতার বক্তৃতা – নশরী তাকরীরী।
 
৯৭. সাইয়েদ আবুল আ’লা মওদূদীর পত্রাবলী (১-২খন্ড) – মাকাতীব মাওলানা মওদূদী (র.) (১-২জিলদ)।

৯৮. পত্রালাপ মাওলানা মওদূদী ও মরিয়ম জমিলা – মাওলানা মওদূদী আওর মরিয়ম জমিলা কে দরমিয়ান খত।
---------------------------------------------------------
স্বরণীয় জানাযা,

বিংশ শতাব্দীর শ্রেষ্ঠ মুজাদ্দিদ, মানবতার মুক্তি আন্দোলন জামায়াতে ইসলামীর প্রতিষ্ঠাতা ও আমীর, বিশ্ববিখ্যাত মদিনা বিশ্ববিদ্যালয়ের রূপকার, সিলেবাস প্রণেতা ও ভাইস চ্যান্সেলর, ওআইসির রূপকার, ইসলামী চিন্তাবিদ ও দার্শনিক আল্লামা সাইয়্যেদ আবুল আলা মওদুদীর জানাযা পাকিস্তানের লাহোর গাদাফী স্টেডিয়ামে। 

জানাযা পড়িয়েছেন তৎকালিন কাতার বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর, বিশ্ববিখ্যাত ইসলামী চিন্তাবিদ ও দার্শনিক প্রফেসর ড. শায়খ ইউসুফ আল কারযাবী। 

জানাযায় পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট জেনারেল জিয়াউল হক সহ বিশ্বের বিখ্যাত ইসলামী চিন্তাবিদ, দার্শনিক, রাজনীতিবিদ, শিক্ষাবিদ, লেখক এবং লক্ষ লক্ষ মানুষ অংশগ্রহন করেন।
------------------------------------------------
লেখকঃ ইসলামি চিন্তাবিদ প্রবন্ধ লেখক ও অনলাইন এক্টিভিস্ট।        

Post a Comment

1 Comments

  1. মহান আল্লাহ যেন প্রিয় শায়েখকে জান্নাতের সু-উচ্চ মকাম দান করেন।-(আমিন)

    ReplyDelete